somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হেফজ এবং কওমী মাদরাসার শিক্ষকদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষন দেয়া জরুরী

২৩ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি যখন ৮ম শ্রেণিতে পড়ি তখন আমাদের ক্লাশে ৪ জন হেফজ পড়ুয়া ছাত্র ভর্তি হয়। ক্লাস ওয়ান থেকে সেভেন পর্যন্ত কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাদের ছিলনা। ফলাফল, কোন মতে এসএসসি পাশ করে তারা। সেই চারজন তাদের হেফজ মাদরাসার জীবন নিয়ে নানান গল্প করতো আমাদের সাথে। সেই গল্প-কথার একটা কমন বিষয় থাকতো কে কি পরিমান পিটুনি খেয়েছে তা নিয়ে। তাদের ভাষ্যমতে, চুন থেকে পান খসলেই মাদরাসার হুজুররা পেটাতো। পড়া না শিখলে তো পিটুনি মাস্ট। শারিরিক নির্যাতন করতে করতে লাঠি ভেঙে ফেলারও নজির আছে। আর মানসিক নির্যাতন তো আছেই!

একজন ছাত্রকে হেফজ মাদরাসায় দেয়া হয় ৫/৬ বছরে। যে বয়সে আল্লাহ নামাজই ফরজ করেননি সেই বয়সে তাদেরকে রাত ৪ টায় উঠে পড়তে বসতে হয়। একজন বাচ্চার মানসিক বিকাশের কোন সুযোগই থাকে না অধিকাংশ হেফজ মাদরাসায়। যে বয়সে একজন বাচ্চা তার মায়ের আদরে থাকার কথা, যে বয়সে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার কথা সেই বয়সে হাফেজ হবার জন্য বোর্ডিং-এ পাঠানো অমানবিক বলে আমি মনে করি।

অনেক মা-বাবা ছেলে হবার আগেই মানত করে রাখে সন্তানকে হাফেজ বানাবে। এমন মানসিকতা তৈরীর পেছনে আবার মাহফিলে হুজুরদের মুখরোচক সওয়াবের বয়ান অনেকাংশেই দায়ী। পিতা-মাতা মনে করে ছেলে হাফেজ বানালে জান্নাত কনফার্ম।

এইসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষিত তরুণ বড় হয়ে এমন প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক হন। তাদের না থাকে কোন প্রশিক্ষণ না থাকে সুস্থ মানসিকতা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মত করে এই সব মাদ্রাসার শিক্ষকদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা জরুরী। কারিগরী শিক্ষাবিহীন একটা বড় অংশ বেড়ে উঠছে আমাদের আশেপাশে। যারা কেবল মসজিদের ইমাম আর মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করা ছাড়া অন্য কোন স্বপ্ন দেখেন না।

একটা দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে এই যে বিরাট একটা প্রজন্ম নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেড়ে উঠছে এদের কে যথাযথ ভাবে কাজে লাগানো প্রয়োজন। দরকার সময়োপযুগী প্রশিক্ষণ। ধর্মের কাজ করতে গিয়ে যদি হাত পাততে হয় অসাধু লোকদের কাজে, ঘুষখোর-সুদখোরদের দান নিয়েই যদি প্রতিষ্ঠান চালাতে হয়, তাহলে আমি বলবো এই সব প্রতিষ্ঠানের হুজুররা মুনাফেক! তারা মুখে ধর্মের কথা ঠিকই বলে কিন্তু কাজে তার বাস্তবায়ন নাই।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:১২
২১টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিমকে বিভিন্ন নিয়মে ইবাদত করতে কে বলেছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:৪৭



সূরাঃ ৬ আনআম, ১৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ার রক্তচোখ: ক্রোধের নগর

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:৫২


ষড়ঋপু সিরিজের দ্বিতীয় কাহিনী ”ক্রোধ”

রাত্রি নেমেছে শহরের উপর, কিন্তু তিমির কেবল আকাশে নয়—সে বসেছে মানুষের শিরায়, দৃষ্টিতে, শ্বাসে। পুরনো শহরের এক প্রান্তে, যেখানে ইট ভেঙে পড়ে আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রিয় কন্যা আমার- ৭৪

লিখেছেন রাজীব নুর, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২



প্রিয় কন্যা আমার-
ফারাজা, তুমি কি শুরু করেছো- আমি কিছুই বুঝতে পারছি না! রাতে তুমি ঘুমানোর আগে ঘুমানোর দোয়া পড়ে ঘুমাতে যাও। প্রতিদিন তোমার মুখে ঘুমের দোয়া শুনতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নববর্ষের শোভাযাত্রা নাম বদল করছি না, পুরোনো নাম–ঐতিহ্যে ফেরত যাচ্ছি: ঢাবি উপাচার্য

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:০৪



পয়লা বৈশাখে ফি বছর চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেছেন, ‘আমরা নাম পরিবর্তন করছি না। আমরা পুরোনো নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

'৭৪ সালের কুখ্যাত বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল এখন সময়ের দাবী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫


বিগত আম্লিক সরকারের আমলে যে কুখ্যাত আইনের অপব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই আটক করে গায়েব করার চেষ্টা চলতো তা হলো ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন। এই আইন ব্যবহার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×