সর্বময় ক্ষমতার প্রতিভু নির্বাচন কমিশনের ওসিয়ত............
দায়িত্বে অবহেলার প্রমান পাওয়া গেলে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা যে প্রতিষ্ঠানের এমপ্লয়ী হউন না কেন তাঁর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ট সচিবালয়ের এবং প্রাপ্ত শাস্তির নমূনা হিসেবে জানানো হয় চাকুরীচ্যূতি থেকে শুরু করে ইনক্রিমেন্ট হেল্ডআপ, প্রমোশন হেল্ডআপ, জেল, জরিমানা ইত্যাদি ইত্যাদি প্রযোজ্য।
বিধানমতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের জন্য কোন ট্রান্সপোর্ট সুবিধা প্রযোজ্য নয়। তিনি কিভাবে তার দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় পৌঁছবেন সেটা উক্ত সচিবালয়ের বিষয় নয়। কর্মকর্তা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যবস্থায় উক্ত সমস্যার সমাধান করবেন । অথচ গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, রাজপথে কোন মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, সিএজি ইত্যাদি চলতে দেয়া যাবেনা।
কোন কর্মকর্তাকে নির্বাচন কমিশন থেকে কোন ষ্টিকারও দেয়া যাবেনা, যেটা ব্যবহার করে তিনি ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহার করবেন।
অবশ্যই ভোট গ্রহণের আগের রাতে কর্মকর্তা দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রে অবস্থান করবেন। কিভাবে অবস্থান করবেন সেটা সম্পূর্ণ কর্মকর্তার একান্ত বিষয়। যদি কোন কারনে কোন কর্মকর্তা উক্ত কেন্দ্রের আশে পাশে কোন দূর্ঘটনার শিকার হন তবে সংশ্লিষ্ট সচিবালয় কোন প্রকার সুবিধা দিতে অপারগ থাকবেন। ইতোপূর্বে দায়িত্ব পালনে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হলে উক্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট সচিবালয় থেকে আর্থিক বা অন্য কোন সুবিধা প্রাপ্ত হননি। এমন নির্মম উদাহরণ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আতংকে জমিয়ে দিলেও কর্তৃপক্ষ থেকে কোন সাড়া পাওয়ার শূণ্য সম্ভাবনাকে মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে।
কিভাবে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীদের আবদার সামলাবেন সেটাও আপনার বিষয় কিন্তু ভোট গ্রহণ বিশুদ্ধ হওয়া চাই।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে হতে হবে এমন চৌকশ যাতে সাপ এবং লাঠি উভয়ের সাথে সখ্যতা বজায় থাকে।
রিটার্নিং অফিসারের মোবাইলে সহজবোধ্য উত্তর ভেসে আসে, দয়া করে কোন অমুলক দাবী করে বিব্রত করবেন না; আপনার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুণ। (বেচারা স্যন্ডউইচ!)
এবারে আসা যাক, অতি ক্ষুদ্র সময়ের জন্য সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ভোটারের অভিযোগনামা.....
লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষারত ভোটারের অত্যুক্তি, অফিসার ভোট গ্রহণ কক্ষের ভিতরে বসে কি করে? এখন তো সবকিছু মেশিনে হইবো, এত সময় লাগেনি?
সরকারের দালাল!
আরে, আগের রাইতে বইস্যা কাম সাইরা রাখছে!
আরে, ট্যাকা খাইছে!
ভাই কত পাইলেন?
গোপন কক্ষের ভিতর থেকে উচ্চারণ আপা বাত্তি তো জ্বলছে কিন্তু নিভাইতে পারিনা?
আপা মেশিন তো জ্বলে না, এমন জোরে প্রেস করেছে যে ব্যলট ইউনিট হ্যাং..
ব্যলট ইউনিটের ক্যাবল খুলে ফেলেছে!
(মক ভোটিং এবং ডেমো ভোটিং এ সময় নস্ট করতে চায়নি যারা) একটি ব্যলট ইউনিটে ক্রমাগত প্রেস করেই চলেছে কিন্তু কন্ট্রোল ইউনিটে অপেক্ষারত অফিসার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার ম্যসেজ না পেয়ে সম্মুখের জনস্রোতের স্ল্যাং হজম করে যাচ্ছেন!
ফিংগার প্রিন্ট মিলছে না, স্যার আপনের তো ১% ক্ষমতা আছে সেইডারে ৫% কইরা দ্যান (মামু বাড়ির আবদার)!
আমার এনআইডি আমার ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয় না আবার অফিসার স্যার টিপ দিলে নেয় ক্যা? গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজতে থাকে।
অফিসার মহিলা ভোটারের আঙ্গুল এমনে ধরছে ক্যা, ব্যডায় মনে কয় লুইচ্চ্যা. তর ঘরে কি মা, বইন নাই?
চার আঙ্গুলের ছাপ চারবার গ্রহণ করার পরও এজেন্টের আবদার স্যার আবারও ফিঙ্গার প্রিন্ট নেন।
ভোটারকে সাদা আর সবুজ বাটনের ব্যবহার শেখাতে শেখাতে সাদা আর সবুজ বাটনের ওড়াউড়ি চলতে থাকে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার স্নায়ূজুড়ে।
সই করতে পারি তয় টিপ সই নেন। আমি নাম সই দিমু না!
ভোটারের স্বাক্ষর আগে নিলেন ক্যন?
ভোটারের স্বাক্ষর পরে নেন ক্যন?
ভাই বয়ষ্ক মানুষ আরেকবার বুঝাইয়া কন!
স্যার, একটু ভিতরে আহেন, পারতাছি না! (সর্বনাশা আবদার; তখন ভোটারের কাছে কড়জোরে মিনতি করতে হয় আমার চাকরি টা খাইয়েন না) ।
সকল হুমকি, আতংক, কলঙ্ক সম্পন্ন করে ঢাকা দক্ষিণের শেষ প্রান্ত থেকে উত্তরের শেষ প্রান্তকে গন্তব্য জ্ঞান করে রওনা হবার পর বিরান ভূমিতে কতিপয় জরুরী নির্গমনে ব্যস্ত নাগরিক দলের সম্মুখে একমাত্র রিক্সা ছাড়া সকল বিকল্পের পথ অবরুদ্ধ । হঠাৎ আলাদিনের চেরাগের সদৃশ রং ওঠা, মরচে পড়া হাঁপানি রুগির মত হাঁপাতে থাকা একটি গণপরিবহণের দেখা পাওয়ার পর যাত্রীদলের উদ্দেশ্যে হেল্পারের জোরালো আহবান, তাড়াতাড়ি উঠেন; পিছনে জরিমানা দিয়া আইছি আবার জরিমানা দিতে হইতে পারে । জয়তু বাবা জরিমানা তবুও তোর দেখা পাইলাম, আসনের প্রশ্ন নৈবচ, আপাতত হু-হু বাতাস ফুঁড়ে ছুটে চল, যেন বা তুই এক প্রিয় সাদা ঘোড়া.....
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৫