নিশাত চৌধুরীর অনেক গল্প, উপন্যাস পড়েছি। আমি জানতাম উনি মহিলা! এক দিন পত্রিকায় দেখি উনার ইয়া গোঁফ ওয়ালা এক ছবি! বোম্বে চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান নৃত্য পরিচালক সরোজ খানকে পুরুষ বলেই জানতাম। পরে দেখি উনি এক নাদুস নুদুস এক মহিলা!
আসলেই নাম দেখে অনুমান করা যায় না কে পুরুষ আর কে মহিলা। কে জোয়ান কে বুড়া। কে কালা কে ধলা!
পান্না ,মুক্তা, আলো,শিল্পি,পাখি,মুন্নি,নুপুর,কচি। জ্বি না এটা আমার সাবেক প্রেমিকাদের লিস্টি নয়। ইনারা সকলেই পুরুষ তাও আমার পরিচিত মন্ডলে!
কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন বলে প্রবাদই প্রচলিত আছে। অনুরূপ বাদশা মিয়া ভিক্ষা করে, গরিব আলীর সাত তলা দালান, আশি বছরের বুইড়ার নাম শিশু মিয়া/ খোকা মিয়া, কুচকুচে কালো মানুষের নাম লাল মিয়া।
হাসনাত আব্দুল হাইয়ের সাথে চট্রগ্রাম আর্ট কলেজের শিক্ষক হাসি চক্রবতির সাক্ষাতের সময় নির্ধারন করা হয়েছে । যথা সময়ে হাসি চক্রবতি উপস্থিত হয়েছেন। সেক্রেটারির সাথে কথা বলে তিনি হাসনাত আব্দুল হাইয়ের রুমে ঢুকলেন।
ভদ্র লোককে দেখে আব্দুল হাই বিনয়ের সহিত বললেন, আমি দুঃখিত আপনাকে সময় দিতে পারছিনা, এখন আমার একজনের সাথে সাক্ষাতের সময় নির্ধারন করা, হাসি চক্রবতি, ভদ্র মহিলা অনেক দূর থেকে এসেছেন।
হাসি চক্রবতি ইতস্তত করে বললেন- জি আমিই হাসি চক্রবতি।
এর পরে হাসনাত সাহেবের মনের অবস্থা কি হয়েছিল জানিনা, আমি যা জানি তা হচ্ছে-
এক সময় যায় যায় দিনে লিখতাম। সেখানে লিখার শেষে লিখকের পুরো ঠিকানা দিয়ে দেয়া হত। সেই সুবাদে পাঠকের কাছ থেকে দুএকটা চিঠি টিঠিও পেতাম।
একবার শিল্পী নামে এক জনের কাছ থেকে একটা পত্র পেলাম। শিল্পী আপা সম্বোধন করে উত্তরও দিলাম। কয়েক দিন পর উনার কাছ থেকে ফিরতি আরেকটা পত্র আসে। ------- কয়েক কথার পরে লিখলেন-উত্তর দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। ইতি- নুরুল করিম শিল্পী।
আমার অবস্থা- মাডি হাডি যাক---!!!
আমাদের দেশের মানুষ আরবি নাম রাখতে পছন্দ করে। এই আরবি নামের কারনে আরব দেশে গিয়ে অনেক কে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। জামাল। আমাদের দেশে প্রচলিত একটি সুন্দর নাম বলেই জানি। জামাল শব্দের অর্থ নাকি ঊট। এই নিয়ে আরবের মানুষ বেশ হাসাহাসি করে।
সম্ভবত ৮৬ সালের এক বাস্তব ঘটনা- আমাদের দেশি এক নব্য ধনী সপরিবারে গেছেন ওমরাহ্ করতে। কোন অবৈধ মাল নেই তার পরও সৌদি ইমিগ্রেশন তাদের আটকে দিল। অভিযোগ তথ্য গোপন, ভুয়া পরিচয়।
নব্য ধনীর নাম আবু ইউসুফ। এর অর্থ ইউসুফের বাপ। এই নাম তাদের মেনে নিতে অসুবিধা ছিল না, সমস্যা হল তার ইউসুফ নামে কোন পুত্রই নেই। একই সমস্যা দেখা দিয়েছে তার স্ত্রী উম্মে কুলসুমকে নিয়ে। উম্মে কুলসুম মানে কুলসুমের মা , অথচ কুলসুম নামে তার কোন মেয়ে নাই!
মেয়েকে নিয়ে আরেক সমস্যা! মেয়ের নাম জাহেরা বিনতে তাহেরা। যার অর্থ- তাহেরার মেয়ে জাহেরা, অথচ মায়ের নাম বলছে উম্মে কুলসুম। টানা হেঁচড়া পড়ে গেল দুই ছেলেকে নিয়ে।
একজনের নাম ইবনে মিজান (মিজানের পুত), আরেকজনের নাম ইবনে কামাল (কামালের পুত)। দুজন নিতান্তই আপন সহোদর। অথচ একজনের বাপ কামাল, আরেক জনের বাপের নাম মিজান। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার পুরাই মাথা আউলা অবস্থা! ক্ষেপে গিয়ে বললেন- ওই মিয়া, তোমাদের দেশে মাইয়ারাও চার বিয়া করে নাকি?
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৫