কতদিন কাঁদতে পারিনা।
ব্রহ্মতালুতে আগুন জ্বলছে। নিজের একলা ঘরে, শূন্য ঘরে, নিজের একাকীত্বের সাথে, ঘিরে থাকা নীরবতার সাথে, নিজের সাথে একঘেঁয়ে কথোপকথনের ক্লান্তির সাথে শুধু ঘুরপাক খেতে খেতে, দলা পাকিয়ে ওঠা বিষন্নতায়, স্মৃতিকাতরতায় পোড়া প্লাস্টিকের মত শুধুই দুমড়ে মুচড়ে যেতে থাকা। কয়েলের জমে থাকা ধোঁয়ার চেয়ে, সাইনাসে গেঁড়ে বসা শ্লেষ্মার চেয়ে ভাবনা আর কাগজ কলমের মাঝখানটায় জমাট বেঁধে কুঁচকে গিয়ে থ্যাবড়ানো থ্যাতলানো শব্দগুলোই পাঁজরের ওঠানামাকে কঠিন থেকে কঠিনতর করে চলেছে। শুধু একটু কিছু বলার ইচ্ছে, একটু হাল্কা হওয়ার বাসনারা কখনো বদ্ধ ঘরের চারদেয়ালে, কখনো ঝকঝকে মনিটরে বিনোদনের লাস্যময়ী উপাদানে, কখনো পিছুটানের স্রোতে, পুরনো লেখালেখির আস্তাকুঁড়েতে অস্থির কড়া নাড়ে।
কেউ নেই।
কোথাও কেউ নেই।
বুকে বালিশ চেপে ধরে উপুড় হয়ে থাকা, কাগজে কলমের ভবঘুরে হয়ে ওঠা, গ্রীলের নকশা গলে হামলে পড়া অন্ধকারে বোধশূন্য তাকিয়ে থাকা, কথাশূন্য সুরসর্বস্ব হিন্দী গানের উতোর চাপানো – জান্তব নখের অত সহস্র আকুল আঁচড়ও চেপে ধরা দেয়ালটায় একরত্তি ছিদ্র খুঁজে পায়না; ভাল না থাকার অর্বাচীন নেশায় মাতাল হতে হতে, নৈঃশব্দের প্রতিধ্বনি খোঁজার মত নির্বোধ হতে হতে, ফিল্টারের উষ্ণ চুম্বনে আপ্লুত হবার অপচেষ্টায় ব্যর্থ হতে হতে, মনে হয়, আরেকবার, টালমাটাল পায়ে চলতে শেখা সময়গুলোর মত, নিঃসঙ্কোচে, বাঁধাহীন প্রচন্ডতায়, প্রশ্নহীন সাবলীলতায়, আরেকবার কাঁদতে।
কান্নাকে কখনো তো এত প্রার্থিত মনে হয়নি!
শূন্যতায় নির্বাসন এত ভয়াবহ কেন? চোখ দু’টো থেকে শুধু স্বপ্নরাই হারায়নি!
ঐ ক’ফোঁটা ছাড়া, আর কি-ই বা ছিল এই উড়নচন্ডী আত্মমগ্নতার?