যে কোন ব্যবসা বানিজ্য, শিল্প কারখানা, প্রতিষ্ঠান এমন একটি জায়গা যেখানে নানা ধরনের মানুষ সংঘবদ্ধ হয়। প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুয়াযী কাজের ধরন আলাদা। কিন্তু এই কাজ সমাপনের জন্য মানুষ দরকার। এই মানুষগুলো আমাদের সমাজেই বাস করে। কাজের জন্য মানুষ এক জায়গায় একটা উদ্দ্যেশ্যে সম্পাদানের জন্য সমবেত হয় বটে। কিন্তু তার নিজস্ব ধ্যান ধারনা, চিন্তা চেতনা, কিংবা মনোভাব সাথে নিয়েই সেখানে জড় হয়। পারিবারিক বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহন করে যে মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে নিয়েই সে কর্মক্ষেত্রে গমন করে। কর্মক্ষেত্রের নিয়মাচার হয়তো তাকে আলাদা একটা পরিবেশ দান করে। কর্ম ক্ষেত্রে নিজের চিন্তা ভাবনা দ্বারা চলার কোন উপায় নেই। বরং মানুষ কে কর্মপরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে হয়। সবকাজ নিজের মত করা যাবে না। নিজের মতের বাইরে সেখানে অন্যের মতকেই প্রাধান্য দিতে হয়। ব্যক্তি বড় নয় প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির চেয়ে বড় সে কথাটি মেনে চলতে হবে। প্রতিষ্ঠানের নিয়মাচার কে প্রাধান্য দিতে হবে। নিজস্ব ধ্যান ধারনাকে সেখানে বড় করে জাহির করার কোন সুযোগ নেই। যখনই নিজেকে জাহির করার ফন্দি করা হয়; তখনই তৈরি বৈরিতা। এই বৈরিতা হ্রেষারেশি থেকে আরম্ভ হয় দলা দলি, ক্ষমতার দাপট। আর ক্ষমতার দাপট কে ঘিরে তৈরি হয় কর্মক্ষেত্রের রাজনীতি। কর্মক্ষেত্রের রাজনীতি বিষয়টিকে পরিস্কারভাবে বুঝার জন্য দরকার কিছু বিষয় সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান। এই বিষয়গুলো হচ্ছে সংগঠন, প্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি, নের্তৃত্ব ইত্যাদি। কর্মক্ষেত্রের রাজনীতি মূলত আমাদের বৃহত্তর সমাজের রাজনৈতিক ভাবনারই প্রতিফলন। প্রত্যেকটি মানুষেরই নিজস্ব রাজনৈতিক দর্শন থাকে। বা রাজনৈতিক মত দ্বারা প্রভাবিত। কিন্তু এই রাজনৈতিক মত হচ্ছে জাতীয় রাজনৈতিক ভাবনা বা দর্শন। এই মতের দেশের বা সমাজের ভাল মন্দ আদর্শ জড়িত। এই ধরনের মত দ্বারা কর্মক্ষেত্র চলে না। তবে এখানের উল্লেখ অনেক সময় দেখা যায় কোন কর্মক্ষেত্রে বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকই নিয়োগ দেয়া হয়। তথাপী সেখানে কর্মক্ষেত্রে পদ পদবি নিয়ে ক্ষমতা লড়াই চলে। এই লড়াই কেও কর্মক্ষেত্রের রাজনীতি বলা যাবে।
কর্মক্ষেত্র একটি সংস্থা বা সংগঠন। এখানে একদল কর্মি একটি সাধারণ লক্ষ্য অর্জনে যোগ দেয়। এই সংস্থা বা সংগঠনের সাফল্য ব্যর্থতা আসলের প্রতিটি কর্মির শ্রমের আনুপাতিক। কর্মক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় দ্বন্দ্ব এবং রাজনীতি এড়াতে সংশ্লিষ্ট সকলকে একটা ইউনিট হিসাবে কাজ করতে হবে। সম্মিলিত কর্মপ্রচেষ্টাই একটা প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নতি ঘটাতে পারে। উৎপাদনশীল সংস্থার ক্ষেত্রে এই কর্মপ্রচেষ্টা বেশি দরকার। সারা বিশ্বের কোন দেশই এই অফিস রাজনীতি/ কর্মক্ষেত্রের রাজনীতি বা সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব বা দলাদলি থেকে মুক্ত নয়। তবে আমাদের মত অনুন্নত কিংবা উন্নয়নশীল দেশে এই অফিস রাজনীতি অত্যন্ত প্রকট। আমার এই আলোচনা কোন ব্যক্তি বিশেষ কে কেন্দ্র করে নয়। বরং একটা একাডেমিক দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করতে চাই। উন্মুক্ত আলোচনা আমার সহকর্মি কিংবা ফেইস বুক ফ্রেন্ড বা যারা এই ধরনের রাজনীতির সরাসরি শিকার তাদের মতামত আশা করছি। কিছু দিনের মধ্যে এই সংক্রান্ত একটা বই প্রকাশের আশা করছি। যারা লেখা পাঠাতে চান তারা আমার নীচের ই-মেইল ঠিকানায় লেখা পাঠাতে পারেন।
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪১