আমি সাধারণত শেষের দিকেই বইমেলায় যাই। এবার গেছি ২৩ তারিখ।সাথে জেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা দোস্ত রফিক। মেলায় আগেও গেছি, তবে এবারের অনুভুতি ভিন্ন। মেলায় আমার দু;টি বই এসেছে। (প্রবাসে বাংলাদেশি গুণীজন ও ক্ষুদে জিনিয়াসদের কথা) ৪টার সময় ঢুকেই প্রথম গেলাম, একাডেমী চত্তরে। সেখান থেকে কিছু বই কিনে সোজা সোহরাওয়ার্দি ।
প্রথমেই গেলাম দিব্যপ্রকাশের স্টলে। দেখলাম, 'ক্ষুদে জিনিয়াসদের কথা' বইটি শিশু কর্নার সহ তিন জায়গায় ডিসপ্লে করা হয়েছে। রফিক একটি বই হাতে নিয়ে সেলস ম্যানকে বলল, এই বইয়ের লিখক। সেলস ম্যান আগ্রহের সহিত হাত বাড়িয়ে দিল। জানালো, আপনার বইটি আমি দুই কপি কিনে ভাগ্নি আর ভাতিজাকে গিফট করেছি।
সে সবাইকে আমার আগমন জানান দিল। সবার মাঝে হালকা চাঞ্চল্য অনুভব করলাম। এখানে কি ম্যানেজার সাহেব আছেন জিজ্ঞেস করায় আরেকজন হাত বাড়িয়ে দিল, জানালো ম্যানেজার সাহেব মেলায় কখনো আসেন না। নিজের পরিচয় দিল দিব্য প্রকাশের মার্কেটিং ম্যানেজার বলে। এও জানালো আপনার ক্ষুদে জিনিয়াসদের কথা বইটি খুব চলছে। ধরে নিলাম লিখককে খুশি করার জন্য এরা সব লিখককেই এমত বলে থাকে।
ভিতরে বসলাম। সেখানে আগ থেকে একজন লেখিকা বসে ছিলেন। স্যারের কথা জিজ্ঞেস করলাম, জানালো- কিছুক্ষনের ভিতর চলে আসবেন। কিছু সময় পরে স্টল থেকে বেরিয়ে পড়লাম কর্নেল (অবঃ)খায়রুল আহসান ভাইএর খোঁজে। পাশের স্টল জাগৃতি প্রকাশনী থেকে উনার তৃতীয় বই বেরিয়েছে, উনার সেখানে থাকার কথা।
ইতোমধ্যে আমার সাথে যোগ দিয়েছেন সামহয়ার ইন ব্লগের সত্যেন্দ্র নাথ দত্ত ‘কি করি আজ ভেবে না পাই।‘ আরেকজন আমার কলেজ লাইফের বন্ধু নিউ ইয়র্ক প্রবাসি হুমায়ুন।
জাগৃতিতে খায়রুল আহসান ভাইকে পেলাম না। ৪/৫ বার খোঁজ করার পর স্টল থেকে একজন ভদ্র মহিলা বললেন, আপনাদের মনেহয় খুব বেশি প্রয়োজন, উনার নাম্বার নিন যোগাযোগ করুন।
ঘুরে ঘুরে প্রায় ৩৫০০ টাকার বই কিনে আবার দিব্য প্রকাশে ফিরে এলাম।
দেখি মইনুল আহসান সাবের স্যার স্টলে বসে আছেন। মার্কেটিং ম্যানেজার পরিচয় করিয়ে দিলে হ্যান্ডশেক করে ভিতরে আসতে বললেন।
কুশলাদি জিজ্ঞাসের পর জানালেন, ‘আপনার ব্যাপারে আজই ম্যানেজারের সাথে আলাপ হয়েছে, আপনাকে ফোন করার কথা। বিষয়টি হচ্ছে ক্ষুদে জিনিয়াসের আর বেশি কপি বাকি নাই। মার্চেই আমরা বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণে যাবো। আমি চাচ্ছিলাম দ্বিতীয় মুদ্রণে বইটি ৮০ পৃষ্ঠা থেকে উন্নিত করে ১০০ পৃষ্ঠা করতে। আপনি মার্চের ১৫ তারিখের ভিতর অতিরিক্ত ২০ পৃষ্ঠার পাণ্ডুলিপি পাঠিয়ে দিলে আমরা কাজটি দ্রুত শেষ করতে পারবো।''
স্যারের সাথে কিছুক্ষন হ্যাঁ ,হ্যু বলে আলাপ চালিয়ে গেলাম, বুঝলাম আমি ফ্রি হতে পারছিনা । তাই কিছু সময় স্টলে থেকে আবার বেরিয়ে পড়লাম। জম্পেশ আড্ডা আর পুচকা খেতে খেতে কখন যে ৮ টা বেজে গেছে খেয়াল করিনি। ৪ জন হাটতে হাটতে দোয়েল চত্তর। সেখানে আরেক রাউন্ড চা, সাথে অগ্নি সহযোগে জনপ্লেয়ার আন্ড বেন্সন হেজেস।
রাত ৯ টায় চেপে বসলাম গাড়িতে, বিদায় ঢাকা। বিদায় বই মেলা-২০১৭।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৭ রাত ৯:৪৪