somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফকিরের অবিশ্বাস্য ক্যাড়ামতি!!

২৩ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের অন্যসব ফকিরবাবাদের মত মোহনবাবাও অল্প কয়েকদিনেই ক্ষ্যাত হয়ে গেল ।দিনদিন তার কাছে রোগীর পরিমাণ বাড়তেই ছিল-যেন দশদিক থেকে সব রোগীরা এসেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে অবস্থা!!

এই যুগেও মানুষগুলা কিভাবে এই ফকির-ফকরামি বিশ্বাস করে বুঝতে পারি না ।আমি একা নই ,আমার মহল্লার প্রায় সবগুলা চ্যাংড়া পুলাপানই এই না-বুঝের কাতারে ।।চোখের সামনে দিয়ে কাছে-দূরের-ঘড়ের-বাহিরের সব মানুষ ভিড় জমাচ্ছে এই "মোহনবাবা" নামে উদিত ফকিরের(কবিরাজও বটে!) কাছে ।কিন্তু আমরা ক্রিকেট-ফুটবল-গুটি-লাঠি খেলে দিক-বিদিক জয় করতে পারলেও মোহনবাবার ভন্ডামি বন্ধ করতে পারছি না ।ব্যাপারটা খুবই সিরিয়াস ,এর চেয়ে বেশি মারাত্মক হয়ে দাড়ানোর হুমকি সামনে উপস্থিত ।

কি করে ওর ভন্ডামি বন্ধ করা যায় ভাবছিলাম বহুদিন ।শুধু ভাবছিলাম না -দুবার এক্সপেরিমেন্টও করেছিলাম ।কিন্তু উনার কাছে যার যেই রোগ নিয়েই যাই কীভাবে যেন নিরাময় হয়ে যায় ।টীমের অনেকেতো ভন্ডের উপ্রে বিশ্বাসও এনে ফেলছে ।

দূর বরিশাল থেকে এক হার্টের রোগী এসেছিল উনার কাছে ।দেশের সব নামীদামী ডাক্তারদের কাছথেকে মৃত্যুপরোয়ানা নিয়ে এসেছিল ।এমবিবিএস-বিসিএস-হ্যান-ত্যান ডিগ্রী সব ফেল মারলো মোহনফকিরবাবার কাছে এসে !!দুইতিনটা ঝারফুক আর পানি পরা খেয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছেন তিনি ।ঘটনাটা আমাদের এলাকায়তো বটেই চারদিকে সারা ফেলে দিয়েছে ।রোগীর সংখ্যার প্রবৃদ্ধি তাই উল্লেখযোগ্য হারেরই বাড়তেছিল ।

এদিকে সেই রোগীব্যক্তি নিজ খরচে মোহনবাবার খানকায় একটা বিলাসবহুল ঘড়বানিয়ে দিয়েছে ।তখন তার(রোগী) সাথে তার ব্যক্তিগত লাইফ নিয়ে আমি অনেক কথাও বলেছি ।ব্যাপারটায় আমিও রোমাঞ্চিত হয়েছিলাম ।কিন্তু কোথায় যেন গলদ ছিল ।ফকিরের ভন্ডামিটা বুঝতে পারছিলাম না । এবার একটা মাস্টার প্লান ঠিক করলান ।

আমার একটা "মেমরি-কার্ড" নষ্ট হয়ে গিয়েছিল ।রিকভারিও আনা যাচ্ছিল না ।প্লানটা আমাদের চ্যাংড়া টিমকে শেয়ার করলাম ।তারপর সবাই মিলে গেলাম ফকির বাড়ি ফকিরবাবার দরবারে ।রোগী "মেমরি-কার্ড" !! ফকিরের কাছে রোগ মোটামুটি বর্ণনা শেষ ।বাকিটা উনিই বুঝে নিবেন ।।আমরা যে একটা গোলযোগ করতে চাচ্ছি উনি খুব ভাল করেই টের পেয়েছিলেন ।কিছুটা উদ্বিগ্ন ভাব চেহারায়ও ছিল ।কিন্তু বরাবরের মতই ভাবগম্ভীর ।।আমাদের যুক্তি ছিল- "যিনি মানুষের হার্ট ঠিক করতে পারেন ,তিনি সামন্য একটা মেমরী ঠিক করতে পারবে না- এটা হয় নাকি!!"। কিন্তু আমরা ঠিকই জানতাম- গ্রামের মূর্খ ভন্ডফইকরামি কইরা মনুষ্য রোগ ভাল করতে পারলেও ,,আইসিটিতে একেবারেই অঞ্জ ইনি মেমরী রিকভারী আনতে কোনভাবেই পারবে না ।

উত্‍সুক চ্যাংড়া টিম ফকিরের ক্যাড়ামতি অথবা প্রতিক্রিয়া দেখার অপেক্ষায় ।ফকির ভাবলেষহীন ।পরিশেষে বলল- "কালকে আসো ।মেমরীটা থাক্ আমার কাছে ।" আমিও না করলাম না ।যেহেতু জানতাম-এই মহল্লায় যদি কারো পক্ষে এটা ডিফেজ করা সম্ভব হয় সেটা আমি ।আর সেই যখন ফেল মারছি- তখন ,মেমরী কি জিনিস ,এতে কীভাবে কি থাকে এব্যাপারে বিন্দুমাত্র ঞ্জানও যার নাই সে যে এটা ঠিক করতে পারবে না এজন্মেও ,আমি নিশ্চিত ছিলাম।তাই এখন নতুন কোন গোলযোগ না করে উনার খানকার নির্দিষ্ট জায়গায় নিজহাতে রেখে আসলাম মেমরীটা।

পরদিন সবাই উপস্থিত ।চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে অনেকেই গোপনে লাঠিসোটাও এনেছে ।এটা হেস্তনেস্ত আজই হবে ,এর ভন্ডামির।। আমি ভিতরে গেলাম ।আমার রোগীর অবস্থা জানতে চাইলাম ।বলল..যেখানে রেখেছিল ওখান থেকেই নিয়ে চলে যাও ।আসন্ন বিপদসামনেও গলায় সম্পূর্ণ ভাবলেশহীন জবাব ।যেন উল্টো আমাকে ধমক দিলেন ! আমি মেমরীটা হাতে নিয়ে মোবাইলে পুস করালাম- কিন্তু অবাক কান্ড!! মেমরী সম্পূর্ণ ঠিক ।সব ডাটা ব্যাকআপ করা ।আমার চোখ চরকখাছে ।একটা ক্ষোভ নিয়ে বের হয়ে গেলাম সবাইকে নিয়ে ।।এটা কিকরে সম্ভব !গত ২৪ঘন্টা উনি আমাদের টিমের বিশেষ নজরদারিতে ছিলেন যেন বাইরে থেকে এটা ঠিক করে আনতে না পারে ।তার মানে অনলি-ঝারফুঁকে "মেমরী-কার্ড" রিকভারিড!! এটা অবিশ্বাস্যের চেয়ে বেশি কিছু.....আর আমাদের বিশ্বাসের উপর বিশাল একটা ধাক্কা.... (চলবে..)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:০৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবি কখনো কখনো কিছু ইঙ্গিত দেয়!

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭



গতকাল ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এর ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের অফিসায়াল এক্স পোস্টে এই ছবি পোস্ট করে জানিয়েছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের পিছনে একটা ছবি ছিল ১৯৭১ সালের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলু

লিখেছেন স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



লতিফপুরের মতি পাগল
সকালবেলা উঠে
পৌঁছে গেল বাঁশবাগানে
বদনা নিয়ে ছুটে



ঘাঁড় গুঁজে সে আড় চোখেতে
নিচ্ছিল কাজ সেরে
পাশের বাড়ির লালু বলদ
হঠাৎ এলো তেড়ে




লাল বদনা দেখে লালুর
মেজাজ গেল চড়ে।
আসলো ছুটে যেমন পুলিশ
জঙ্গী দমন করে!





মতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×