অনিশ্চিত তীর্থযাত্রা-৭ এখানে পড়ুনঃ অনিশ্চিত তীর্থযাত্রা-৭
এবারের একুশে বইমেলা শেষ হবার দুই দিন আগে এক নদী এসেছিলো বইমেলায় বয়ে বয়ে, তার দুকূল সহ। না, এটা কোন প্রকৃত নদী নয়, এটা ছিল মানুষ নদী, এমজিসিসি'র এক্স-ক্যাডেট নদী, আর দুকূল বলতে তার দুই বন্ধু এমসিসি’র এক্স ক্যাডেট বুলবুল আর অপু। আগের দিন ছিলো নদীর জন্মদিন। তাই ওর বন্ধু বুলবুল আমার বই "জীবনের জার্নাল" এর একটা কপি ওকে উপহার দিলো। ভালো লাগলো ওদের উচ্ছ্বলতা দেখে....। বুলবুল আর অপু এটাও জানালো যে ওদের এক কমন ফ্রেন্ড (এফসিসি’র) এই বইটা আমার হাত থেকে নেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলো তাদের কাছে। তারা সেলফোনে ওকে অনেক খোঁজাখুঁজিও করলো, কিন্তু তখন সে ছিল অনেক দূরে কোথাও, তাই এবারে আর ওর সাথে দেখা হলোনা।
স্মৃতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বইমেলার শুরু থেকে ও প্রকাশকের হয়ে বই বিক্রয়-বিতরণের ব্যাবস্থাপনায় সাহায্য করেছে। বেশ কষ্টসাধ্য কাজ, অনেকটা সময়ই দুপায়ের উপড়েই দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। ক্রেতাদের নানা ন্যায্য অন্যায্য প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো মুখে কোন বিরক্তির রেখা না ফুটিয়েই। বেশীরভাগ প্রশ্নই থাকতো নিজের স্টলের কোন বই নিয়ে নয়, “অমুক স্টলটা কোথায়?” বা “অমুক বইটা কোন স্টলে পাওয়া যাবে?” জাতীয়। তবুও ওকে দেখেছি হাসিমুখে সবার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যেতে। আবার বই বিক্রীর হিসেব রাখতে, নিজের স্টলের বইগুলো ক্রেতাদের কাছে প্রমোট করতে। এর ফাঁকে ফাঁকে আবার সে ক্রেতাদের অনুরোধে বই হাতে ধরা হাসিমুখের ছবিও তুলে দিত। স্টলে উপস্থিত লেখকদের সাথে মাঝে মাঝে টুকটাক গল্পেও সে যোগ দিত। স্মৃতিকে সেদিন আমি আমার কবিতার বই "গোধূলীর স্বপ্নছায়া" এর একটি কবিতার বই গিফট করেছিলাম। কর্তব্যপরায়ন স্মৃতি বলেছিলো, দু’দিন পর মেলা শেষ হলে সে আমার বইটা পড়া শুরু করবে।
মেলা শেষের আগের দিন বিশ্বজিত এসেছিলেন ‘বইপত্র প্রকাশন’ এর স্টলে। কিছুক্ষণ "জীবনের জার্নাল" হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করে বইটি কিনে নিলেন এবং আগ্রহ প্রকাশ করলেন আমার সাথে ছবি তোলার জন্যে। আমি সানন্দে রাজী হ’লাম, স্মৃতি ছবি তুলে দিলো। জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন আমার প্রকাশক মাহবুবুর রহমান বাবুর এলাকার (মুন্সীগঞ্জ) লোক, এছাড়া তার আরেক পরিচয় তিনি বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির কর্মী ও সদস্য। তার সাথে সমসাময়িক রাজনীতি নিয়েও টুকটাক আলাপ হলো। প্রকাশকের অনুরোধে তিনিও এক কপি "জীবনের জার্নাল" কিনলেন এবং ছবি তুললেন। তার আগে দেখা হয়েছিলো অমিত কুমার বিশ্বাস এর সাথে ‘জাগৃতি’র স্টলে। তিনি প্রচুর বই কিনেছেন মেলা থেকে, এত বেশী যে বইগুলো তার পক্ষে বহন করাই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছিলো। তার পরেও তিনি আমার "গোধূলীর স্বপ্নছায়া" এর একটা কপি কিনে নিলেন। তার সাথেও ছবি তোলা হলো। ‘নিউ এজ’ পত্রিকার সাংবাদিক/ ব্যাবস্থাপক ও আবৃত্তিকার নাজমুল হাসান মেলা থেকে কবিতার বই কেনেন নিজের আবৃত্তির শখ মেটানোর জন্য। তিনি তাঁর সংগ্রহে আমার "গোধূলীর স্বপ্নছায়া" এর একটা কপিও কিনে রাখলেন অবসর সময়ে আবৃত্তির জন্য। কবি ও কথা সাহিত্যিক নাজনীন তৌহিদ এর "ঠিকানা কোথায়" বইটিও ‘বইপত্র প্রকাশন’ এর স্টলে বিক্রয় হচ্ছিলো। সেই সুবাদে তার সাথে এই স্টলেই পরিচয় এবং আমাদের উভয়ের কবিতার বই এর একটি করে কপির সৌজন্য বিনিময় ঘটে। এছাড়া উভয়ে উভয়ের অপর একটি বই কিনে নেই সৌজন্য সহযোগিতার নিদর্শন হিসেবে। তাঁর স্বামী মেজর তৌহিদুল আকবর (অবঃ) এর সাথে অবশ্য আমি পূর্ব পরিচিত। তিনিও কয়েকদিন মেলার এই স্টলে বসে থেকে স্ত্রীকে উৎসাহ যুগিয়ে গিয়েছিলেন।
খায়রুল আহসান
ঢাকা, ২৫ মার্চ ২০১৬
এমজিসিসি'র নদীর সাথে এমসিসি'র তিন এক্স ক্যাডেট। আমার বই হাতে নদী, আর নদীর দুই তীরে ওর বন্ধু দুই এমসিসি এক্স ক্যাডেট, বামে বুলবুল আর ডানে অপু। আগের দিন ছিলো নদীর জন্মদিন। তাই ওদের একজন নদীকে আমার বইটা উপহার দিলো। ভালো লাগলো ওদের উচ্ছ্বলতা...
"গোধূলীর স্বপ্নছায়া" হাতে স্মৃতি...
বিশ্বজিত এর সাথে...
অমিত কুমার বিশ্বাস এর সাথে...
জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন এর সাথে....
‘নিউ এজ’ পত্রিকার সাংবাদিক/ব্যাবস্থাপক ও আবৃত্তিকার নাজমুল হাসান এর সাথে...
কবি ও কথা সাহিত্যিক নাজনীন তৌহিদ, আমার "গোধূলীর স্বপ্নছায়া" হাতে...