somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবোল তাবোল হিজিবিজি ... ...

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ৮:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন ধরেই লিখব লিখব করেও লেখা হয়ে উঠছে না। শেষ পোস্ট লিখেছি সেই কবে! থট ব্লক বলে একটা কথা শুনেছিলাম, সেটাতেই কি আক্রান্ত হয়ে আছি? নিজের লেখায় পাঠক-প্রতিক্রিয়ার দৈন্য দেখে ভাবছিলাম, এ অবস্থা কেন। মানুষ টিপিক্যালি যা করে, সবসময় অন্যের দোষ খোঁজে, নিজেকে ভাবে ধোয়া তুলসী পাতা, আমি, একজন সাধারণ মানুষ তার থেকে খুব ব্যতিক্রম হতে পেরেছি কি? মনে হয় না।

আজ নিজের ব্যবচ্ছেদে নেমে পড়লাম। একটা কথা মানতেই হবে, বাস্তব জীবনে ব্যস্ততা যার যত বেশী, ভার্চুয়াল জগতে তার সময়ের তত আকাল। আর, একটা বিশাল কমিউনিটি ব্লগে যথেষ্ট সময় না দেয়া, যথেষ্ট ইন্টারঅ্যাকশনে না যাওয়া - একজন ব্লগারকে দীর্ঘ সময় পরেও মোটামুটি অচেনাই রেখে দেয়। ঘরকুণো লোক - বাস্তবে হোক কিম্বা ভার্চুয়াল, অশ্রুতই থেকে যায়।

মাঝে সামুটা বড্ড বেশী ক্যাচালসর্বস্ব হয়ে উঠছিল, এখন মনে হয় কিছুটা থিতু হয়েছে। প্রায়ই অনেককে আফসোস কিম্বা অভিযোগ করতে শুনি, আগের মত কোয়ালিটি পোস্ট এখন আর আসে না। এখানে একটু দ্বিমত। কোয়ালিটি পোস্ট বলতে যেরকম পোস্ট প্রত্যাশিত, সেরকম পোস্ট গুচ্ছাকারে আসবে - এমনটা আশা করাও হয়তো ঠিক না। পাঁচ দশটা সাধারণ মানের পোস্টের পর একটা ভাল পোস্ট - অনেকদিন মনে রাখার মত লেখা আশা করা যায়। হ্যাঁ, এটা ঠিক, প্রাপ্তি প্রত্যাশা অনুপাতে একটু কমই।

প্রথম যখন সামুর সম্পর্কে জেনেছিলাম, তখনও রেজি করাইনি, মাঝে মাঝে এক আধটু পড়তাম - চমৎকার বেশ কিছু লেখা পড়েছিলাম। এখনও ভাসা ভাসা মনে আছে। এরপর দীর্ঘ সময় ওয়াচে থাকাকালীন পরিবর্তনের হাওয়া টের পেলাম। যতদিনে সেফ হলাম, এখানে তখন তুমুল লঙ্কাকান্ড অবস্থা - এ ওর নামে পোস্ট, নর্দমার কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি, গালিগালাজ, স্প্যামিং, ব্লগ-প্রতারণা - সব মিলিয়ে, কেমন যেন অসুস্থ, দুর্বিষহ একটা পরিবেশ।

ব্লগে কি থাকবে আর কি না থাকবে, সেটা নির্ধারণ করার আমি কেউ নই। তবে হ্যাঁ, একজন সাধারণ, অপাংক্তেয় এবং প্রায় অচেনা একজন ব্লগার হলেও, অন্তত নিজের মতামত হয়তো ব্যক্ত করতে পারি, আর সেটা হল, বিজ্ঞাপন মার্কা পোস্ট নিরুৎসাহিত করা উচিৎ। অনলাইনে আয় কিম্বা ডেসটিনি কিম্বা এরকম আরও অনেক আবজাব - মনে হয় সংকলিত পাতার স্পেসের অপচয়।
তবে সামুকে এখন বিকল্প নিউজ মিডিয়া বললে ভুল হবে না। বেশ কিছু সাম্প্রতিক ইস্যুতে সংবাদ মাধ্যমের তাঁবেদারীবৃত্তি আর এর বিপরীতে ব্লগের বলিষ্ঠ ভূমিকায় সামুর ঔজ্জ্বল্য ছিল দৃষ্টিনন্দন।
এখানে থেকে আরো কিছু বিষয়ে উপলব্ধি হয়েছে। আমরা যারা ব্লগে লিখছি বা লিখতে শেখার চেষ্টা করছি, আমাদের অনেকের মাঝে, (সবার মাঝে নয় কিন্তু) তিনটি সমস্যা প্রকট। এক, এলিটিসম - এর বাংলা হিসেবে “আভিজাত্য” নয়, “উন্নাসিকতা”ই বেশী মানানসই। এই ‘মুই কি হনু রে’ মানসিকতার জন্য অনেকেই সমালোচনা সহজভাবে নিতে পারেন না, স্বাভাবিক গঠনমূলক আলোচনাও বিষাক্ত মনে হয় কারও কারও। দুই, জেনারালাইজেশন। গড়পড়তাভাবে দোষারোপ করে তালগাছবাদী মানসিকতাও অনেক তিক্ততার জন্ম দিয়েছে। এসব বেশী দেখা যায় নারীর বিরুদ্ধে, যেমন, কোথাও কোন এক মডেলের সংক্ষিপ্ত পোশাকের ছবি তুলে দিয়ে দাবী কিম্বা আহাজারি করা হয়, পুরো দেশের আপামর নারী সমাজ ঐ স্রোতের অনুগামী! তিন, এইটা আমার মধ্যেও দীর্ঘদিন ছিল - একটা ভুল ধারণা পোষণ করা যে, পোস্টে মন্তব্যের সংখ্যা বাড়া মানেই ব্লগীয় সেলিব্রিটি হয়ে যাওয়া। বরং, সংখ্যার চেয়ে মন্তব্যের মান আর বিষয়বস্তুই মুখ্য হওয়া উচিত। (এক্ষেত্রে আমি নিজে অবশ্য দরিদ্রতম, একদম ক্লিশে, আফসোস!)

এছাড়া আমরা অনেকেই খুব একটা কমফোর্ট জোনের বাইরে যেতে চাই না। নতুন অনেক ব্লগারের অনেক পোস্ট হয়তো অগভীর, চটুলতা সর্বস্ব কিম্বা অন্তঃস্বারশূন্য হতে পারে - কিন্তু এদের মধ্যে অনেকেই আবার অসাধারণ লিখেও ব্লগার-চক্ষুর অন্তরালেই থেকে যাচ্ছেন। পুরনো নামী ব্লগারদের মধ্যেই দেখা যায় আমাদের অনেকের বিচরণ সীমিত।

আরেকটা ব্যাপার দেখি, যেটা এলিটিসমের বিপরীত। এটা হল তৈলবৃত্তি। নিজের পোস্ট দেয়ার আগে পরেই শুধু অল্প সময়ের জন্য সমসাময়িক সব পোস্টে ধুমধাম হুমহাম করে, আবার হারিয়ে যাওয়া। আর এই সন হুমহামের মধ্যেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে মৌলিক চিন্তার প্রকাশ দেখা যায় না। “হুম”/ “ভাল লেগেছে”/ “পিলাচ” - এরকম দায়সারা কমেন্ট দিয়ে, অথবা অন্য কারও প্রাগুক্ত কমেন্ট হুবুহু কপি পেস্ট করে পোস্টদাতার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা! (অবশ্য এই পয়েন্টে আমার সাথে অনেকেরই দ্বিমত থাকতে পারে)

কি লিখতে কি লিখে বসে আছি কে জানে! পাঁচ মিনিট বা তারও কম সময়ের জন্য প্রথম পাতায় থাকা এই পোস্ট ক’জনের চোখে পড়বে কে জানে। তবু, যদি কেউ কষ্ট করে এতদূর এসে থাকেন, তাঁর জন্য একটা বিশাল ধন্যবাদ। আর একটা ছোট্ট খবর, ব্লগের এবং ব্লগের বাইরের বাঘা বাঘা সব লেখকদের অজস্র বইয়ের ভীড়ে, এবার আমারও একটা বই আসছে বইমেলায়। একটা উপন্যাস, নাম “পারভার্ট”। সামুতে এর অনেকগুলো পর্ব ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এটা পাওয়া যাবে শৈলী প্রকাশনের স্টলে। দাম ১৩০টাকা মাত্র।
যার ব্লগে লেখা তেমন কেউ বিনামূল্যেও পড়ে দেখেনি, তার লেখা কেউ বইমেলা থেকে পয়সা দিয়ে কিনে পড়বে - এমন আশা করার ধৃষ্টতা আমার নেই। অযত্ন আর উপেক্ষাই আমার সম্বল হোক। অন্তত এটুক শুভকামনা চাইব, লেখার উদ্যমটা যেন কখনো হারিয়ে না ফেলি।

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×