আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-এর যুগ থেকে জাগ্রত বিবেক বোধের অনুপ্রেরণায় যুগে যুগে নবী রাসূল, পয়গাম্বড়, পীর মাশায়েক, মনি-ঋষিরা বস্ত্র পরিধান থেকে খাদ্য অভ্যাস, সামাজিক বিবর্তনবাদের মধ্য দিয়ে, এমনকি নানাবিদ বৈরি আবহের মধ্যদিয়ে স্ব স্ব ধ্যান ধারণার ফলপ্রসূ অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। সেই অবস্থান তৈরি করতে কখনো বিপ্লব, কখনো সহানুভূতি, কখনো সন্ধি স্থাপনে ঘুমন্ত বিবেক জাগ্রত করে আজকের প্রগতির পথ বিশ্ব সভায় নন্দিত।
প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) বিবেকহীনদের জাগ্রত করতে না পেরে ওহুদের যুদ্ধ, খন্দকের যুদ্ধ, বদরের যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। জাগ্রত বিবেকবান সাহাবীদের সহযোগীতায় মক্কা বিজয় তথা ইসলামের বিজয় নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন। ইসলামের ইতিহাসে এ ছাড়াও অসংখ্য যুদ্ধের নজির রয়েছে।
আজ বিংশ শতাব্দীতে কিছু কিছু চুনো-পুটির সংক্রামণে সৃষ্ট এলার্জি ঘুম হারাম করার পূর্বেই এলার্জি নির্মূল ট্যাবলেটের সহায়তা অপরিহার্য।
জাগ্রত বিবেক ও সামাজিক ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের নিবিড় আয়োজন তৎকালীন সময়ে পাক শাসকের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে রক্ষা করতে পেরেছিল মায়ের ভাষা 'বাংলা'কে। সেই শক্তির পথ বেয়ে তৎকালীন বাঘা বাঘা নেতা মহোদয়রা বুঝতে পেরেছিল মুজিবই সেরা, মুজিবই পারবে, জাগুনিয়া গানের একমাত্র সুরকার হিসাবে শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করতে। সর্বশেষ অবস্থানে জয়-বাংলার অমিত সুরে মুগ্ধ- হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানী, শেরে বাংল এ কে ফজলুল হক সহ সকল নেতৃবৃন্দ ও আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা।
বাংলার ইতিহাসে যুগে যুগে মহাপুরুষের বদৌলতে যেমন আলোক উজ্জ্বল সোনালী দিগন্তের সূচনা হয়েছিল, তেমনি বিবেকহীন কিছু লোভী অমানুষের ষড়যন্ত্রে জাতি হয়েছে নেতৃত্ব শুন্য, মেধা শুন্য। আমরা হয়েছিলাম পিতা শুন্য। পিতা হারানোর বেদনায় আজও মূহ্যমান। ক্ষোভের আগুনে পুরে একাকার,জলন্ত ছাই দিয়ে তৈরি আজকের শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ যারাই আগুন লাগাতে চেষ্টা করবে তারাই জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হবে।তবে এ কথা ভেবে বেশী উৎফুল্ল হলে চলবে না, নিজেদের মধ্যকার দেনা পাওনা
মিটিয়ে নিতে হবে।
৭৫এর পর মহাপন্ডিতরা বলেছিলেন, পাকিস্থানের মুসলিমলীগের মত আওয়ামীলীগের ভাগ্যবরন করতে হবে।জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদুর প্রসারি নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়মীলীগ তাদের ভবিষৎ বানীকে ডাষ্টবিনে নিক্ষেপ করতে সক্ষম হয়েছে।সক্ষমতার মুল শক্তি ছিল ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস।আজকের অবস্থা দৃষ্টে তেমনটা মনে হচ্ছে না।কারন সরকারে থাকা অবস্থায় দলীয় কোন্দলের স্বীকারে অকালে ঝরে যেতে দেখেছি বহু মুজিব সৈনিকদের।
বর্তামান আলোকে কিছু অতি উৎসাহীরা যদি মনে করেন বিএনপি শেষ আর কখনো মেরুদন্ড সোজা করে দাড়াতে পারবেন না,তারা এখনো বোকার রাজ্যে বাস করবেন।প্রতি পক্ষকে যারাই হেলা করেছে তাদেরই পতনের পাগলা ঘন্টা বেজে গেছে,তাদের নিশ্চিহ্নতার অবস্থান খুজে পেতে কোন কোন ক্ষেত্রে দুরবীনের সাহায্য নিতে হয়েছে। অতএব সাধু সাবধান।
'মানুষ মানুষের জন্য' যদি কোন মানুষ মানবতাহীন হৃদয়ের অধিকারী হয়, তা হলে তাকে কি মানুষ বলা সমীচীন? হয়ত বলবেন, সে একটা পশু। ক্ষমতালোভী বন্য এই পশুদেরকে বিশেষণ যুক্ত করে জাহির করে শহীদ প্রেসিড জিয়াউর রহমান। যা পবিত্র শহীদ নামকরণকে কলুষিত করার নামান্তর। যে খুনিকে রক্ষা করার জন্য পবিত্র সংবিধানে আরোপ করতে পারে খুনির বিচার হবে না, পুরস্কার পাবে তাকে বলা হয় শহীদ।
'হায়রে মা, মাটি, দেশ
কেমন সন্তান জন্ম দিলা,
তোমার অবস্থা শেষ।'
হযরত আলী ( রা.) বলেছেন, 'দৃশ্যমান মানুষকে ভালবাসতে না পারলে অদৃশ্য আল্লাহর প্রতি ভালবাসা জন্মাতে পারে না।' এই প্রবাদই প্রমাণ করে মেজর জিয়া ছিল নিষ্ঠুর, ঠান্ডা মাথার খুনি। '৭৫ হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী কার্যকলাপের অংশ হিসাবে জাতির জনকের খুনিদের পুনর্বাসন করা, কর্নেল তাহেরসহ ১১৩৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করা, এ কেমন মানবতা?
পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে কোন সমাজপতি মানুষ খুন করে বা খুনীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে শহীদ উপাদিতে ভূষিত হয়েছেন এমন নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না। ব্যতিক্রম শুধু আমাদের দেশে। এ ধরনের সংস্কৃতি কোন সভ্য দেশে কাম্য হতে পারে না। সাধারণ মানুষগুলোকে এত বোকা ভাবা ঠিক হবে না। সত্য চাপা রাখা যায় না। এতক্ষণ দীর্ঘালোচনার প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল 'খুনি' কিভাবে 'শহীদ' হয়?
এখন আলোচ্য বিষয় হল জাগ্রত বিবেকের ফলে ভাষা পেয়েছি, স্বাধীনতা পেয়েছি, জাতির জনকের হত্যার আংশিক বিচার পেয়েছি, যুদ্ধাপরাধীদের ক্রমান্বয়ে বিচার পাচ্ছি, বিদ্যুৎ পাচ্ছি, বিশ্বব্যাংকের সাহায্য ছাড়া বাংলার সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে, ঢাকা মহানগরে অসংখ্য ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেস নামক নতুন ট্রেন চলাচলের সুবিধার অপেক্ষায়, চার লেনের সড়ক নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে, একনেকের বৈঠকে নতুন করে অনুমোদন পেয়েছে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কেও ফ্লাই ওভার নির্মাণ করা হবে।
ঘুমন্ত বিবেকের ফলে ১৯৭৫ উত্তর গোটা জাতি ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত। আগাছায় পরিপূর্ণ এক অনাবাদী জমির মত। বঙ্গকন্যা ক্ষমতায় আসার পর বাংলায় যে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটছে কিছু সংখ্যক ঘুমন্ত বিবেকবর্জিত রাজাকারের মাথার ছাতা, সুশীল নামক অভদ্র অমানুষদের কারণে শেখ হাসিনা নামক আলোর প্রদীপ নিভে যেতে পারে না। প্রবাদ আছে, 'আয় থাকতে রাইখা খাও, সময় থাকতে হাইটা যাও।' সময়ের কাজ সময়ে করা, বিশ্রামে লেজ নাড়াই সচেতনতার পরিচয়।মোদ্দা কথাঃ ঘুমের ভান করা মানুষদের গ্রেনেড বিস্ফোরন করেও ঘুম ভাঙ্গানো সম্ভব হবে না। আমাদের মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত কল্যাণময়ী রাষ্ট্র গঠনের দীপ্ত শপথে ক্যান্সারযুক্ত বিকৃত মস্তিস্কের ঘুমন্ত মানুষগুলোর সলিল সমাধি রচনা করা আবশ্যক। এ আবশ্যকতা যেমনি রয়েছে পন্ডিত মশায়দের ক্ষেত্রে তেমনি রয়েছে সরকারী ও বিরোধী দলের মধ্যেও।
সরকারী দলের লক্ষ ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে থাকা।এ ইচ্ছা পুরনের পূর্বশর্ত হচ্ছে ইউপি নির্বাচনকে কেদ্র করে যে বিশৃংঙ্খলা তৈরি হয়েছে, লীগের মাঝে যে নমিনেশন লীগ পয়দা হয়েছে,তৃনমুলের ভোটে যারা নমিনেশন পাওয়ার কথা তারা বঞ্চিত হয়ে মাঠের ত্যাগীলীগদের অবমুল্যায়নের একটা সুষ্ঠ সমাধান না হলে ভিশন অপুর্ন থেকে যাওয়ার সম্ভবনা প্রবল।আশা করব আগামী কেন্দ্রিয় সম্মেলনের পূর্বে আমার পরম শ্রদ্ধাভাজন নেতা সৈয়দ আশ্রাফ বলেছেন আওয়ামীলীগের জন্মই হয়েছে দেশবাসীকে নতুনত্ব সৃষ্টি করতে, নতুন ইতিহাস রচনা করতে আমি তার কথার সাথে একমত পোষন করে বলতে চাই আগামী সম্মেলনে নতুন নতুন চমক দেখতে চাই।ত্যাগীদের মুল্যায়ন চাই,নির্লোভ নেতৃত্ব চাই,টাকার কাছে রাজনীতির অসহায়ত্ব দেখতে চাই না।১২-১৩ তারিখের কাউন্সিল সফল হোক,স্বার্থক হোক এটা সকলেরই প্রত্যাশা।আমারও প্রত্যাশা।
আমাদের জন্য নয়, নতুন প্রজন্মের জন্য সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে দলমত নির্বিশেষে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস ও জাগ্রত বিবেকের বিকল্প নেই। জাগ্রত বিবেক লোভ নামক ঠাকুরের কাছে আক্রান্ত হলে দেশ জাতি সকলেরই খেশারত গুনতে হবে।যেমন গুনে গুনে এ অবস্থানে।দয়া করে একটু সংযমী হওয়া বাঞ্চনীয়।
জলন্ত আগুনে পুড়ে শেখ হাসিনা আজ খাটি সোনায় রূপায়িত। সকলকে হারিয়ে বাংলার মানুষকে জড়িয়ে তার সুখ-স্বপ্ন। এ স্বপ্ন বাবার আদর্শিক।বাবার অপূর্ণতা পূরণে সদা ক্লান্তিহীন দেহে নিরন্তর পথ চলা। আমাদের শ্রদ্ধা আর ভালবাসাই স্বজন হারানো বেদনা ভুলে দিগ্বিজয়ী নেত্রীর বেশে পৌঁছে যাবে ভিশন পূরণের মঞ্জিলে।