সোডিয়াম লাইটের আলোয় হেটে চলা। সঙ্গী হিসেবে ছায়াকে সাথে পাওয়া। ক্লান্ত শরীরকে বিশ্রাম দিতে মোরের দোকান থেকে পান করা চা। হাতে জ্বলন্ত সিগারেট আর মুখ ভর্তি ধোয়া। তারপর আবার সেই হেটে চলা। আজও দেরি হয়ে গেল। রোজই দেরি হচ্ছে। যখন থেকে রনিদের সাথে আড্ডা দেওয়া শুরু হল তখন থেকে রোজই দেরি হচ্ছে। না এমন আর হবেনা। প্রতিদিনের মত আজও প্রমিস করল নিজে নিজে আবির। রনির বন্ধুমহলের সাথে আবিরের পরিচয় বেশিদিনের নয়। রনি আবিরের ইউনিভারসিটির বন্ধু। রনির মাধ্যমেই নিপু, রাসান, সজীবের সাথে পরিচয় আবিরের। ওরাই আবিরকে সিগারেট খাওয়া শিখিয়েছে। বন্ধুর আবদার কি বারে বারে ফেলে দেওয়া যায়। তাই মাঝে মাঝে দু একটা টান। এভাবেই শুরু, ওরা মাঝে মাঝে সিগারেটে কি যেন ভরে খায়। আবির ও দেখদেখি টান দেয়। আবিরের মাথা ঝিমঝিম করে শুধু ঘুম পায়। একটা বিষয় খেয়াল করল আবির তার মেজাজ দিন দিন জানি কেমন খারাপ হয়য়ে যাচ্ছে। লাস্ট থার্টি নাইট পার্টিতে যে কত মজা করল আবির। বন্ধুরা মিলে বিয়ার গরুর মাংস আর কাচা মরিচের সসের ব্যবস্থা করেছিল। ২ পেগ খাওয়ার পর আর হুস ছিলনা আবিরের। আজ সোদিয়াম লাইটগুলো যেন গুমরা মুখ করে তাকিয়া আছে আবিরের দিকে। কিসে যেন অভিমান তাদের। যখন ইউনিভারসিটির ফেস্টিবলে নাটক করে রাতে ষে ফিরত সোডিয়াম লাইটগুলো কতই না সুন্দর করে আলো ছড়াও আবিরের মুখে। যখন লিনার হাত ধরে হেটে চলত মনে হত নিয়ন আলো গুলো ওদের আশীর্বাদ করছে। তাহলে আজ কেন এমন? আজ লিনা পাশে নেই এতে আবিরের কি করার আছে? আজ কেন নিয়ন আলোয় শহর কে এত ঝাপসা দেখাচ্ছে? আবির আর হাটতে পারছেনা। মাথাটা খুব যেন ঝিমঝিম করছে। শরিরটাও বড্ড কাপছে। আজই প্রথম ষে হিরোইন গ্রহন করেছে। তাই হয়ত এমন লাগছে। আবিরের মনে হচ্ছে জমদুত যেন দাড়িয়ে আছে তাকে কথায় যেন নিয়ে যাবে। ঐ তো দূরে আবছা কাকে যেন দেখা যায়। মা তুমি এসেছ। আমাকে ক্ষমা করে দিও মা আমি তোমার ভাল আবির হয়ে আসতে পারলামনা। অভিমানি মায়ের চোখে জল। মা ডাকে খুকা তুই এমন বদলে গেলি কেন? তুই আয় ফিরে আয় আমার কোলে। তোর জন্য পিঠা বানিয়ে রেখেছি। আয় মায়ের কাছে ফিরে আয়। আবার সব কিছু ঝাপসা হয়ে গেল।
(মাদক কেড়ে নেয় কত তাজা প্রাণ,
কাঁদে মা বাবা হারিয়ে সন্তান।) আমরা আর কোনো আবির কে এভাবে হারাতে চাইনা।