আমাদের সময় প্রায় মেয়েদের ক্লাশ ফাইভ বা তার আগে বিয়ে হয়ে যেত।প্রায় ছেলে ফাইভ বা তার আগে শেভ করতো। ৮/১০ বছরে ছেলে মেয়েরা স্কুলে ভর্তি হত।কিন্তু আমি ছিলাম ব্যাতিক্রম, ছয় বছরে স্কুলে ভর্তি করানোয় ক্লাশে আমি ছিলাম বয়স ও সাইজে খাটো। একই ক্লাশে পড়লেও ‘শেভ’ বাবাজীরা ফুসুর ফুসুর গুজুর গুজুর করে মারফতি লাইনের কিছু আলাপ আলোচনা করতো, তবে সেই মজলিশে আমার এন্ট্রি তারা পছন্দ করতোনা।
আমার ইতি উতি আর আতি পাতি কান পাতায় গ্যাং লিডার এক সময় নিশ্চিত হল, ভাল ছাত্রের একটা তকমা থাকলেও আমিও তাদের মত লুল। এই গ্যাং এর পালের গোদা ইব্রাহীম এর সাথে আমার ভাব হয়ে গেল।এক সময় সে তার বিমুগ্ধ শ্রোতাদের দলে আমাকে দাখেল করে ধন্য করল।
বন্ধু মহলে সবাই একে হিংসা করলেও তার বাস্তব অভিজ্ঞতাগুলি শুনার জন্য আমরা তাকে বেশ খাতির করে বেলা বিস্কুট,চা, আইসক্রিম খাওয়াতাম। কারন তার ভাষ্য আর অন্যদের বিশ্বাস মতে সে ছিল মেয়ে পটানোর ওস্তাদ। তার সব গল্পই ছিল নিষিদ্ধ কিসিমের। সব মেয়ে তাকে দেখলে কেমনে কেমনে পটে যায়। পটে যাওয়াদের ভিতর হেডমাস্টারের মেয়ে, চেয়ারম্যানের মেয়ে থেকে শুরু করে এলাকার তেমন কোন মেয়ে বাকী ছিলনা। বলা বাহুল্য তার সব গল্পের হ্যাপি এন্ডিং ঘটতো ‘পাটক্ষেতে’।
একদিন এক বিয়ের আসরে সমবয়সি আমরা এক মেয়ে দেখিয়ে বললাম, দোস্ত এই মেয়েটাকে পটা। দেখলাম সে ইউ টার্ন নিয়েছে। নাহ, মেয়েটার চেহারা ভাল নয়, দাঁতগুলাও কেমন। আমরা চেপে ধরলাম, নাহ যেমন হোক আমরা তোমার সকল গল্পের সত্যতা স্বরূপ এই মেয়েটিকে পটানো দেখতে চাই। দেখলাম তার মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। মুখে কিন্তু চাপা মেরে যাচ্ছে। আরে কোন ব্যাপার না, কিছুক্ষনের ভিতর দেখবি।
কিছুক্ষনের ভিতর আমরা তাজ্জব হয়ে দেখতে পেলাম মেয়েটা খিস্তি খেউড় সহযোগে তাকে জুতা দিয়ে পিটাইতেছে।
একজন আলেম, পরিবারের ৪০ সদস্যকে বেহেস্তে নিবে এরকম এক ওয়াজ শুনে ইব্রাহীমের বাপ তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেয়। কয়েক বছরের ভিতর সে বিরাট হুজুর বনে যায়।
১৯৯০ সাল। এখন সে এক মসজিদের মুয়াজ্জিন। নতুন বিয়ে করেছে। আমাদের দেখা পেলেই তার জোস এসে যায়, শুরু করে স্বামীস্ত্রীর এডাল্ট কাহিনী। সে এক থেকে দেড় ঘন্টা মেহনত করে তার পরও তার ‘খুরুজ’ হয়না।(খুরুজ কি আমি জানিনা)।
কয়েক মাস পরে শুনি তার বউ বাপের বাড়ি চলে গেছে। অভিযোগ, সে অক্ষম।
একদিন, ঘটনা কি জিজ্ঞেস করলাম, সে কাঁদ কাঁদ হয়ে বলল, দোস্ত সব গপ ছিল, তোরা আমাকে একটা ভাল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:২১