"তাদের সাথে যারা আমাদের ভালোবাসে। তাদের সাথে যাদের আমরা ভালোবাসি"। পার্কে কাঠের সাইনবোর্ডে প্রকৃতির উদ্দেশ্য লেখাটি খুব গভীরভাবে আমার মনকে ছুঁয়ে গেলো।
সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে থাইল্যন্ডেও ঈদ হলো ২৫শে জুন রবিবার যা এখানে সাধারন ছুটির দিন। শুনেই সুকুমার রায়ের “ছুটির হিসাব” ছড়ার কথা মনে পরলো, যেখানে স্কুল পড়ুয়া খোকা পঞ্জিকা দেখছে বছরে কদিন ছুটি থাকবে ! দেখলো “ঈদ পরেছে জষ্ঠি মাসে গ্রীস্মে যখন থাকেই ছুটি, বড়দিন আর দোলতো দেখি রোববারেতেই পড়লো দুটি”। ফলাফল কেঁদে কেটে রাগে দুঃখে পঞ্জিকা ছুড়ে মারা। তবে এখানে এমনটি ঘটেনি এটা নিশ্চিত কারন এদেশে ঈদের ছুটিই নেই।
ফার্ন আর পামের জন্য নির্ধারিত ঘরের অংশ টুকু
যেই কন্ডোতে থাকি সেখানে তিন ম্যানেজারের একজন বাঙ্গালী যুবক, থাই বৌ। আমাদের সাথে লবিতে দেখা হলেই এগিয়ে এসে কথা বলে। দু এক কথার পরেই জানতে চায় আজ কি রাঁধলাম? কি খেলাম? একদিন প্রশ্ন করলো ‘খিচুড়ি রান্না করতে পারেন ম্যাডাম, খিচুড়ি? কি যে মিস করি দেশের সিঙ্গাড়া সমুচা আর খিচুড়ি’। শুনে বলি আচ্ছা একদিন রান্না করলে আপনার দাওয়াত থাকবে। আগ্রহ ভরে জানতে চায় ‘কবে ম্যাডাম, কবে? আমি কলিজা কিনে আনি? খিচুড়ির সাথে কলিজা ভুনা আমি কতদিন খাইনা’। রান্নার সরঞ্জাম নেই, নিজেদের খাবারের ঠিক নেই তাই কোন রকমে তাকে নিরস্ত করি। ঈদের দিন তাকে দাওয়াত দিলাম যদি খিচুড়ি রাধি তো খেতে পারবে।
মটরশুটি দিয়ে রান্না আমার ভুনা খিচুড়ি দেখতে আর খেতে অনেক মজা হয়েছিল । কিন্ত ছবি তুলে না রাখায় নেট থেকে অনেক খুজে এই ছবিটা দিলাম প্রাসংগিক হবে বলে
ছেলেকে ফোনে ঈদের দিন দুপুরে আসতে বললাম সাথে প্রশ্ন করলাম কি খাবে? এক কথায় জানিয়ে দিল ‘বেশি ঝামেলা কৈরোনা শুধু খিচুড়ি আর মুরগী ভুনা করবা, ফোন ধরো আর ওদের দুজনকেও দাওয়াত দাও’। ফোন ধরতেই শুনি মেয়েটির পরিচিত গলা। আগেও একবার এসে থাই ক্লাশমেট ছেলে মেয়েদুটি খিচুড়ি খেয়ে গিয়েছিল আমার বাসায়। দাওয়াত দিয়ে জানতে চাইলাম কি খেতে চাও আমাদের এই প্রধান ধর্মীয় উৎসবে? ওদের আবার আমাদের মত অত পেটে খিদে মুখে লাজ নেই। মেয়েটি হেসে জানালো, ‘থ্যাংকিউ মামা ফল ইনভাইতেশন কা, আই লাইক ইয়োল চিকেন কালি এন্ড খিচুলী কা’!
মাটির মালসায় লাগানো মিনি সাইজের লাল পদ্ম
আমার স্বামী দু একবার মিন মিন করে পোলাও পোলাও করছিল কিন্ত খিচুড়ির ঝরো বাতাসে তার করুন আবেদন একেবারে ছাও ফ্রায়া নদীতে ভেসে গেলো। ঈদের দিন ভোটে জেতা সেই ভুনা খিচুড়ি সাথে মুরগী ভুনা, কলিজা ভুনা আর ডিম ভাজি, সালাদ তাই খেয়েই সবাই মহা খুশী। সেমাই পায়েসের কাজ সারা হলো দোকান থেকে কিনে আনা ডোনাট আর ফল দিয়ে।
বিখ্যাত ডানকিন ডোনাট ম্যানেজার সাহেবের কিনে আনা
কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে তেল মশল্লা, কড়াই খুন্তি, রাইস কুকার কিনে এনে রান্না বাড়া করার কতখানি ঝক্কি ঝামেলা পোহালাম তা আমার ছেলে না বুঝলেও ম্যানেজার ছেলেটা বুঝলো। কারন সে অনেক বছর এখানে স্ট্রাগল করছে,মাঝে মাঝে নিজে রান্না করে খাচ্ছে হাত পুড়িয়ে।
সবুজ শ্যমল সুন্দর প্রকৃতি
পরদিন সকাল সাড়ে নটায় সে আমাদের ঈন্টারকম করে জিজ্ঞেস করলো আমরা কি তার সাথে কাছেই এক সুন্দর জায়গায় বেড়াতে যাবো কিনা? হাসিখুশী যুবকটি ম্যানেজারের দায়িত্ব ছাড়া অবসরে এখানে বিভিন্ন জায়গায় অল্প টাকায় কনডাক্টেড ট্যুর পরিচালনা করে। এছাড়াও এখানকার হাসপাতালে বাংলাদেশী রোগীদের ভর্তির ব্যবস্থা করা ছাড়াও অনেক কিছুই, মোদ্দা কথা জীবিকার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করে থাকে।
পেছনে সবুজ আর সামনে পানি, ওপাশে চারিদিক খোলা কাঠের প্যাভিলিয়ন, আর বিশ্রামের জন্য রয়েছে চারিদিক ঘেরা কাঠের বেঞ্চ
পরদিন তার ঈদের ছুটি ছিল সাথে আমাদের দাওয়াতের একটি রিটার্ন দেয়াই ছিল তার উদ্দেশ্য বুঝতে পারছি। সাথে সাথে রেডি হয়ে নীচে নামতেই প্রশ্ন করলো বাসে চড়তে পারবো কি না? “কেনো পারবো না! আজবতো! আমি কি কোনো নবাব নন্দীনি”! আমার উত্তর।
ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে রাস্তার ওপারে আসতেই উনি বলে উঠলেন ‘এই যে এই বাসটা ওখানেই যাবে,জলদি আসেন স্যার’। আর দশটি বাসের মত লাল রঙের ভেতর বাইর একই রকম দেখতে বাসটিতে ভাড়া নেয়ার জন্য কাউকে দেখলাম না। ম্যানেজারকে প্রশ্ন করলে উনি জানালেন ‘এটা সরকার পরিচালিত ফ্রি বাস।ঐ যে দেখেন সামনের কাঁচের উপর নীল রংগে থাই ভাষায় লেখা ফ্রি বাস’।
ব্যংককের প্রধান রেল স্টেশন হুয়ালামফং যাচ্ছে ফ্রি বাসটি
“ফ্রি বাস কেনো আমার অবাক প্রশ্নের উত্তরে উনি জানালেন, ‘এখানে গরীব মানুষরাও যাতে বিনে ভাড়ায় ভদ্রস্থভাবে আর সবার মতই বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারে তার জন্য এই ব্যবস্থা। পয়সা আলারা সাধারনত এই বাসে চড়ে না। তাই বলে ভাববেন না প্রান্তিক জনগোষ্ঠির পাশে বসতে অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করাই এর কারন! তারা চড়ে না কারন যাদের জন্য এই বাস তারা পাছে জায়গা না পায় এই মহান উদ্দেশ্যে। তবে কেউ চড়লে নামিয়েও দেয়া হয় না,যেমন আমাদেরও কিছু বলেনি’। ম্যানেজারের কথা শুনে শ্রদ্ধায় আমার মাথা নুয়ে আসলো। আর আমাদের দেশের সাধারন মানুষ পয়সা দিয়েও সেবা পায়না।
পার্কের এক কোনায় নীল পদ্ম পুকুরের মাঝে ঐতিহ্যবাহী এক থাই স্থাপত্য
ফ্রি বাসে চড়ে খোলা জানালা দিয়ে বাতাস খেতে খেতে রওনা দিলাম। কয়েকদিন ধরেই আকাশ এই হাসি এই কান্না, অর্থাৎ পাল্লা দিয়ে মেঘ রোদ্দুরের খেলা চলছেই। ১০ মিনিটেই চলে আসলাম আসল গন্তব্যের বাস স্টপেজ সিকন স্কয়ার এ। বাদিকের পথ ধরে এগিয়ে চলেছি দুপাশে সবুজ গাছ পালায় ঘেরা বিশাল এলাকা নিয়ে সুন্দর নকশায় তৈরী দোতলা বাড়ীগুলোর মাঝের পথ ধরে।
কি এক অচেনা বৃক্ষ ও তার বুনো ফল
ঝির ঝির বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে প্রায় এক কিলোমিটার পথ হেটে এসে এক খোলা গেটের কাছে হাজির হোলাম। সামনে থাই রাজা ভুমিবলের প্রমান সাইজের এক ছবি। এটি একটি পার্ক, নাম সুয়ান লুয়াং রামা নাইন পার্ক। ব্যংকক শহরের মাঝেই কিছুটা উত্তর পুর্ব দিকে কয়েকশো একর জায়গা জুড়ে ১৯৮৭ সালে নির্মিত পার্কটি তাদের কিম্বদন্তীতুল্য রাজা ভুমিবলের ৬০ তম জন্মদিনের স্মরনে নিবেদিত। এখানে প্রবেশ ফি ১০ বাথ।
সুয়ান লুয়াং রামা নাইন পার্ক গেট
পার্কের ভেতরে ঢুকতেই ঝির ঝির বৃষ্টি একেবারে বিশাল ফোটায় ঝম ঝম করে পরা শুরু হলো। দৌড়ে গিয়ে এক স্ন্যাকসের দোকানের ছোট চালাটার নীচে মাথা গুজে দাড়ালাম সাথে ভদ্রতার খাতিরে কফি আর চিপস খেলাম। ৫ মিনিট পরেই বৃষ্টি একেবারেই ঝপ করে থেমে গেলো। আমরা চালার নীচ থেকে বেরিয়ে চোখ মেলতেই দেখি কি অসাধারন সেই প্রকৃতি আর কি নির্মল বাতাস। লম্বা করে বুক ভরে শ্বাস নিলাম।
ডান দিকে চোখ মেলতেই দেখি বিশাল এক মাটির পাত্র থেকে জলধারার আদলে বের হয়ে আসছে লাল হলুদ মোরগ ফুলের দল
সামান্য পেছিয়ে আসলাম দেখি সেই একই স্রোত
এবার আরেকটু পেছনে, নাহ শেষ হয়নি ফুলের স্রোতধারা, অবিরল কুলু কুলু ধ্বনি তুলে বেরিয়ে আসছে সেই যাদুকরী মাটির পাত্র থেকে
এবার বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে গেছে ফুল ঠিক যেমন সমান জায়গায় পানি ছড়িয়ে পরে চারিদিকে।
ফুলের আঁচলের শেষ প্রান্তটি,কি অভিনব চিন্তা সেই শিল্পীর দেখে মুগ্ধ হই
মানুষের হাতে মনের মাধুরী মিশিয়ে বিশাল বাগানটি বানানো হলেও তাতে কৃত্রিমতা ছিলনা বললেই চলে। নিরিবিলি নিঃশব্দ সুনসান সেই পার্কে দূরে দূরে আমাদের মতই দু একজন দর্শক ঘুরে বেড়াচ্ছে। খুব ক্লান্ত বোধ করলে কিম্বা শুধুই বসে থাকার জন্য রয়েছে এমনি বিচিত্র কাঠের কেদারা যার দুদিকে পাখির বাসা।
এখানে এই ব্যতিক্রমী কাঠের চেয়ারে বসে খানিক্ষন উপভোগ করুন এই নিঃশব্দ নির্জনতাকে
সেই বিশাল সবুজ চত্বর ঘিরে রয়েছে এক অদ্ভুত নীরবতা যাতে নেই কোন সাড়া শব্দ, চিৎকার চেচামেচি, নেই ঝালমুড়ি আলার কৌটার ঝঞ্ঝনানি, অথবা বাদাম ওয়ালার সুরেলা ডাক।
সবুজ ঘাসের চাদর পেরিয়ে অদুরে মাথা তুলে আছে পাম গাছ ।
চারিদিকে শুধু গাছের পাতায় বাতাসের শর শর শব্দ, বিশাল গাছের সবুজ পাতার ভেতর থেকে ভেসে আসছে পাখীদের কলকাকলি। বিশেষ করে ঘুঘুদের গম্ভীর গলায় ঘু ঘু ডাক সেই গভীর নিস্তব্দতাকে ভেংগে চুড়মাড় করে ফেলছে ক্ষনিকের জন্য।
ধানক্ষেতের মাঝে এক কাকতাড়ুয়া পার্থক্য শুধু পোশাকে
চোখে পরে দু একটা বাদামী রংগের বিশাল লেজওয়ালা দুষ্টু মিষ্টি কাঠবেড়ালী চকিতে রাস্তা পার হয়ে যাচ্ছে। ক্যামেরা তাক করতেই মুহুর্তের মাঝেই ফুরুৎ। একেবারে গাছ বেয়ে উঠে হারিয়ে যাচ্ছে পাতার আড়ালে তখন তাদের দেখা মেলা ভার হয়।
গাছের গুড়ি বেয়ে নেমে আসছে কাঠবেড়ালী পথ পেরুবে বলে, আমাদের চলে যাওয়ার অপেক্ষায়
আমরা তিনজন হেটে চলেছি মাঝে মাঝে দু একটা নীচু স্বরে কথা বলা। ভয় হয় পাছে এই নিস্তব্দতাকে ভেঙ্গে না ফেলি। ঘোর বরিষায় যেন আরো সবুজ সতেজ হয়ে উঠেছে চারিদিক । হাল্কা মিস্টি রোদ আর হাওয়ায় প্রান জুড়িয়ে যাচ্ছে । ডান দিকে চাইতেই দেখি ছোট্ট একটি পুকুর থেকে উঠে এসেছে বেশ বড় সাইজের এক গুই সাপ। বেচারার রোঁদ পোহানো হলো না আমার ছবি তোলার আগ্রহে, নেমে গেল সেই সবুজ শ্যাওলা জমা পানিতে।
ভীত-সন্ত্রস্ত সেই বিশাল গুই সাপটি পানিতে নেমে যাবার আগ মুহুর্তে
বাধানো ইটের পথ ধরে এগিয়ে চলেছি। দূর থেকে এই স্বর্ন চুড়া দেখা যাচ্ছে মেঘলা আকাশের পটভুমিতে। আস্তে আস্তে চোখের সামনে ফুটে উঠলো পরিপুর্ন অবয়ব। নাম তার রাচামংকলা প্যাভিলিয়ন।
পার্কের কেন্দ্রে প্রয়াত রাজা ভুমিবলের ষাটতম জন্মদিনের উদ্দেশ্যে মহাকাশ-যানের আদলে নির্মিত রাচামংকলা প্যভিলিয়ান
থাই ভাষার রাচা বাংলায় রাজা , আর রাচাতমংকলা অর্থ রাজার মঙ্গলে জন্য নির্মিত এই প্যাভিলিয়ান। পার্কের ঠিক বুকের মাঝেই সোনালী কারুকার্য্যময় এক প্যাভিলিয়ন মুলত একটি গ্যালারি। এখানে রয়েছে নয়টি আয়না বসানো রুম যেখানে প্রয়াত রাজা ভুমিবল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেশ ও জনগলের মঙ্গল এবং উন্নতির জন্য বিভিন্ন সফল কার্যক্রমের ছবি।
ধাতব ঝুড়ি ভরা পাতার উপরে এক ধাতব পাতে লেখা । ভাষা না জানায় পড়তে পারি নি
এর সামনেই রয়েছে টলটলে পানির বিশাল এক জলাধার যেখানে মাঝে মাঝেই ঘাই দিয়ে যাচ্ছে মাছের দল। রোদ পড়ে তাদের রুপোলী পিঠ ঝলক দিয়ে উঠছে, তাতে বোঝা যায় এই লেকে আছে প্রচুর মাছ। এ ছাড়াও আছে কচ্ছপ কাকড়াসহ বিভিন্ন জলজ প্রানী, শুনলাম টিকিট কেটে মাছ ধরা নয় এ সব প্রানী গবেষনার কাজে ব্যবহারের জন্য রয়েছে রাজার নির্দেশ।
কড়ই গাছ থেকে নেমে আসা কবুতরের ঝাক আমার দেয়া খাবার খাচ্ছে ।
১৫ বাথে এক প্যাকেট খাবার কিনে খাওয়াতে পারেন জলাশয়ের মাছ কিম্বা পাশের বিশাল কড়ই গাছে বসে থাকা কবুতরের ঝাককে। যারা আপনাকে খাবার হাতে দেখলেই পাক খেয়ে খেয়ে নেমে আসবে সবুজ চত্বরে।
সেই বিশাল জলাশয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য শ্বেত শুভ্র হাসের নকশাঁর প্যাডেল বোট আছে। এক ঘন্টা চল্লিশ বাথ, তবে আমরা চড়িনি ।
হংস বলাকার পাখায় চেপে ভেসে বেড়ানো হয়নি ।
মাছ আর পাখিদের মাঝে খাবার ভাগ করে দিয়ে শুরু হলো বাধানো পথ ধরে আমাদের চলা
ব্যংককের সবচেয়ে বিশাল এই পার্কটির বিভিন্ন জলাশয়ে কত জাতের যে শাপলা আর পদ্ম রয়েছে তা গুনে শেষ করতে পারি নি । থাইল্যান্ডের ৭৭ টি প্রদেশ থেকে আনা বিভিন্ন রকম ফুল, ফল, ফার্ন, ঔষধি, ফনীমনষা লতা পাতা সহ বিভিন্ন গাছ গাছালীর এক বিশাল সংগ্রহ রয়েছে এই সবুজ বনানীতে। তবে ঘোর বরষায় যাবার জন্য ফুলের সমাহার আমাদের নজরে কমই পরেছে । শীতে আরেকবার যাবো ভাবছি শুধু ফুল দেখার জন্য ।
রাজকন্যা শ্রীনির্ধন মহাচাক্রীকে উৎসর্গ করা ঔষধি গাছের বাগা্নের মানচিত্র ।
এখানে রয়েছে নানা রকম ঔষধি গাছের সমাহার
এর মাঝে রয়েছে আমাদের চিরচেনা তুলসী
বৈচিত্রময় এই পার্কের ভেতরে চাইনীজ, ফরাসী, আমেরিকান,ইতালীয়ান নকঁশার বাগান রয়েছে। সেসব দেশের ঐতিহ্যবাহী নকাশায় তৈরী স্থাপনাগুলো তেমনি মন কাড়া আর প্রকৃতির সাথে যেন মিশে আছে। কোনটাকেই মনে হয়নি এখানে বেমানান।
এটা চৈনিক বাগান এর আংগিনায় ফুটে আছে শ্বেত পদ্মের দল
ফরাসী নকশায় তৈরী বাগানের সামনের কিছুটা অংশ
রানী সিরিকিতের জন্য নির্ধারিত এলাকায় রয়েছে ঝরনা, অর্কিড আর বাহারী গাছের ঝাক
রানীর বাগান
রানী সিরিকিতের উদ্দেশ্যে নিবেদিত বাগান
এছাড়াও আলাদা আলাদা প্যাভিলিয়ানে রয়েছে কত ডিজাইনের অর্কিড, কত বৈচিত্রময় ফার্ন , কত ক্যাকটাস।
আমেরিকান মরুভুমির আদলে তৈরী গ্রীন হাউসের ভেতর রয়েছে অগনিত ক্যাকটাস
লতানো গাছের প্যভিলিয়নে ঢোকার সবুজ পথ
এখানে বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য রয়েছে ছোট একটি শিশু পার্ক এছাড়াও সবার জন্য আছে শরীর চর্চা, খেলাধুলা ও সাইক্লিং এর ব্যবস্থা।ব্যংককের হৈ চৈ থেকে মুক্তি পেতে ছুটির দিনগুলোতে স্বাস্থ্য সচেতন জাতি হিসেবে পরিচিত থাইরা সপরিবারে এখানে কিছুক্ষনের জন্য হারিয়ে যেতে আসে।
সাজানো বাগানের এক টুকরো
সেই সবুজের মাঝে আমরাও হারিয়ে যেতে যেতে কখন তিনটা বেজেছে খেয়াল নেই, খেয়াল হলো যখন পেটের খিদে জানান দিল।
খানিক পর পর এমনি প্রাচীন নকশায় তৈরী লোহা আর কাঠের তৈরী বেঞ্চ
সামান্য ক্ষনের জন্য বিশ্রাম নিয়ে ধীরে ধীরে ফিরে আসি গেটের দিকে। ফিরতে থাকি আবারো সেই গন অরন্যে । আন্তরিক ধন্যবাদ জানালাম সেই প্রানবন্ত ম্যনেজারকে যে কিনা সামান্য খিচুড়ির কৃতজ্ঞতা প্রকাশে এত সুন্দর একটি জায়গায় ঘুরিয়ে আনলো আমাদের দুজনকে।
খিচুড়ী, আর ফ্রি বাস নেট থেকে বাকি ছবি আমার ক্যামেরা আর মোবাইলে তোলা ।
কেউ যদি যেতে চান সেই নিস্বর্গে তবে ঠিকানা রইলো :-
Suan Luang Rama 9, Sukumvit 103 Road Tel: +66 (0)2 32813856 - Entrance 10 Baht
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৮:২৩