পৌষের হিম শীতল হাওয়া। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। রোদের দেখা পাওয়া কষ্টসাধ্য। ঝরাপাতার বিমর্ষ চেহারা। সুন্দর আকাশটাও গম্ভীর ভাব নিয়ে বসে আছে। ধরার বুকে এক নির্মল বেদনার আর্তনাদ। সব পাখিদের গোমড়া মুখ। যেন ক্ষণিকে মহাপ্রলয় ঘটে যাবে। সব কিছু ভেঙেচোড়ে চুর্মার হয়ে যাবে একাকার।
তবুও পৃথিবীর প্রাণীগুলো সুখে আছে। সুখ-শান্তির প্রাচীর গড়ে তুলতেছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু এত কিছুর পরও। সংঘাত, হানাহানি, হিংসাত্মক নৈরাজ্য সৃষ্টি হয় প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে। কেন! কেন! কেন?
এমনি প্রশ্নের ব্যাখ্যা খুঁজে বেড়াই চায়ের দোকানী সহজসরল আনিস মিয়া। এলাকার লোকজন তার দোকানে আসে। বসে। চা খাই। সিগারেট কিনে। কিছুক্ষণ বসে টেলিভিশন দেখে। আনিস মিয়ার দোকানে সারাদিন খবর আর চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপন চলে। দুপুর বেলা বাংলা ছায়াছবির দুমদাম চলতে থাকে। কিছু কিছু সময় জীবজন্তুর চ্যানেল চলে। লোকে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে হা করে টিভির দিকে তাকিয়ে থাকে। এভাবেই দিন যায় আনিস মিয়ার।
আনিস মিয়া টিভিতে সব কিছু বুঝে না। দেখে তাকে শুধু। আর চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে বেচাকেনা করে। টিভি টাভি থাকলে বেচাকেনা বাড়ে দোকানের। ইহাতে ভারতি লাভ যেন দোকানের। তার সংসারে তার বউ। বিয়ে করে ছয় বছর হয়ে গেল বাচ্চা কাচ্চা নাই। আনিস মিয়ার সংসারে। দোকানের পিছনে ছোট্ট একটা রুমেই আনিস মিয়ার সংসার দিব্বি সুখে কেটে যাচ্ছে।
কিন্তু আনিস মিয়া সুখে আসলে কি আছেই। দেশে নির্বাচনী হাওয়া বয়ে বেড়াচ্ছে। লোকেমুখে নির্বাচনের উল্লাস। আনিস মিয়া দোকান থেকে দুপা বের করেনা। বাহিরে তার বউ সব কাজ করে। দোকানের কিছু প্রয়োজন হলে বউটাই নিয়ে আসে।
দেশে নির্বাচন আসলেই সব পোলাপান রাজনীতির চামচা হয়ে যায়। নেতার পিছনে লেগে থাকে। নেতার নামে দোকানে দোকানে গিয়া টাকাকড়ি না দিয়ে খেয়ে আসে। আনিস মিয়ার দোকানও এদের হাত থেকে রেহাই পাইনা।
এভাবেই কি আনিস মিয়ার সুখে থাকা হই আর। তার দোকানের সামনেই রাজনীতির মিছিল মিটিং। মারামারি। হাতাহাতি। কিংবা মাইকে একে অপরের উপর গালাগালি। কেন! কেন! কেন?
পুনশ্চঃ আনিস মিয়া দোকান থেকে কেন পা বাহির করে না। তা অন্য একদিন বলব।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৯