নানা কারণে নানা অসুস্থতায় ডাক্তার দেখিয়ে বা না দেখিয়েই অ্যান্টিবায়োটিক আমরা খেয়েই থাকি। একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে অবশিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক অন্যদের মধ্যে এবং পরিবারের বাইরে কাউকে ব্যবহার করতে দিলে তাতে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী সংক্রমণের হার বেড়ে যায়। আমেরিকান আকাদেমি অব পেডিয়াট্রিকসের জাতীয় সম্মেলন ও প্রদর্শনীতে এই ফলাফল উপস্থাপন করা হবে।
লেখক রুথ মিলানাইক বলেন, গবেষণায় দেখা যাচ্ছে অনেক অভিভাবকই প্রেসক্রিপশন ডাইভারসন নামের সমস্যায় জড়িত, প্রায়ই অ্যান্টিবায়োটিক চেয়ে আনা বা আগের প্রেসক্রিপশন দেখে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রবণতা আছে তাঁদের।
নিউইয়র্কের কোহেন চিলড্রেন মেডিক্যাল সেন্টারের ডাঃ মিলানাইক বলেন, "যার জন্য যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়নি তাঁকে সেটি দেওয়া শুধু তাঁর জন্যই বিপজ্জনক নয়, সমগ্র জনসংখ্যার জন্য ভোগের কারণ। একসময় শরীর এই অ্যান্টিবায়োটিকে সাড়া দেয় না।"
গবেষণার জন্য, অ্যামাজন মেকানিক্যাল টার্কের মাধমে অনলাইনে ৪৯৬ জন অভিভাবককে প্রশ্নাবলী বিতরণ করা হয়েছিল। প্রায় অর্ধেক (৪৮.২ শতাংশ) অভিভাবক জানিয়েছেন যে তারা সঠিকভাবে সরিয়ে দেওয়ার করার পরিবর্তে অবশিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকগুলি রেখে দিয়েছেন।
তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ পরবর্তীতে তাদের ভাইবোন, বাচ্চাদের, এবং সম্পর্কযুক্ত প্রাপ্তবয়স্কদের এই অ্যান্টিবায়োটিকগুলি দেয়। অনেকসময় দেখা গেছে ওই অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করার বেশ কয়েক মাস বাদে ফের সেগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে- চিকিত্সকের পরামর্শ ছাড়াই। অভিভাবকেরা নিজেরাও অবশিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছেন।
অন্যান্য ফলাফলের মধ্যে:
-অ্যান্টিবায়োটিকগুলির সর্বাধিক প্রচলিত ধরণের মধ্যে আছে ক্রিম (৬৭.৭শতাংশ) এবং ট্যাবলেট (৫৫.৬ শতাংশ) তরল (৮০.৮শতাংশ) এবং ড্রপ (৭৩.৮ শতাংশ)।
-অ্যান্টিবায়োটিকের যে ডোজ প্রেস্ক্রাইব করা হয়েছিল, সেই একই মাত্রায় ওষুধ দেওয়া হয়েছে অন্যদের, সে শিশু হোক বা বয়স্ক।
-সামগ্রিকভাবে ১৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারীরা বলেছিলেন যে তাঁরা তাঁদের সন্তানদের প্রাপ্তবয়স্কদের ওষুধ দিয়েছেন।
মিলানাইক বলেন, কীভাবে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে, সমস্ত অসুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় নয় এবং পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের ঝুঁকি নিয়ে পরিবারগুলিকে শিক্ষিত করার জন্য আরও বেশি প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
মিলানাইক বলেন, "যদিও অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের ফলে ওষুধের বিপ্লব ঘটেছে, তাও সংক্রামক রোগগুলির বিরুদ্ধে কার্যকরী হাতিয়ার হিসাবে এটির সঠিক মাত্রায় ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য চিকিতসকদের গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।"
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২২