প্রথমে ঠিক করে নিন আপনি কোন প্রকারের হজ করবেন এবং জেনে নিন আপনার প্রথম গন্তব্যস্থল কোথায়। (প্রথমে মক্কা না মদীনায় যাবেন)
আপনার গন্তব্যানুসারে যাত্রার প্রস্তুতি নিন। (ধরে নিচ্ছি আপনি প্রথমে মক্কায় যাবেন)
বেশি মালামাল নিয়ে আপনার বোঝা ভারী করবেন না, আবার কম নিয়ে অপ্রস্তুতও হবেন না।
পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেজন্য আপনার পাসপোর্টের ফটোকপি নোটারি করে নিন এবং বিমানের টিকেট ও মেডিকেল সার্টিফিকেটের ফটোকপি করে নিন। বাসায়ও এর কপি রেখে যান।
অতিরিক্ত ১০ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও ১০ কপি স্ট্যাম্প সাইজের রঙ্গিন ছবি সঙ্গে নিন।
মজবুত চাকাওয়ালা মাঝারি বা বড় আকারের ১টি ব্যাগ/লাগেজ সঙ্গে নিবেন।
মুল্যবান জিনিসপত্র (টাকা, টিকেট, পাসপোর্ট ইত্যাদি) রাখার জন্য ১টি কোমর/কাঁধ/সৈনিক ব্যাগ নিন।
সালাতের মুসাল্লা বা কাপড়, কাপড় শুকানো দড়ি ও ব্যাগ বাঁধার জন্য কিছু ছোট দড়ি সঙ্গে রাখুন।
পড়ার জন্য ছোট আকারের কুরআন মাজীদ ও বইপত্র এবং লোকেশন ম্যাপ সঙ্গে রাখুন।
যোগাযোগ এর জন্য সাধারণ মোবাইল অথবা এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন সঙ্গে থাকলে ভালো হয়।
দুই জোড়া করে চশমা ও কোমল স্লিপার সেন্ডেল এবং এগুলো রাখার জন্য ছোট পাতলা কাপড়ের একটি ব্যাগ।
রোদ থেকে বাঁচার জন্য ছোট সাদা বা বিশেষ রঙের ছাতা অথবা ক্যাপ।
পশু যবেহ (হাদী) বা ফিদিয়ার জন্য ৫০০-৬০০ সৌদি রিয়াল আলাদা করে রাখতে ভুলবেন না।
ব্যক্তিগত ব্যবহারের জিনিসপত্র: ব্রাশ, পেস্ট, টয়লেট পেপার, আয়না, চিরুনি, তেল, সাবান, তোয়ালে, শ্যাম্পু, নোটবুক, পারফিউম, ভ্যাসলিন, লোশন ও ডিটারজেন্ট ইত্যাদি সাথে নিন। তবে ইহরাম অবস্থায় ব্যবহার করার জন্য সেসব প্রসাধনী সুগন্ধহীন হতে হবে।
দুইটি ছোট বেডশিট ও একটি ফোলানো বালিশ, হালকা চাদর, পেষ্ট, গ্লাস, চামচ, টর্চ লাইট, বাথরুম সুগন্ধি, মুখোশ, রুমাল ও কাপড় হ্যাঙার প্রয়োজন মনে করলে সাথে নিন।
একটি দেশের পতাকা, এলার্ম ঘড়ি/হাত ঘড়ি, রোদ চশমা, মার্কার পেন।
পর্যাপ্ত ওষুধপত্র, কিছু দরকারি এন্টিবায়োটিক, ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুসারে ভ্রমণের জন্য দরকারি কিছু ওষুধ।
ব্যাগের নিরাপত্তার জন্য সঙ্গে ছোট আকারের তালা-চাবি নিন এবং কিছু পলিথিন ব্যাগও নিন।
দরকারি জিনিসপত্র (টাকা, টিকেট, পাসপোর্ট, হজের পরিচয়পত্র, ক্রেডিট কার্ড) সবসময় হাতের কাছে অথবা নিরাপদ স্থানে রাখবেন।
সঙ্গে কিছু বাংলাদেশী টাকাও রাখবেন।
একটি সাধারণ পরামর্শ হলো : আপনার নাম, পাসপোর্ট নম্বর, হজ পরিচয়পত্র নম্বর, যোগাযোগের মোবাইল অথবা ফোন নম্বর, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ও নং, হোটেলের নাম ও ঠিকানা, যে কোনো নিকট আত্মীয়ের নাম ও ঠিকানা ও মুয়াল্লিম নং আপনার সকল ব্যাগে ইংরেজিতে লিখে রাখবেন।
কিছু শুকনো খাবার যেমন-চিড়া, গুড়, বিস্কুট, বাদাম, ড্রাই কেক, ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন।
হজে যাওয়ার সময় আপনার মালামালের একটি তালিকা করুন ও তালিকা চেক করুন।
হজে যাওয়ার সময় আপনার বড় লাগেজের আদর্শ ওজন হবে ৮ থেকে ১০ কেজি।
শেষ কথা হলো; হজে যাওয়ার সময় অবশ্যই সূরা-আল বাকারা-এর ১৯৭ নং আয়াতকে সাথে ব্যাগে নিয়ে নয় বরং অন্তরে করে নিয়ে যাবেন!
[পুরুষদের জন্য]
ইহরামের জন্য দুই সেট সাদা কাপড়।
ইহরামের কাপড় বাধার জন্য কোমর বেল্ট।
মাথা মুড়ানোর জন্য ১/২টি রেজার অথবা ব্লেড। তবে তা কোনোক্রমেই হাতের ব্যাগে রাখবেন না।
উপযুক্ত ও আরামদায়ক: প্যান্ট, শার্ট, ট্রাউজার, লুঙ্গি, টি-শার্ট, আন্ডারওয়্যার, পাঞ্জাবি, স্যান্ডেল, মোজা, জুতা, টুপি ইত্যাদি।
[মহিলাদের জন্য]
পরিষ্কার ও আরামদায়ক সালওয়ার-কামিজ, স্কার্ফ, হিজাব।
পুরো যাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত কাপড়।
লেডিস ন্যাপকিন, সেফটি পিন, কেঁচি, টিস্যু, স্যান্ডেল, মোজা ও জুতা ইত্যাদি।
❧ হজের সময় যেসব পরিহার করবেন ❧
টিনের ট্রাঙ্ক, ভারী স্যুটকেস, ভারী কম্বল ও পানির বালতি ইত্যাদি সাথে নেওয়া ঠিক হবে না।
ক্যাসেট অথবা সিডি সঙ্গে নিবেন না। কারণ, এর জন্য ইমিগ্রেশন চেক করতে পারে।
পচনশীল অথবা গলে যেতে পারে এমন খাবার নিবেন না। যেমন- ফল, চকলেট, দুধ ইত্যাদি।
পুরুষরা সিগারেট, স্বর্ণের আংটি, স্বর্ণের চেইন (সবই হারাম) সঙ্গে নিবেন না।
মহিলারা ভারী অলঙ্কার সঙ্গে নিবেন না।
শরীরে তাবিজ, কবজ ও ফিতা ইত্যাদি বাঁধা থাকলে তা খুলে ফেলে শির্ক মুক্ত হয়ে যান। কারণ শির্ক ইবাদত কবুল হওয়ার অন্তরায়!
সঙ্গে ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা সাথে না নেওয়া ভালো। কারণ, এতে আপনার ইবাদতের মনসংযোগ নষ্ট হবে।
নখ কাটার মেশিন, সুই-সুতা, কেঁচি, চাকু ইত্যাদি সব সময় মেইন বড় লাগেজে রাখবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৩