পবিত্র ভূমি
১৪১৭ হিজরিতে বাদশা ফাহাদ ইবনে আবুল আজিজ সংস্কার করেন পবিত্র কাবাঘর। ৩৭৫ বছর পূর্বে অর্থাৎ ১০৪০ হিজরিতে সুলতান মারদান আল উসমানির সংস্কারের পর এটাই হলো ব্যাপক সংস্কার। বাদশা ফাহাদের সংস্কারের পূর্বে পবিত্র কাবাকে আরো ১১ বার নির্মান, পুননির্মান ও সংস্কার করা হয়েছে বলে কারো কারো দাবি। নিচে নির্মাতা, পুননির্মাতা ও সংস্কারকের নাম উল্লেখ করা হলোঃ
১. ফেরেশতা ২. হজরত আদম ৩. শীশ ইবনে আদম ৪. ইব্রাহিম ও ইসমাইল (আ) ৫. আমালেকা স¤প্রদায় ৬. জুরহুম গোত্র ৭. কুসাই ইবনে কিলাব ৮. কুরাইশ ৯. আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রাঃ) [৬৫ হিঃ] ১০. হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ [৭৪ হিঃ] ১১. সুলতান মারদান আল উসমানি [১০৪০ হিঃ] ১২. বাদশা ফাহাদ ইবনে আবদুল আজিজ [১৪১৭ হিঃ]।
পবিত্র কাবার উচ্চতা ও দৈর্ঘ্যঃ
উচ্চতা ১৪ মিটার, মুলতাযামের দিকে দৈর্ঘ্য ১২.৮৪ মিটার, হাতিমের দিকে দৈর্ঘ্য ১১.২৮ মিটার, রুকনে ইয়ামানি হাতিমের মাঝখানকার দৈর্ঘ্য ১২.১১ মিটার, হাজরে আসওয়াদ ও রুকনে ইয়ামানির মাঝখানকার দৈর্ঘ্য ১১.৫২ মিটার।
হাজরে আসওয়াদ বা কালোপাথরঃ
পবিত্র কাবার দক্ষিণ কোণে, জমিন থেকে ১.১০ মিটার উচ্চতায় হাজরে আসওয়াদ স্থাপিত।
হাজরে আসওয়াদ দৈর্ঘ্যে ২৫ সেমি ও প্রস্থে ১৭ সেমি। শুরুতে হাজরে আসওয়াদ এক টুকরো ছিল, কারামিতা স¤প্রদায় ৩১৯ হিজরিতে পাথরটি উঠিয়ে নিজেদের অঞ্চলে নিয়ে যায়। সে সময় পাথরটি ভেঙে ৮ টুকরোয় পরিণত হয়। এ টুকরোগুলোর সবচেয়ে বড়টি খেজুরের মতো। টুকরোগুলো বর্তমানে অন্য আরেকটি পাথরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে , যার চারপাশে দেয়া হয়েছে রুপার বর্ডার। রুপার বর্ডারবিশিষ্ট পাথরটি চুম্বন নয় বরং তাতে স্থাপিত হাজরে আসওয়াদের টুকরোগুলো চুম্বন বা স্পর্শ করতে পারলেই কেবল হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করা হয়েছে বলে ধরা হবে।
হাজরে আসওয়াদ বেহেশত থেকে নেমে আসা একটি পাথর যার রং শুরুতে এক হাদীস অনুযায়ী দুধের বা বরফের চেয়েও সাদা ছিল। পরে আদম সন্তানের পাপ তাকে কালো করে দেয়। হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ করলে গুনাহ মাফ হয়। এক হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী হাজরে আসওয়াদের এতটি জিহবা ও দুটি ঠোঁট রয়েছে, যে ব্যক্তি তাকে চুম্বন-স্পর্শ করল তার পক্ষে সে কিয়ামতের দিন সাক্ষী দেবে। তবে হাজরে আসওয়াদ কেবলই একটি পাথর যা নিজ থেকে কারো কল্যাণ বা অকল্যাণ কোনোটাই করতে পারে না।
রুকনে ইয়ামানিঃ কাবা শরীফের পশ্চিম-দক্ষিণ কোন। তাওয়াফের সময় এ কোণকে সুযোগ পেলে স্পর্শ করতে হয়। চুম্বন করা নিষেধ। হাদীসে এসেছে হযরত ইবনে ওমর (র.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (স.) কে দুই রুকনেই ইয়ামানি ব্যতিত অন্য কোনো জায়গায় স্পর্শ করতে দেখিনি।
মুলতাজামঃ হাজরে আসওয়াদ থেকে কাবা শরীফের দরজা পর্যন্ত জায়গাটুকুকে মুলতাজাম বলে। মুলতাজাম শব্দের আক্ষরিক অর্থ এঁটে থাকার জায়গা। সাহাবায়ে কেরাম মক্কায় এসে মুলতাজামে যেতেন ও দু’হাতের তালু, দু’হাত ও চেহারা ও বক্ষ রেখে দোয়া করতেন। বিদায়ী তাওয়াফের পূর্বে বা পরে অথবা অন্য যে কোনো সময় মুলতাজামে গিয়ে দোয়া করা যায়। ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র.) বলেন, যদি মুলতাজামে আসার ইচ্ছা করে মুলতাজাম হলো হাজরে আসওয়াদ ও দরজার মধ্যবর্তী স্থান- অতঃপর সেখানে তার বক্ষ, চেহারা, দুই বাহু ও দুই হাত রেখে দোয়া করে, আল্লাহর কাছে তার প্রয়োজনগুলো সওয়াল করে তবে এরূপ করার অনুমতি আছে। বিদায়ী তাওয়াফের পূর্বেও এরূপ করতে পারবে। মুলতাজাম ধরার ক্ষেত্রে বিদায়ী অবস্থা ও অন্যান্য অবস্থার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আর সাহাবীগণ যখন মক্কায় প্রবেশ করতেন তখন এরূপ করতেন। তবে বর্তমান যুগে লাখ লাখ মানুষের ভিড়ে মুলতাজামে ফিরে যাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই সুযোগ পেলে যাবেন অন্যথায় যাওয়ার দরকার নেই। কেননা মুলতাজামে যাওয়া তাওয়াফের অংশ নয়।
মাকামে ইব্রাহীমঃ মাকাম শব্দের আভিধানিক অর্থ, দন্ডায়মান ব্যক্তির পা রাখার জায়গা। আর মাকামে ইব্রাহীম বলতে সেই পাথরকে বোঝায় যেটা কাবা শরীফ নির্মাণের সময় হযরত ইসমাইল (আ.) নিয়ে এসেছিলেন যাতে পিতা ইব্রাহীম এর উপর দাঁড়িয়ে কাবাঘর নির্মাণ করতে পারেন। হযরত ইসমাইল (আ.) পাথর এনে দিতেন এবং ইব্রাহীম (আ.) তাঁর পবিত্র হাতে তা কাবার দেয়ালে রাখতেন। ঊর্ধে ওঠার প্রয়োজন হলে পাথরটি অলৌকিক ভাবে ওপরের দিকে উঠে যেত। তাফসিরে তাবারিতে সুরা আলে ইমরানের ৯৭নং আয়াতের ব্যাখ্যায় এসেছে, বায়তুল্লায় আল্লাহর কুদরতের পরিষ্কার নিদর্শন রয়েছে এবং খলিলুল্লাহ ইব্রাহীম (আ.)- এর নিদর্শনাবলী রয়েছে, যার মধ্যে একটি হলো তাঁর পদচিহ্ন ওই পাথরে যার ওপর তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন।
হযরত ইব্রাহীম (আ.)- এর পদচিহ্নের একটি ১০ সেমি ও অন্যটি ৯ সেমি গভীর। লম্বায় প্রতিটি পা ২২ সেমি ও প্রস্থে ১১ সেমি।
বর্তমানে এক মিলিয়ন রিয়াল ব্যয় করে মাকামের বক্সটি নির্মাণ করা হয়েছে। পিতল ও ১০ সেমি পুরু গ্লাস দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এটি। ভেতরের জালে সোনা চড়ানো। হাজরে আসওয়াদ থেকে মাকামে ইব্রাহীমের দূরত্ব হলো ১৪.৫ মিটার।
তাওয়াফ শেষে মাকামে ইব্রাহীমের পেছনে দু’রাকাত সালাত আদায় করতে হয়। জায়গা না পেলে অন্য কোথাও আদায় করলে সালাত আদায় হয়ে যায়।
মাতাফঃ কাবা শরীফের চারপাশে উন্মুক্ত জায়গাকে মাতাফ বলে। মাতাফ শব্দের অর্থ তাওয়াফ করার জায়গা। মাতাফ সর্ব প্রথম পাকা করেন ইবনে জুবায়ের, কাবার চারপাশে প্রায় ৫ মিটারের মতো। কালক্রমে মাতাফ স¤প্রসারিত করা হয়। বর্তমানে শীতল মার্বেল পাথর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে মাতাফ যা প্রচন্ড রোদের তাপেও শীতলতা হারায় না, হজকারীগণ আরামের সঙ্গে পা রেখে তাওয়াফ সম্পন্ন করতে পারেন।
সাফা-মারওয়াঃ কাবা শরীফ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় ১৩০ মিটার দূরে সাফা পাহাড় অবস্থিত। সাফা একটি ছোট পাহাড়, যার ওপর বর্তমানে গম্বুজ নির্মাণ করা হয়েছে এবং এ পাহাড়ের একাংশ এখনো উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। আর বাকি অংশ পাকা করে দেয়া হয়েছে। সমতল থেকে উঁচুতে এই পাকা অংশের ওপরে এলে সাফায় উঠেছেন বলে ধরে নেয়া হবে। সাফা পাহাড়ের নির্দিষ্ট জায়গা থেকে এখনো পবিত্র কাবা দেখতে পাওয়া যায়।
মারওয়া শক্ত সাদা পাথরের ছোট একটি পাহাড়। পবিত্র কাবা থেকে ৩০০ মিটার দূরে পূর্ব-উত্তর দিকে অবস্থিত। বর্তমানে মারওয়া থেকে কাবা শরীফ দেখা যায় না। মারওয়ার সামান্য অংশ খোলা রাখা হয়েছে। বাকি অংশ পাকা করে ঢেকে দেয়া হয়েছে।
মাস’আঃ সাফা ও মারওয়ার মধ্যবর্তী অংশকে মাস’আ বলা হয়। মাস’আ দৈর্ঘ্যে ৩৯৪.৫ মিটার ও প্রস্থে ২০ মিটার। মাস’আর গ্রাউন্ড ফ্লোর ও প্রথম তলা সুন্দরভাবে সাজানো। গ্রাউন্ড ফ্লোরে ভিড় হলে প্রথম তলায় গিয়েও সাঈ করতে পারেন। প্রয়োজন হলে ছাদে গিয়েও সাঈ করা যাবে তবে খেয়াল রাখতে হবে সাঈ যেন মাস’আর মধ্যেই হয়। মাস’আ থেকে বাইরে দূরে কোথাও সাঈ করেলে সাঈ হয় না।
মসজিদুল হারামঃ কাবা শরীফ ও তার চারপাশের মাতাফ, মাতাফের ওপারে বিল্ডিং, বিল্ডিংয়ের ওপারে মারবেল পাথর বিছানো উন্মুক্ত চত্বর এ সবগুলো মিলে বর্তমান মসজিদুল হারাম গঠিত। কারো কারো মতে,পুরো হারাম অঞ্চল মসজিদুল হারাম হিসেবে বিবেচিত। পবিত্র কোরানের এক আয়াতে এসেছে, তোমরা অবশ্যই মসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে। অর্থাৎ হারাম অঞ্চলে প্রবেশ করবে। সূরা ইসরায় মসজিদুল হারামের কথা উল্লেখ হয়েছে। এরশাদ হয়েছে ‘পবিত্র সেই সত্তা যিনি তাঁর বান্দাকে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় রাতের বেলায় নিয়ে গেলেন, যার চারপাশ আমি করেছি বরকতময়।’ ইতিহাসবিদদের মতানুসারে রাসুলুল্লাহ (স.) কে হযরত উম্মে হানীর ঘরের এখান থেকে ইসরা ও মিরাজের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর তৎকালে কাবা শরীফের চারপাশে সামান্য এলাকা জুড়ে ছিল মসজিদুল হারাম, উম্মে হানীর ঘর মসজিদুল হারাম থেকে ছিল দূরে। এতদসত্বেও ওই জায়গাকে মসজিদুল হারাম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?
বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন
গণমুখী একটি চাওয়া
মানুষের মুখে হাসি ফুটুক,
আঁধার মুছে আলোর ছোঁয়া,
ক্লান্তিহীন পথ চলুক,
নতুন স্বপ্ন আনবে জোড়া।
দিনবদলের শপথ নিয়ে,
কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করে যাই,
নদীর স্রোতে ভেসে ভেসে
একটি স্রোতে মিলিয়ে যাই।
সবার তরে সমান বিচার,
ধনীর দুঃখীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ
২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?
"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন