যখন প্লেন নেদারল্যান্ড এর সিপূল এয়ারপোর্ট এ ল্যান্ড করেছে , ইমিগ্রেশন এর কাজ শেষ করে বাইরে এসে সুন্দর গুছানো এক শহর দেখে মন ভরে গেল।আমাস্টারডাম এর এই এয়ারপোর্ট সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১১ ফিট নিচে অবস্থিত। এয়ারপোর্ট এর বাইরেই দেখা পেয়ে গেলাম নেদারল্যান্ড এর বিখ্যাত টিউলিপ ফুলের।
নেদারল্যান্ড এর আমাস্টারডাম যার চার ভাগের এক ভাগ নদী, নালা আর খালবিলে ভরা। এক সময় বেশির ভাগ সময় পানিতেই ডুবে থাকতো আমাস্টারডাম, তখন শহরের অ্যামস্টেল নদীতে বিশাল এক ড্যাম বানানো হয়। এই ড্যাম থেকে শহরের নাম হয় আমাস্টারডাম ।পানি আটকানোর জন্য পুরা শহরে তৈরি করা হয় ১৬৫টি ক্যানেল বা খাল। ৯০টি ছোটবড় দ্বীপ রয়েছে শহরে। আর এগুলি যুক্ত রয়েছে প্রায় ১৫০০সেতুর মাধ্যমে। এজন্য আমাস্টারডামকে বলা হয় সিটি অফ ক্যানেল।বেশির ভাগ সেতুর নিচ দিয়ে যখন জাহাজ চলাচল করে তখন সেতু দুইভাগ হয়ে উপরে উঠে যায়, এভাবেই সিস্টেম করা। ক্যানেলের উপর আছে অনেক বোট হাউজ।
যে শহরে মানুষের চেয়ে সাইকেল বেশি
যখন সেতুর নিচ দিয়ে কোন জাহাজ পার হতে যায় তখন সেতু এভাবেই খাড়া হয়ে উপরে উঠে যায়। সেতুর উপর বাস, ট্রাম সবই চলাচল করে।
ডাচরা পানির উপর জাগিয়ে তুলেছিল তাদের শহর। কথিত আছে ডাচরা বলে ‘ গড পুরা দুনিয়া সৃষ্টি করেছে আর আমাষ্টারডাম সৃষ্টি করেছে ডাচরা’।প্রায় ছয় হাজার ৮০০ ঘরবাড়ি রয়েছে শহরটিতে। এরমধ্যে ষোড়শ থেকে বিংশ শতাব্দীর তৈরি বাড়িঘর যেমন আছে তেমনি রয়েছে অত্যাধুনিক স্থাপনা। আমরা হোটেলে পৌঁছে ব্যাগ রেখেই বের হয়ে গেলাম শহরের একটা ধারনা নিতে। শহরের ডামরাক ট্যুরিষ্টদের জন্য আছে নানা ট্যুর অফিস। ওখান থেকে ট্যুরিষ্ট স্পটের সমস্ত তথ্য পাওয়া যায়। কোন স্পটে কিভাবে যেতে হয় তারাই সব ব্যবস্থা করে দেয়। পরেরদিনের জন্য সিটি ট্যুর বাস আর বোটে ক্যানেল ট্যুরের টিকেট কেটে বেড়িয়ে পড়লাম হাটতে।
।
পর্যটকদের আমাস্টারডাম শহর ঘুরানোর জন্য আছে এই সিটি ট্যুর বাস আর সিটি ট্যুর বোট
সাইকেলের জন্য আমাষ্টারডাম বিখ্যাত। একে সাইকেলের শহরও বলা হয়। এমন কেউ নেউ যার সাইকেল নেই। মানুষের চেয়ে সাইকেল বেশি। এমনকি প্রেসিডেন্ট ও সাইকেল চালিয়ে অফিস করেন। সাইকেলের জন্য আছে আলাদা রাস্তা। সব হোটেলে, সব জায়গায় সাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়।পুরা শহর দেখতে হলে পায়ে হেটে, ট্রামে, বোটে দেখা যায়।
পানির উপর বাড়ি
।
সিটি সাইট সিয়িং হপ অব হপ অফ বাসে এবং বোটেও পুরা শহর দেখা যায়। বাসে বা বোটে নানা স্পটে নামিয়ে দিবে, ঘুরে ফিরে আবার একই টিকেটে পরের বাসে বা বোটে উঠে পড়া যায়। শহরের আছে প্রায় ৫০টি যাদুঘর। যাদুঘর দেখতে পায়ে হেটে, ট্রামে, বাসে, বোটে সব ভাবেই যাওয়া যায়। শহরে ঘুরার সময় আমরা একটা হালাল খাবারের রেষ্টোরেন্ট পেয়ে গেলাম।ওখানেই আমরা প্রতিদিন রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে ফিরতাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৫৯