পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর সম্পর্ক হচ্ছে ভাই বোনের সম্পর্ক।
সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়। এইতো সেদিনের কথা আমার আপুমনি এসে বলল দাদা দেখ আব্বু আমার জন্য নতুন জোতা, মুজা স্কুলের জামা, ব্যাগ নিয়ে এসেছে, কাল থেকে আমিও স্কুলে যাব। আর আজ আমার সেই আপুমনি কত বড় হয়ে গেছে এখন সে কলেজে পড়ে। আমার কখনও পুতুল নিয়ে খেলতে হয়নি ঘরেই ছিল আমার ছোট্ট পুতুল। তার সাথে কত যে মজার সময় কাটিয়েছি। একদিন স্কুল ক্যন্টিনে আমাকে দেখে বলে দাদা বার্গার খাব । আমি কিনে দিয়ে বললাম ক্লাসে যাও আমার সেই ছোট্ট পুতুলটি আমাকে তার ২ টাকা দিয়ে বলল তুমি কিছু খেয়ে নিও। আমার যে এত হাসি পেয়েছিল, আজ ও সেই কথা মনে করে হাসি। ও যখন বৃত্তি পেল খুশিতে আমাকে জরিয়ে সে কি কান্না। যখন ছোট ছিল আমার নতুন জামা, জন্মদিনের কেক সবকিছু ১ম সে ছাড়া আর কেউ ধরতে পারবেনা। কোথাও বেড়াতে গেলে বা মার্কেটে গেলে বা মেলায় গেলে ওর জন্য কিছু আনতেই হবে। ওর জন্য কিছু করতে পেলে অনেক ভাল লাগে। একদিন কাদতে কাদতে এসে বলে দাদা তুই সিগারেট খাস? আমিতো হতবাক ও কি করে জানল। মিথ্যা বললাম ওকে না আমি খাই না। ও বলল যানস আমার বান্ধবি বলছে তুই খাস দেখ কতবড় মিথ্যুক তাই ওর সাথে আর বন্ধুত্ব নয়।
ছোট বেলা থেকেই ও অনেক সুন্দর করে আবদার করত। আর এখন তো ওর আবদার অনেক মজার। বলবে দাদা তুই ঐটা নিয়ে আসিস আমি টাকা দিয়ে দিব। হা হা হা আমি জানি ও কখনও দিবেনা। ও নাকি আমার কাছে ৬০ টাকা পায়। কিন্তু আমার কাছ থেকে নেওয়া টাকার কোন হিসেব নাই। ঈদে সালামি তো দিতেই হয়। যদি বাহিরে থাকি ঘরে ভাল কিছু রান্না হলে ফোন করে বলবে দাদা জলদি বাসায় আয় আম্মু এই খাবার রান্না করছে। মাঝে মাঝে আমাকে নুডরস রান্না করে খাওয়াবে সে। আমার লেখার ১ম পাঠক সেই। কত সুন্দর ভাবেইনা আমার পচা লেখাকে ওর মুখের মিষ্টি হাসি দ্বারা পরিপৃর্ণ করে।
ঘরে আমিই ওর বন্ধু। সেই স্কুল জীবন থেকেই ওর সকল ভাললাগা মন্দ লাগা আমার সাথে শেয়ার করে। কলেজে আজ কোন ব্যপার নিয়ে মজা হল, হয়ত এসে বলবে দাদা আমাদের ফিজিক্স মেম যেমন সুন্দরি তার পরানু তেমন পচা। আবার বলবে ইসস খাদিজার বয়ফেন্ড না থাকলে তর সাথে প্রেম করতে বলতাম আরও কত কি। এখনও ও তেলাপোকা দেখে চিৎকার করে আর আমার ছোটে যেতে হয় ওর কাছে। এখনও বিদ্যুৎ চলে গেলে ওর ঘরে দ্রুত যেতে হবে।
ছোটকালে ওর থেকে কিছু নিতে হলে বলতাম যদি আমাকে না দিস তাহলে আমি মারা যাব। ও দিয়ে দিত। একদিন স্কুল থেকে এসে দেখি আমার আপু মনির পা কেটে গেছে। আমাকে দেখে বলে যান ঐ পচা বটি আমার পা কেটে ফেলছে। আমার ও কেন জানি ঐ বটির ওপর অনেক রাগ হল। আমি সাথে সাথে বটিটা জানালা দিয়ে ফেলেদিলাম। আম্মু অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।
আমার আপুমনি ছারা একদিন ও ভাল লাগেনা। একদিন ওর বিয়ে হবে চলে যাবে আমায় ছেড়ে ভাবতেই কষ্ট হয়। কিন্তু এটাই পৃথিবীর নিয়ম। যদিও কখনও বলা হয়নি , আজ তোমাকে বলি আপুমনি আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালবাসি।
(সকল ভাইয়ের কাছে তার বোন অনেক প্রিয়। বোনরা ভাইকে তার চেয়েও বেশি ভালবাসে। আল্লাহর অশেস মেহেরবানি তিনি আমাকে একটা আপুমনি দিয়েছেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:২৬