বহুদিন পর তোমাকে পত্র লিখতে ইচ্ছে হলো খুব । ফেলে আসা জীবনের বিচিত্র কারুকার্যে পৌরানিক উপাখ্যানের মতন তুমিও বড্ড বেশী জীবন্ত হয়ে আছো, সে কথা তুমি না মানলেও ঠিক ঠিক জানো !
জানো, বঙ্গদেশে এখন বর্ষামঙ্গল উৎসব । আকাশে ঠমকে ঠমকে গর্জে ওঠে মেঘ, তার অনির্দিষ্ট নির্দেশে ভিজে যায় নগরের সবথেকে উঁচু ভবন, বন্দরে ভেড়ানো দূরগামী জাহাজ, গ্রামের জাঁহাবাজ কিশোর, ভিজে যায় চুন টানা দেয়াল, দেয়ালে জমে থাকা শেওলা, হালের বলদ-চাষের জমিন; জেগে উঠছে মরে যাওয়া ডোবা, স্থির দিঘীর টলটলে জল, ধ্যানমগ্ন সাধু…. । নগরের নর্দমায় ডেকে উঠছে ব্যাঙ, কিছু জোনাক এবং ঝিঝি চলে আসে শহরে তাদের নিজস্ব গুঞ্জনে রাঙ্গিয়ে দিতে । অমন মায়ারাজ্যের অবাক মোহনীয় যাদুতে খুব বেশী মনে পড়ে তোমাকে ! অথচ মেঘদূত, শর্ত আরোপিত সম্পর্কের বেড়াজালে মন:বৈকালিক অনুভূতিগুলোকে কখনো কখনো ভোঁতা করে রাখা অনিবার্য হয়ে যায়; যা আমরা করে থাকি প্রায়শ:ই !!
তোমার পাশ্চাত্যের আকাশেও কি মেঘের অমন দেমাগ দেখে চমকে ওঠো তুমি ? বৃষ্টিমাখা প্রাচীন বাতাসের ঘ্রানে আজও কি খুঁজে পাও পশ্চাতে ফেলে যাওয়া কোন এক দেশালকে ! এই আকাশ, আকাশের ওপারে আরেক আকাশ সেথায় অমনতর নি:স্ব রেখে গেলে, একবারও মন কাঁদেনি তোমার !! যদিও সম্পর্কের প্রচ্ছদে আজ আমরা শিরোনামহীন । জানো মেঘদূত, জীবন সময়ে সময়ে দু:খকেও তীব্র মায়ায় আঁকড়ে ধরে তখন দু:খগুলো তাকে ছেড়ে আর কোথাও যেতে চায়না, আমিও কখন-কেমন করে যেন সেই মায়া হয়েই রইলাম !!
জানি, জীবনে এগিয়ে যাবার দৌড় -এ তুমি অবশেষে বিজয়ী একনায়ক । শব্দের দেয়ালজুড়ে অক্ষর সাজিয়ে অনুভবের পরিপূর্ণ বিশুদ্ধতায় তোমাকে অভিবাদন । ভালো থেকো, ভালো থাকার সকল আয়োজন তোমার স্বার্থক হয়ে উঠুক এই প্রার্থনা ।
ইতি
বৃত্তগ্রস্থ দেশাল
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:২২