লান্না ফোকলাইফ মিউজিয়াম
উত্তর থাইল্যান্ডের বিখ্যাত শহর চিয়াং মাই, চিয়াং রাই এর পথে চলতে ফিরতেই চোখে পড়তো প্রাচীন এবং ব্যতিক্রমী ডিজাইনের অলংকারে সাজানো দোকান নাম ‘লান্না জুয়েলার্স’ কিম্বা আলো ঝলমলে বাগান ঘেরা ‘ডি লান্না হোটেল’। আবার দুদিন পরেই দেখি সাদা রঙের ইউরোপীয় ডিজাইনে তৈরী দোতলা এক ভবন যার সামনে কাঠের সাইনবোর্ডে লেখা লান্না ফোক লাইফ মিউজিয়াম এমন অনেক কিছুই।
ইউরোপীয় ডিজাইনে তৈরী লান্না ফোকলাইফ মিউজিয়াম
লান্না অর্থটি কি এই নিয়ে মন আমার প্রচন্ড কৌতুহলী হয়ে উঠলো। শুরু করি বিভিন্ন তথ্যসুত্র থেকে খোজ খবর নেয়া, বিশেষ করে লান্না ফোক লাইফ মিউজিয়ামের অবদান এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ করতেই হয়। চিয়াং মাই না গেলে আমারও হয়তো অজানাই থেকে যেতো প্রাচীন এক গৌরবময় ইতিহাস। আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার উদ্দেশ্যেই আমার এই লেখা।
মিউজিয়ামের ভেতরে লান্নার ঐতিহ্যবাহী কাঠের কারুকাজে করিডোর
উত্তরে লাওস আর মায়ানমারের সীমান্তের কোলে মাথা রেখে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে দক্ষিনে মালয়েশিয়ার সীমান্তে এসে মিশে যাওয়া অখন্ড একটি দেশ থাইল্যান্ড এর মানচিত্রই আমরা সাধারনত দেখে থাকি। প্রাচীন যুগের শিকারীদের স্বর্গরাজ্য থেকে পরবর্তী যুগের কৃষিকাজে ব্যাপৃত বহু জাতি গোষ্ঠির এই দেশটি কিন্ত এক সময় কিছু ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত ছিল।
ঐ অঞ্চলের প্রাচীন মানচিত্র যাতে দেখা যাচ্ছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত থাইল্যান্ড
বর্তমান থাই জনগোষ্ঠি আদতে যার উচ্চারন তাই তাদের আদিবাস ছিল বর্তমান চীনের ইউনান প্রদেশ এবং দক্ষিন ভিয়েতনামে। প্রচলিত তথ্য অনুযায়ী খৃষ্টপুর্ব ছয় শতাব্দীতে ইউনান থেকে সর্বপ্রথম সিংহানুয়াত (Singhanuwat ) নামে এক তাই যুবরাজ তার সৈন্যদল নিয়ে দেশ ছেড়ে বেড়িয়ে পড়লেন দক্ষিনের পথে।
ঐতিহ্যবাহী পোশাকে প্রাচীন এক শিকারীর প্রতিকৃতি
চলার পথে ছোট ছোট রাজ্যগুলোকে পদানত করে সিংহানুয়াত একদিন এসে হাজির হলেন সেখানে যেখানে থাইল্যান্ড, লাওস আর মায়ানমারের সীমান্ত মিলেমিশে গেছে। যা সাধারনের কাছে গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল নামে সুপরিচিত। অবশেষে যুবরাজ তার দলবল নিয়ে মেকং নদী পেরিয়ে পশ্চিম তীরে এসে ঘাঁটি গাড়লে অবসান হলো এক দীর্ঘ পথ চলা।
বিস্তীর্ন মেকং এর উপর পর্যটকদের সাথে
পরবর্তীতে সিংহানুয়াত সেখানেই তার রাজ্যের রাজধানী গড়ে তোলেন যার নাম ছিল তারই নামানুসারে সিংহানুয়াত নাকর্ন, যার বর্তমান নাম চিয়াং সেন। এই চিয়াং সেন শহরটিই পরবর্তীকালে যে সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল তার নাম লান্না সাম্রাজ্য। এখন দেখা যাক লান্না শব্দটি কোথা থেকে আসলো ?
লান্না পুরুষদের উত্তরীয় হিসেবে ব্যাবহৃত অপরুপ নকঁশার তাঁতে বোনা স্কার্ফ
সেসময় উত্তর থাইল্যান্ড আর সে সংলগ্ন দেশ লাওসের আদিবাসীদের একটি নিজস্ব ভাষা ছিল। তাদের ভাষায় লান্না শব্দের অর্থ হলো লাখো ধানী জমির মালিক অর্থাৎ “ল্যান্ড অফ মিলিওন রাইস ফিল্ড”। সেই মেকং এর পলি বিধৌত অববাহিকার উর্বর জমিতে মাইলের পর মাইল জুড়ে ধান চাষ হতো। অর্থাৎ সেখানকার যে অধিপতি সে ছিল লাখো ধান ক্ষেতের মালিক।
মিউজিয়ামে সংরক্ষিত একটি প্রাচীন নিদর্শন
ছয় থেকে তেরো শতাব্দী পর্যন্ত ঐ এলাকার ছোট ছোট রাজ্যের রাজারা একে অপরের উপর ক্ষমতা ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছিল যার অবসান ঘটলো লান্না সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সিংহানুয়াতের বংশধর বিখ্যাত রাজা মেংগ্রাই এর হাতে। তেরো শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত তাঁর রাজত্বকালকে লান্নার ইতিহাসে স্বর্নযুগ বলে অভিহিত করা হয়েছে। বার্মা থেকে শুরু করে ঐ অঞ্চলের ছোট রাজ্যগুলো বিশেষ করে লাম্ফুং এবং লাম্ফন কে শুধু যুদ্ধের মাধ্যমেই নয় কুটনীতির মাধ্যমেও অধীনস্থ করে নেয় দুরদর্শী রাজা মেংগ্রাই। প্রতিষ্ঠা করেন বিশাল এক শক্তিশালী সুসংহত সাম্রাজ্য যার নাম দিয়েছিলেন কিংডম অফ লান্না ।
রাজা মেংগ্রাই
সে সময় উত্তর দিক থেকে মোঙ্গলদের ক্রমাগত ধেয়ে আসা আক্রমনে লান্নার প্রতিবেশী দেশ বার্মার বিখ্যাত বাগান শহরটি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে ১২৬২ খৃষ্টাব্দে রাজা মেংগ্রাই তাঁর রাজধানী নাজুক চিয়াং সেন থেকে সরিয়ে নিয়ে আসলেন চিয়াং রাইতে।
তেরো শতাব্দীর শেষ ভাগে রাজা মেংগ্রাই লান্না সাম্রাজ্যের উত্তর থেকে দৃষ্টি ফেরালেন দক্ষিনে। সাম্রাজ্যের দক্ষিন অংশের সীমান্ত বাড়িয়ে তোলার সাথে সাথে প্রভাব বিস্তারেও মনযোগী হলেন।
লান্না নকশায় তৈরী স্বর্নালী নাগ
সে সময় লান্না সাম্রাজ্যের দক্ষিনে সুকোথাই ও পায়োর নামে দুটি শক্তিশালী রাজ্য ছিল। বানিজ্য নগরী লাভো বা লপবুড়িকে কেন্দ্র করে খেমার থেকে মুক্ত হওয়া সুকোথাই রাজ্যে্র রাজা ছিলেন থাইল্যান্ডের ইতিহাসে গ্রেট কিং নামে খ্যাত রাজা রামখামহ্যাং। আধুনিক থাই বর্নমালা আবিস্কারের জন্য যিনি থাই ইতিহাসে স্মরনীয় হয়ে আছেন। তার নামে রাজধানী ব্যাংককের বিশাল জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত রামখামহ্যাং বিশ্ববিদ্যালয় বেশ প্রসিদ্ধ। উল্লেখ্য যে রামখামহ্যাংয়ের মৃত্যুর পর সুকোথাই আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে একসময় থাইল্যান্ডের বিখ্যাত শ্যাম রাজ্যের অধীনস্থ হয়।
তিন মহান রাজা মেংগ্রাই, রামখামহ্যাং এবং গাম মুয়াং
সুকোথাই এর বিখ্যাত রাজা রামখামহ্যাং এবং পায়োর রাজা গাম মুয়াং এর সাথে রাজা মেংগ্রাই সু-সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তা এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিল যে রাজা মেংগ্রাই তাদের দুজনকে নিয়ে তিনি ১৮৩৯ সালে চিয়াং মাইতে প্রতিষ্ঠা করেন পবিত্রতম বৌদ্ধ মন্দির ওয়াট চিয়াং মান। এখানে রাজকীয় প্রাসাদ ছাড়াও রয়েছে একটি দৃষ্টি নন্দন স্তুপা যার ভেতরে গৌতম বুদ্ধের এক গুচ্ছ মাথার চুল রয়েছে বলে বলা হয়ে থাকে।
পবিত্র মঠ ওয়াট ছেদি মান, চিয়াং মাই
১২৯৬ সালে সম্রাট মেংগ্রাই রাজধানীকে আরো সুরক্ষিত করার জন্য দই(পাহাড়) সুথেপের পাদদেশ আর পিং নদীর মাঝখানের বিস্তীর্ন অববাহিকায় নতুন রাজধানী প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। যার নাম দিয়েছিলেন তিনি নপবুড়ি শ্রী নাকর্ন পিং চিয়াং মাই। থাই ভাষায় বুরি শব্দের অর্থ প্রদেশ।সংক্ষিপ্ত হয়ে এখন এই শহরের নাম শুধুই চিয়াং মাই। তবে রাজা মেংগ্রাই আজীবন তাঁর পাহাড় ঘেরা প্রিয় শহর চিয়াং রাই থেকেই লান্না সাম্রাজ্য পরিচালনা করে গেছেন।
এক সময়ের সুরক্ষিত রাজধানী চিয়াং মাই এর ভেঙ্গে পড়া দেয়ালের কিছু অংশ
রাজা মেংগ্রাই এর মৃত্যুর পর পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে তাঁর বংশধররা শক্ত হাতেই লান্না সাম্রাজ্যের হাল ধরে রেখেছিল। একে একে ১৪ জন রাজা ও একজন রানীর হাত ধরে শক্তিশালী লান্না সাম্রাজ্য চারিদিকে বিস্তার লাভ করে। এসময়ে লান্না সাম্রাজ্যের রাজধানী চিয়াং মাই, চিয়াং রাই আর চিয়াং সেন শহরে একাধিকবার পরিবর্তিত হয়ে শেষ পর্যন্ত চিয়াং মাইতেই স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হলো।
রাজা তিলকারতের প্রতিকৃতি
রাজা মেংগ্রাই এর পর নবম রাজা তিলোকারাতের (১৪৪১-১৪৮৫)নাম লান্না সাম্রাজ্যের ইতিহাসে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ব্যাবসা-বানিজ্য, ধন-সম্পদে পরিপুর্ন তাঁর শাসনামল তৎকালীন ইতিহাসের আরেকটি স্বর্নযুগ। তাঁর সময় সমগ্র দেশ জুড়ে বৌদ্ধ ধর্ম এবং সংস্কৃতি শুধু প্রসারই নয়, এক মহান উচ্চতাও লাভ করে।
শ্বেত পাথরে নির্মিত বুদ্ধ মিউজিয়াম এ
রাজা তিলোকারত ও তার পুর্বসুরীরা বিভিন্ন প্রথা এবং সংস্কারের মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধের বানীকে রাজ্যের শাসন ব্যাবস্থা ও জীবন প্রনালীতে ধারন করে নিয়েছিল। রাজধানী চিয়াং মাই সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে রাজা তিলোক নির্মান করেছিলেন একাধিক দৃষ্টিনন্দন বৌদ্ধ বিহার ও মঠ। প্রকৃতি ও সময়ের করাল গ্রাসে পরিত্যাক্ত সেই মঠের কিছু কিছু দেখতে এখনো অনেক পর্যটক ভীড় করে থাকে।
মিউজিয়ামের ভেতরে বুদ্ধের প্রতিকৃতি
বর্তমান থাই রাজ প্রাসাদের প্রধান রাজকীয় মন্দির ওয়াট ফ্রা খিউতে পবিত্রতম বলে গন্য এমারেল্ড বুদ্ধ মুর্তিটি রাজা তিলোকারাতের শাসনামলেই শ্রীলংকা থেকে আনা হয়েছিল। এমারেল্ড বলা হলেও মুর্তিটি একটি আস্ত জেড পাথর খোদাই করে তৈরী করা হয়েছে।
ষোড়শ শতাব্দীতে আভ্যন্তরীন এবং আঞ্চলিক বিবাদের ফলে এক সময়ের প্রভাবশালী লান্না সাম্রাজ্য ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। অবশেষে ১৫৬০ খৃষ্টাব্দে বার্মার হাতে চিয়াং রাই অর্থাৎ লান্না সাম্রাজ্যের পতন হয়।
লান্নাদের নিজস্ব রান্নার স্টাইল যা চিয়াং রাই এর পর্যটনের একটি আইটেনারির অন্তর্ভুক্ত। লান্না মিউজিয়াম
পরবর্তী কয়েক শতাব্দী জুড়ে বার্মার রাজারাই লান্না শাসন করতো। সেখানকার অধিবাসীরা কয়েকবার বিদ্রোহ করতে চেষ্টা করলে বর্মী রাজারা তাদের কঠোর হাতে দমন করে। বার্মিজরা একাধিকবার দক্ষিন থাইল্যান্ডের সাম্রাজ্য শ্যাম যার জৌলুসপুর্ন রাজধানী ছিল আয়ুথিয়া যা একসময় আন্তর্জাতিক ব্যাবসাকেন্দ্র হিসেবে বিখ্যাত ছিল তাতে এমন নারকীয় ধ্বংস যজ্ঞ চালিয়ে ছিল যার ক্ষত শুধু বিভিন্ন রাজকীয় এবং ধর্মীয় স্থাপনাতেই শুধু নয়, থাই বাসীদের মনেও এখনো রয়ে গেছে।
মিউজিয়ামের ভেতরে ঐতিহ্যবাহী দেয়াল চিত্র।
১৭৭০ সালে একজন সাধারন শ্যামবাসী যিনি মহান রাজা তাকসিন নামে থাই ইতিহাসে সুপরিচিত, তিনি প্রথম বিভক্ত শ্যামবাসীকে একত্রিত করে থাইল্যান্ড থেকে বার্মিজদের সাময়িকভাবে বিতাড়িত করতে সক্ষম হন।
১৭৭৫ খৃষ্টাব্দে রাজা তাকসিন অসুস্থ হয়ে পড়লে তার সৈন্যরা লাম্ফং এর যুবরাজ Kawilla কে সমর্থন করে তার অধীনে জড়ো হয়। অবশেষে লাম্ফং এর যুবরাজই বার্মিজদের হাত থেকে লান্না সাম্রাজ্যকে চিরদিনের জন্য মুক্ত করে লান্না-থাই নামে নতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে তার সিঙ্গহাসনে অধিষ্ঠিত হন।
অতিপ্রাকৃত জিনিসে প্রবলভাবে বিশ্বাসী লান্নাদের যাদু করার বিভিন্ন সামগ্রী, লান্না মিউজিয়াম
এরপর একে একে আরো নয়জন রাজা লান্না-থাই সাম্রাজ্যের শাসক ছিলেন যারা বর্তমান থাইল্যান্ডের সিংহাসনে আসীন বিখ্যাত চক্রী রাজবংশের সাথে ঘনিষ্ঠ।
এই সময় বার্মিজরা নিজেদের আভ্যন্তরীন কোন্দল এবং বৃটিশদের সাথে যুদ্ধে ব্যাস্ত থাকার ফাকে লান্না জনগন ধীরে ধীরে শায়ামিজ আচার আচরন এমনকি ভাষার সাথেও মিলে মিশে যায়।
মিউজিয়ামে সংরক্ষিত মুর্তি
অতঃপর ১৮৯২ সালে লান্না-থাই আনুষ্ঠানিক ভাবে সে সময় থাইল্যান্ডের অন্যতম শক্তিশালী সাম্রাজ্য শ্যায়ামের সাথে একীভুত হয়ে পরে। ১৯৩৯ সালে শেষ লান্না রাজা নভরাতের মৃত্যুর আর কোন লান্না-থাই রাজার নাম ঘোষিত হয়নি।
থাই রাজত্বের অধীনে থাকায় লান্না সাম্রাজ্যের বর্তমানে আলাদা কোন অস্তিত্ব নেই ।একদা মাথা উচু করে থাকা বিখ্যাত শহর চিয়াং সেন , চিয়াং রাই , চিয়াং মাই , লাম্ফং এর মত শহরগুলো এখন থাইল্যান্ডের আর দশটা শহরের মতই কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে।
কাঁচের উপর নকশা তৈরীতে দক্ষ ছিল লান্নাবাসীরা । তারই উদাহরন চীনা রাশির বারোটি প্রানীর একটি । লান্না মিউজিয়াম
রুপোর তৈরী প্রাচীন নকশার গলার মালা
লান্নাদের নিজস্ব সংস্কৃতি
প্রধান ভাষা ও সংস্কৃতির সাথে একীভুত হলেও লান্নাবাসী্রা থাইল্যান্ডের অন্যান্য প্রদেশ থেকে একেবারেই আলাদা। নিজস্ব শিল্প-সংস্কৃতি, নৃত্য-গীত, নম্র মার্জিত আচার -ব্যবহার ছাড়াও বয়ন শিল্প, কাঠ খোদাই, রুপা, ব্রোঞ্জ ও বিভিন্ন ধাতুর তৈরী কারুশিল্প থেকে শুরু করে নিজস্ব ঘরানার রান্না-বান্না এ সব কিছু মিলিয়ে এই একুশ শতকেও লান্নাবাসীরা তাদের প্রাচীন সেই গৌরবময় ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে সমুন্নত রেখেছে। যার প্রতিফলন দেখেছি উত্তর থাইল্যান্ডের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ।
প্রাচীন লান্নার ইতিহাস আর শিল্প ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আমার পরিপুর্ন ধারনা লাভের সৌভাগ্য হয়েছে চিয়াং মাই এর দেয়াল ঘেরা ওল্ড সিটির মাঝে প্রতিষ্ঠিত লান্না ফোকলাইফ মিউজিয়ামে যা আগেই উল্লেখ করেছি। তবে প্রধান যাদুঘরটি সংস্কারের জন্য বন্ধ থাকায় আরো কিছু দেখা বাকি রয়ে গেল ।
চরকায় সুতো কাটা এক লান্না নারীর রেপ্লিকা। লান্না ফোকলাইফ মিউজিয়াম
প্রাচীন লান্না নারীদের পোশাকের উপরের অংশ বা ব্লাউজ। লান্না মিউজিয়াম
পোশাকের নীচের অংশ বা স্কার্ট
লান্না নারীদের পোশাক । মিউজিয়াম
ক্যামেরা নিয়ে ঢোকার পার্মিশন থাকায় মন ভরে ছবি তোলার সুযোগ পেয়েছিলাম ।
দু তিনটি ছাড়া সব ছবি আমাদের ক্যামেরা আর মোবাইলে তোলা ।
.
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:৩৫