আমি অনেকবার স্কেচটি দেখেছি, বড় করে দেখেছি; আমার চোখে কোনো বিকৃতি ধরা পড়েনি। কারণ আমি জানি এটা কাইয়ুম চৌধুরীর অাঁকা নয়, বঙ্গবন্ধুর ছবিটি এঁকেছে ক্লাশ ফাইভে পড়ুয়া একজন।
আমি বরং মুগ্ধ হয়েছি, একটি শিশু বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধারণ করে তা আবার রংতুলিতে ফুটিয়ে তুলেছে। বঙ্গবন্ধুর স্কেচের ব্যাকগ্রাউন্ডে জাতীয় পতাকার ব্যবহারও আমার চমৎকার লেগেছে।
এই ছবিটি ব্যবহার করে গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বরিশালের অাগৈলঝারার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী সালমান তারেক আমন্ত্রণপত্র তৈরি করেন। আগে জানলে শিশুটিকে উৎসাহ দেয়ায় আমি সালমান তারেককে ধন্যবাদ জানাতাম। দেরিতে হলেও এখন তাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে এখন বেচারার ধন্যবাদ নেয়ার মত মানসিক অবস্থা আছে বলে মনে হয় না।
বঙ্গবন্ধুর ছবি 'বিকৃত' করার অপরাধে তিনি জেল খেটে এসেছেন। তার এখন চাকরি যায় যায় অবস্থা। তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। মামলার কথা শুনে আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেছি। বঙ্গবন্ধুকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য যার পুরস্কৃত হওয়ার কথা, তার এখন চাকরি নিয়ে টানাটানি।
বরিশালের সেই অতি উৎসাহী আওয়ামী লীগের সেই নেতাকে বলছি, ভাই বঙ্গবন্ধু আপনার বা আওয়ামী লীগের একক সম্পত্তি নয়, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা, তিনি সকলের। আর কোনটা ছবি আর কোনটা শিশুর আঁকা স্কেচ- এই পার্থক্য ধরতে না পারলে, আপনি বরং রাজনীতি ছেড়ে ঘরে বসে থাকুন। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে দাবি জানাচ্ছি, সর্বস্তরে বঙ্গবন্ধুকে ছড়িয়ে দেয়ার পথে বাধা সৃষ্টি, বঙ্গবন্ধু সস্পর্কে শিশু মনে ভয় ধরিয়ে দেয়া এবং একজন সরকারি কর্মকর্তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার দায়ে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হোক। সুযোগ থাকলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হোক।
বাড়াবাড়ি কখনোই ভালো ফল আনে না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:২৪