শৈশবের ভালবাসা যে এভাবে উঁকি দিবে তা ভাবতে পারিনি। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় যে মেয়েটির প্রতি প্রচন্ড আকর্ষন অনুভব করতাম, যার সামনে দাড়ালে হাত পা কাঁপতে থাকতো, গলা শুকিয়ে যেত ফলে আমতা আমতা করতাম, যাকে একবার দেখলে কয়েকটা রাত নির্ঘুম অস্থিরতায় কাটতো। যখনই ভালবাসার কথাটা বলতে চেয়েছি তখনই তার হাসির ছোবলে বোবা হয়েছি। অবশেষে বলবো বলবো করেও আর বলা হয়নি। এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করলাম; আর সে ভালো রেজাল্ট করে শহরে চলে গেল। পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থাও দিনের পর দিন খারাপ হতে লাগল। নিজেকেই সংসার দেখাশুনা করতে হয়। মা আর খালা ছাড়া কেউ নেই। চারিদিকে শুধুই ব্যর্থতা; ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। কয়েক মাস অগোছালো জীবনযাপনে পার করেছি। খালা এসে খুব বুঝাত। অবশেষে আবার সংসার, পড়াশোনায় মনোযোগ দিলাম। এরপর থেকে পড়াশোনায় আর কখনো ফেল মারি নি । সময়ের আবর্তে সব ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে নতুনভাবে জীবন শুরু করেছি। সোনার হরিণ চাকুরীর দেখাও পেয়েছি। বাড়িঘর, জমি জমা সবই আজ সম্মানজনক। বিয়ের জন্য সেই খালা পাত্রী দেখাও শুরু করেছেন। হটাৎ বৃষ্টির মত তার সাথে দেখা হয়ে গেল। তার সাথে দেখা হওয়ার পর বাসায় এসে এই পোস্টটা লিখে ফেললাম। মাঝখানে অনেক বছর চলে গেছে..........কিন্তু তাকে দেখার পর আমার সেই আবেগ,ভালবাসার কোনই পরিবর্তন হয়নি। আজও হাত পা কাঁপছিল, আজও গলা শুকিয়ে গিয়েছিল, আজও ভালবাসি কথাটা বলতে যেয়ে তার হাসির ছোবলে বোবা হয়েছি। সে হাসছে আর আমি কলার গাছের মত দাড়িয়ে শুধু দেখছি; আরও দেখেছি একটু পর তার স্বামিকে নিয়ে চলে যাওয়ার দৃশ্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০০