> মেয়েদের পিরিয়ডের সাথে যেসব পাকনা গাধাবাজ পোলাপাইন/ বুইড়ারা স্বপ্নদোষ কে এক করে ফেলছেন, তারা বলবেন কি? কি করে এটা এক হয়? কতটা গাধামি আর নোংরামি থাকলে আপনারা পুরুষেরা ( কিছু) নিজের জন্ম যেখান থেকে হয় সেটাকে নিয়ে হাসি তামাশা করেন? জীবনে একবার যদি কোন পুরুষের মাত্র ৩ দিনের ব্যথাযুক্ত পিরিয়ড কেমন হয় সেটা নিজ শরীর থেকে জানার সুযোগ থাকতো তাহলে সেইসব পুরুষেরা ব্যথা না শুধুমাত্র পিরিয়ডের রক্ত দেখলেই বেহুশ হইতো! ব্যথার দিকে গেলাম না আর! আর আপনারা কিছু মেয়ের পিরিয়ডকালীন সচেতনতামূলক পোস্ট আর প্যাডের পিক দেইখা নিজেদের স্বপ্নদোষের কথা সুরসুরি দিয়ে বলতেছেন এরপর পিরিয়ডের সাথে হাগুকে এক করে মিশাইতেছেন! আরে গাধাবাজরা পিরিয়ড সুরসুরির জিনিস না এইটা তোদের জন্মের ইতিহাস !
> এবার আসি আসল কথায়- পিরিয়ডকালীন সচেতনতা কিংবা পিরিয়ড যে একটা লুকাছাপার জিনিস নয়, পিরিয়ড নিয়ে যে এখনো কিছু কুসংস্কার আছে এইসব নানা হেন ত্যান ট্যাবু ভাঙ্গতে কেউ কেউ ( কিছু মেয়ে) রক্তমাখা প্যাডের ছবি, প্যাডের প্যাকেট নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে! আর তাই দেইখা পুরুষেরা হাগুর ছবি পোস্ট করছে/ কন্ডমের ছবি পোস্ট করছে, মেয়েদের প্যাড কিনতে দোকানে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় তাই দেইখা ছেলেরা কন্ডম কেনার লজ্জার কথা বলছে! হাউ ফানি ইয়ার! না আমি রক্তমাখা প্যাডের ছবি দেয়াকে সচেতনতার জন্য সাপোর্ট করছি না! কিন্তু পিরিয়ডকালীন সচেতনতার যে প্রয়োজন আছে এটার সাপোর্ট করছি! মেয়েদের পিরিয়ড নিয়ে যে হাসি তামাশা পুরুষেরা এখনো করে সেটার প্রতিবাদ করছি! পিরিয়ড যে একটা ন্যাচারাল ব্যাপার এবং কষ্টদায়ক সেটা বোঝার আহ্বান করছি সেইসব গাধাবাজদের! এখনো যে গ্রামাঞ্চলে মেয়েরা পুরান কাপড় দিয়ে পিরিয়ডকালীন সময় পার করে, এসময় যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা দরকার, সমস্যা হলে কিছু ব্যবস্থা নেয়া দরকার সেটার ব্যাপারে জোরালো সচেতনতার কিংবা আন্দোলনের দাবী করছি! কত অসচ্ছল পরিবারের মেয়েরা প্যাড ব্যবহার করে না, করতে পারে না! এদের জন্য কিছু করা হোক এটা চাইছি! আর এসব নিয়ে যদি কেউ সচেতনতামূলক পোস্ট দেয় তাতে পুরুষের প্রব কোথায়? আমি অবশ্যই চাইছি- স্কুল/কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়ে/ ট্রেন/ বাসে / অফিস/ আদালতের টয়লেটে, বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের হুট করে হয়ে যাওয়া অস্বস্তিকর এই কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে এসব জায়গায় প্যাড সরবরাহ করা হোক! প্যাডের মুল্য কমানো হোক! গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের প্যাডের ব্যবহারে সচেতনতা তৈরি করা হোক, অসচ্ছল পরিবারগুলোর মেয়েদের সরবরাহ করা হোক স্বল্প মুল্যের প্যাড! স্কুল/ কলেজে এসব নিয়ে কাউন্সিলিং করা হোক! এবং শুধু মেয়েদের না ছেলেদের ও জানানো হোক এটা হাসি তামাশার কিছু না! এটা তোমার জন্মের ইতিহাস!
>> কিছু ট্যাবু নিজ পরিবার থেকেই ভাঙ্গতে হয়! শুরুটা পরিবার থেকেই হোক! হাতে গোনা দু একটা পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে যেখানে মা’র সাথে সাথে বাবাও এসব বিষয়ে মেয়ে/ ছেলেকে শিক্ষা দিয়ে থাকেন! আমার কথাই যদি বলি- আমার সময়ে আমার বাপি পিরিয়ডকালীন সময়ের পরিচ্ছন্নতার জন্য প্যাড/ গজ/ তুলা ব্যবহারের জন্য আলাদা ঝুড়ি/ বালতি কিনে এনে দিয়েছিলেন ! এ সময় রক্ত স্বল্পতার জন্য আয়রন ট্যাবলেট খেতে পাশাপাশি অন্য আয়রন যুক্ত খাবার খেতে বলেছিলেন, ব্যথার জন্য ডাক্তারের পরমার্শ নিয়েছিলেন! ঠিক এভাবেই প্রতিটি পরিবারে বাবাদের ও মেয়েদের পিরিয়ডকালীন সময়ে সচেতনতার কথা এবং সহানুভূতি জানাতে হবে পাশাপাশি ছেলেদের এই শিক্ষাটা পরিবার থেকেই দিতে হবে যে- পিরিয়ড হাসি তামাশার জিনিস নয়! আবার আমার দাদীমা পিরিয়ড থাকা সময়ে তার বিছানায় কাউকে বসতে বা শুতে দিতেন না! ভাবখানা এমন- যেন এটা অপবিত্র জিনিস! অথচ তিনি শিক্ষিত ছিলেন কিন্তু কুসংস্কার ছিলো! একদিন আমি তাকে আচ্ছামত ধরে বুঝিয়েছি- আমাদের রাসুল ( সাঃ) তার বউ/ মেয়েদের পিরিয়ডকালীন সময়ে পাশে বসিয়ে খাইয়েছেন! বউ এর সাথে এক বিছানায় ঘুমিয়েছেন! এরপর থেকে আমাদের আর কোন প্রব্লেম হয়নি!
>> অথচ ভেবে পাই না কিছু পুরুষ পিরিয়ডের সাথে স্বপ্নদোষকে/ হাগুকে কিভাবে মিলায়? এখন কথা হলো- কুত্তার লেজ কখনো সোজা হয় না ! তাই নিজ ঘরে নিজের মা/ বোন/ বউ কে পিরিয়ডকালীন কষ্টে দেখেও যাদের মনে কষ্ট হয় না তাদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কিংবা পিরিয়ড কি জিনিস সেটা বোঝাতে রক্তমাখা প্যাড দেখিয়েও কোন লাভ হবে না! পিরিয়ড যে কোন অপবিত্র জিনিস নয় এটা যে লুকাছাপার জিনিস নয়, হাসি তামাশার জিনিস নয় এসব নানা হেন ত্যান ট্যাবু ভাঙ্গতে হবে নিজ ঘর থেকেই...... এবং অনেক অনেক সচেতনতার প্রয়োজন আছে এই বিষয়ে!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৫৯