আর কোন ভুমিকা না বাড়িয়ে, আপনাদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এ পর্বে আমরা চলে যাচ্ছি টাইগার সাফারি এবং লায়ন সাফারিতে। এই সাফারি শুরু হয় একটি খোলা ট্রেন (বাস কে টেনে ট্রেন বানানো হয়েছে ) ভ্রমন দিয়ে। গাইড সবার নাম ধরে ডেকে ডেকে ট্রেনে উঠায়।
ট্রেনটি চলতে শুরু করলে যাত্রা পথে পড়বে উটপাখি, ঘোড়ার পাল, ছাগলের দল, শুকরের পাল মানে সাফারি ভাবটা চলে আসা
ট্রেনটি এসে থামবে একটি গুহার সামনে নাম নিসিদ্ধ গুহা (Forbidden Cave)। এটি একটি কৃত্রিম ভাবে তৈরী গুহা। এখানে আসলে নানা ধরনের জন্তুকে ফরমালিন দিয়ে শুকিয়ে রাখা আছে। তবে যথারিতী ছাগলের প্রাধান্যতা একটু বেশি (এখানে মাঠে ঘাঠে ছাগলের অভাব, সব ছাগল দেখি এখানে)
গুহা থেকে বের হয়ে বিশ্রামাগার । ১০ মিনিটের বিরতি। আসলে গাড়ি মানে চলন্ত খাচার অপেক্ষা। এটি আসলে একটি জীপ। চতুর্দিকে এবং ছাদে শুধু তারজালি দেওয়া। উঠার আগে ১০০ পেসো দিতে হবে বাঘের খাবার মুরগির মাংস, ঐ খাবর না দেখালে নাকি বাঘ আসবে না, অগত্যা ১০০ পেসো দিতে হল।
চলতে চলতে হঠাৎ বাঘের দেখা পাওয়া গেল। ৩/৪ টা বাঘকে দেখা গেল ঝোপের আড়ালে, একটা বাঘ একেবারে রাস্তার পার্শ্বে যার পাশে আমাদের গাড়িটা থামলো। ডোরা কাটা বাঘ। গাইড কে নাম জিজ্ঞাসা করতেই বল্ল বেঙ্গল টাইগার। তাইতো বলি মামাকে এত চেনা চেনা লাগছে কেন? মুরগির মাংস দেখাতেই বাঘ মামা হামলে পড়ল। খাবরের আশায় লাফ দিয়ে ছাদে ও উঠে পড়ল।
বাঘ মামার লম্ফ জম্ফের পর আমরা চলে আসলাম। একই গাড়িতে আমারা এবার আসলাম সিংহ মামার এলাকায়। এখানে অবশ্য দেখলাম সিংহ মামা দেখি একা। অনেক বয়স। একটা জায়গায় ঠায় দাড়িয়ে। দেখে মনে হচ্ছিল মামা আমাদের অপেক্ষায় ছিলেন। যথারিতি চিকেন দেয়া হলো, মামা খেয়ে দেয়ে আবার দাড়িয়ে গেলেন। সিংহ মামার লম্ফ জম্ফ দেখা হলো না।
সিংহ মামার সাক্ষাৎ শেষে গাড়ি এসে থামল আবার বিশ্রামাগারে। এখান থেকে আবার সেই ট্রেন গাড়ি। এবার গন্তব্য বাঘের খামার। এখানে প্রায় ৩০/৪০ টি নানা জাতের, নানা বয়সের বাঘ। আমাদের বেঙ্গল টাইগার ও বার্মিজ টাইগার কেও দেখা হলো। এখানে তাদের প্রজনন গঠানো হয় এবং ফিলিপাইনের সকল চিড়িয়াখানায় এখান থেকে বাঘ সরবরাহ করা হয়।
এবারের গন্তব্য আদি ফিলিপিনোদের জীবন ও কালচার। এখানে তিন ধরনের নৃত্য দেখানো হয়। ঝড় এলে তারা কি ভাবে পূর্বাবাশ দিত, বানর নৃত্য, এবং শিকার নৃত্য।
এবার গন্তব্য কুমিরের আস্তানা (CROCO LOCO)। এখানে কুমিরের আস্তানার উপর ব্রীজ দিয়ে পার হতে হবে। লাঠির মাথায় সুতা দিয়ে মুরগি বেধে কুমিরকে খাওয়াতে পারবেন। (মুরগির পিছ ৫০ পেসো)।
তবে কুমিরের এখানে এই ছবিটি খুবই প্রতিকী। আমরা যে বলি কুমিরের মত হা করে ঘুমায়, তা প্রমানের জন্যই মনে হয় কুমিরের এই ফটো পোস।
কুমিরের আস্তানা শেষে এবার যাদুঘর (MUZOOUM)। এখানে প্রানিদের হাড় গোড়। যথারিতি ছাগলের কন্কালের দখলে বলা যায় পুরো যাদুঘর। বাঘ মামার ও ২টি কন্কাল আছে একটির নাম বেঙ্গল টাইগার, আরেকটি বার্মিজ টাইগার।
যাদুঘর থেকে বের হয়ে আবার সেই ট্রেন গাড়ি। যাত্রা যেখানে শুরু সেখানে শেষ। তবে আপনাকে নামিয়ে দেয়া হবে স্যুভেনিয়রের দোকানের সামনে। মোটামুটি প্রায় সব প্রানীর পুতুল আর টি শার্ট।
তবে এখানেই শেয নয়। আপনাকে অবাক করে দিয়ে আপনাকে একখানা সার্টিফিকেট দেয়া হবে, আপনার অভিযাত্রা সম্পন্ন করার জন্য।
পোস্ট শেষে আসুন এক ফিলিপিনো কর্তৃক তৈরীকৃত ইউটিউব ভিডিও দেখি। ১৫ মিনিটে মোটামুটি পুরো সাফারী।
ধন্যবাদ।
যারা প্রথম পর্ব পড়তে পারেন নি তাদের জন্য Part 1