পাকিস্তান জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ ! !!
পূরব বাংলার শ্যামলিমায় - পঞ্চ নদীর তীরে অরুনিমায়,
ধূসর সিন্ধুর মরু সাহারায়, ঝাঁন্ডাই জাগে যে আজাদ
পাকিস্তান জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ !!!! "
-কবি গোলাম মোস্তফা।
সময় ১৯৫৬ সাল, পুর্ব বাংলার মুসলমানের জীবনে এই প্রথম বাংলাভাষায় জাতীয় সঙ্গীত নামের কোন বস্তুর অভিজ্ঞতা। প্রথম আন অফিসিয়াল জাতীয় সঙ্গীত। পশ্চিম পাকিস্তানীরা "পাক সার জমিন" গাইলেও ভাষা আন্দোলনের কারনেই হয়তো পুর্ব পাকিস্তানের জন্য বাঙ্গালী পলেটিশিয়ানরা ঝুঁকি নিতে চাইলেন না । তাই তারা একটা বাংলা কওমী তারানা খুঁজলেন। যা বাংলা ভাষায় হবে আবার একই সাথে পাকিস্তানের তুস্টি বাক্যও থাকবে। যাতে পাকিস্তানবাদ নিয়ে কোন সংশয় থাকলো না আবার বাংলা ভাষাও হাজির নাজির হলো। সব মিলে পাকিস্তানের ভক্তিরসে সিক্ত বাঙ্গালীর দেশাত্মবোধক সঙ্গীত।
এরপর বেশ কিছু দিন পুর্ব পাকিস্তানের স্কুলগুলিতে বাঙ্গালী স্কুল পড়ুয়া শিশুদের সুর করে এই জাতীয় বর্জ গাইতে হতো। অবশ্যি ২ বছরের মাথায় আইয়ুব খান ক্ষমতায় এসে আধাআধি কোন কিছুর মধ্যে গেলেন না। বাংলা জিন্দাবাদি কওমী তারানা বুটের ঘায়ে উড়িয়ে দিয়ে এর বদলে পউর্ন উর্ধু তারানা এ পাকিস্তান "পাক ষাড় জমিন সাদ বাদ" কায়েম করে দিলেন।
এর পর ৫৪ বছর, তবুও কেন জানি ৬০ উর্ধ বাঙ্গালী মুসলিমের দিলের একটা অংশ জুড়ে ঐ "জিন্দাবাদ" এখনো বহাল তবিয়তে টিকে আছে। অনেকেই তাদের স্বাধীন বংশধরদের মাঝেও ঐ সঙ্গীতের বাংলাদেশ ভার্সনের জেনেটিক ট্রান্সফার সাফল্যের সাথে করতে পেরেছেন। এমনকি আজকের ষাটোর্ধ রাজনীতিবিদেরাও খোকা খুকি থাকাকালীন ঐ জিনিস সুর করে গাইতেন। শৈশবের গাওয়া জিন্দাবাদ গীতের রেশ এখনো বাংলাদেশের কিছু ৬০ উর্ধ রাজনীতিবিদের মধ্যেও প্রবল ভাবেই দেখা যায়।
তবে যখন শেখ হাসিনা আজকে শরিয়াহ আইনে বিচার চালানোর কথা বলেন তখন বেশ বিব্রতবোধ করি। ভাবতে বাধ্য হই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও নিশ্চয় খুকুমনি থাকা অবস্থায় স্কুলের কোরাশে ঐ পাক(!) সঙ্গীত গাইতেন। শৈশবে গাওয়া ঐ গানের রেশ উনিও অবচেতন মনে ধরে রাখেননিতো ?