লেখাটা অনেক ভাল্লাগসে। তাই শেয়ার করলাম
একটা মেয়ে। টিশটাশ সুন্দরি, ছিমছাম গড়নের, চুপচাপ স্বভাবের, অসীম ধৈর্যের। হোস্টেলে থাকে, পড়াশুনা করে, সখীদের সাথে লুকিয়ে দূর্গাপূজা দেখতে যায়, চুটিয়ে প্রসাদ খায়। আর ক্লাস বন্ধ থাকলেই বাড়ির পথে দৌড়।
তো থার্ড ইয়ার ফাইনাল চলাকালে বাড়ি থেকে চিঠি আসে, সে যেন অতিসত্বর তল্পিতল্পা গুছিয়ে বাড়ি চলে আসে। তাহার বিবাহ ঠিক করা হইয়াছে। ঘটক মশায় হলেন মেয়ের বড় মামা। ছেলে তারই পরিচিত, অত্যন্ত সুপাত্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইকোনমিকসে পড়েন। বিয়ের পর বউ সমেত প্রবাসে চলে যাবার ইচ্ছাও আছে। বেশ, এ পাত্রের সাথে অনেক আগে থেকেই বিয়ের কথা চলে দুই পরিবারের মধ্যে। তার মাঝে আবার যেহেতু বড়মামা আছেন সুতরাং তিনি কাহিনী না ঘটিয়ে ছাড়বেন না। অগত্যা ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ির পথেই রওনা।
বিয়ের দিন তারিখ ঠিক, গোছগাছ প্রায় শেষের পথে। মাঝে হঠাৎ ছেলে জানালো বিয়ের পরে কিন্তু মেয়ে কোনো চাকরি বাকরি করতে পারবেনা। তার ঢাবি র এক রুমমেট নাকি বলেছে চাকরি করলে মেয়েরা হাতের বাইরে চলে যায়। এদিকে পাশ করে আর একবছর ইন্টার্র্নি করলে মেয়ের মোটামুটি সরকারি চাকরি কনফার্ম। কিন্তু বিয়ে করলে তো চাকরি দূরে থাক, পরীক্ষাই দিতে দিবেনা তারা। ওইদিকে বিয়ের দিনও ঘনিয়ে এসেছে।
কি আর করা, পরিবারের মান সম্মানের কথা ভেবে পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসা??
উঁহু,, মেয়ে ওই এক কথার উপরে বিয়েই ভেঙ্গে দিয়েছে। তার এতো বছরের কষ্টের সার্টিফিকেট উচ্চ ডিগ্রিধারী কোনো পার্ভাটের কাছে বেচে সে বিয়ে করতে পারবে না। সেই সিদ্ধান্ত থেকে তাকে আর শেষ পর্যন্ত কোনো ভাবেই নড়ানো যায়নি।
এই মেয়েটি আমার মা। আমার জ্বলজ্যান্ত ইন্সপিরেশন। রমণীর সদা সহাস্যমুখ দেখে কোনোভাবে বুঝার উপায় নেই ভিতরে সে কি পরিমাণ আগুন নিয়ে বসবাস করেন।
যা হোক, পরে অবশ্য তিনি আড়াই বছর সফল ভাবে প্রেম করে আমার বাবাকে বিয়ে করতে সক্ষম হয়েছিলেন ।
-Shananda Mithila (Vns'15)