কর্পোরেট দুনিয়ার বাসিন্দা হিসাবে বিজ্ঞাপন আমাদের অনিবার্য সহচর। কেউ বিজ্ঞাপন এড়িয়ে চলতে চাইলেও সেটা আর সম্ভব নয়। কারণ নানা রূপে বিরাজ করেন বিজ্ঞাপন বাহাদুর। বিজ্ঞাপনের প্রাণভোমরা 'মডেল'গণ আমাদের কালের মহাতারকা। তাঁদের অাবার শ্রেণিভেদ আছে। সবার ওপরে আছেন সুপার মডেলগণ। তাঁরা অনেকের স্বপ্নের রাণী বা রাজা। শয়নে স্বপনে জাগরণে হানা দেন অন্তরে অন্তরে।
বিজ্ঞাপনের প্রধান বাহন টেলিভিশন, রেডিও আর পত্রিকা। এরপরে আছে জাম্বো সাইজের বিলবোর্ড। ফেসবুক টুইটারওয়ালাদের আয়ের উৎস বিজ্ঞাপন। পোস্টার, লিফলেট আর মুঠোফোনের এসএমএস বিজ্ঞাপনের বাহন। মাইকেও চলে বিজ্ঞাপনের সশব্দ প্রচার।
মার্কেটিং জগতে বিজ্ঞাপন হলো বিপণনের হাতিয়ার অার যোগাযোগবিদদের কাছে যোগাযোগ মাধ্যম। আমাদের চারপাশ ঘিরে থাকা বিজ্ঞাপন হলো বাজারের বাহন।
বিজ্ঞাপনের উপকারিতার শেষ নেই। এড ফার্ম, টেলিভিশন, রেডিও, পত্রিকা, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, গুগল, ইয়াহু, মডেল, নির্মাতা প্রমুখ বিজ্ঞাপনের কল্যাণে জীবনধারণ করেন। তারকা, অ-তারকা সাংবাদিক, টকশোজীবীগণ বিজ্ঞাপনের দান। নাগরিক মায়েরা বিজ্ঞাপনের কল্যাণে বাচ্চাদের তিন বেলা খাওয়াতে পারছেন। বিজ্ঞাপন না থাকলে মায়েদের কী দুর্গতি যে হতো, ভাবলেই গা কাঁটা দেয়। টেলিভিশনের একঘেঁয়ে অনুষ্ঠানের মাঝে বিজ্ঞাপন এক পশলা বৃষ্টি আর কোমল বাতাস !
বিজ্ঞাপন দেখেই স্থির হয় এরপর কোন দোকানে কোন জিনিস কেনার জন্য সেজেগুজে বের হবো।
মাইকের বিজ্ঞাপন তো বাইডিফল্ট চিৎকার। রেডিও আর টিভিতে যখন অনুষ্ঠান চলে তখন শব্দ প্রায়ই নিচু হয়ে যায়। ডায়লগ শোনার জন্য রিমোটে চাপ দিতেই হয়।
অথচ বিজ্ঞাপন শুরুর সাথে সাথে নিজ দায়িত্বেই রেডিও,টিভির সাউণ্ড একপলকে সাত আসমান ছাড়িয়ে যায়। দৌড়ে এসে রিমোট চেপে সাউণ্ড কমাতে হয়। নইলে পাশের বাড়ির লোকজন ভাববে, কী ছোট লোকরে বাবা ! এতো জোরে সাউণ্ড দিয়ে কেউ টিভি দেখে !?
এটা হচ্ছে বিজ্ঞাপনের এক ধরণের চিৎকার। আরেকটা চিৎকার আরো ভয়াবহ। এক চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখে আরেক চ্যানেলে পালিয়ে গিয়ে গান বা নাটক দেখবেন ? সেটা হবে না। প্রায় সব চ্যানেলেই দেখবেন একসাথেই বিজ্ঞাপন চলছে। মাঝে মাঝে দেখবেন একসাথে একই বিজ্ঞাপন চলছে কয়েকটি চ্যানেলে।
জয় হচ্ছে বিজ্ঞাপনের। ধন্য আমাদের বিজ্ঞাপন জীবন।