গতকাল নীলক্ষেত থেকে কিছু বই কিনে ফেরার পথে হঠাৎ চোখে পড়ল লাল কাপড় আর রঙিন বাতি দিয়ে তৈরি এই ঘরটি। ভেতরে উকি দিতেই দেখা গেল কিছু টাকার নোট। সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।
ঘটনাটা কি স্পষ্ট হওয়ার জন্যে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। আশেপাশে কাউকে জিজ্ঞেস করে সদুত্তর পেলাম না। এরপর একজন ব্যাক্তিকে দেখলাম ভেতরে টাকা দিতে, তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম ভাই এখানে কাকে টাকা দিলেন?
উনি আমার দিকে তাকিয়ে বুঝাতে চাইলেন এটা একটা পবিত্র স্থান, পবিত্র কিছুর জন্যেই উনি এখানে টাকা ঢালছেন। আমি বললাম, মসজিদ আছে, এতিমখানা আছে এসব বাদ দিয়ে এখানে কেন দান করছেন?
জবাবে ভদ্রলোক বুঝাতে চাইলেন এই টাকাও ভাল পথে ব্যয় হয়, আল্লাহর পথে ব্যয় হয়।
আমি উনার সাথে কথা বলে একটা ছবি তুলে বাসার দিকে হাটা শুরু করি। নীলক্ষেত থেকে হেটে হেটে ল্যাবএইডের পেছনের রাস্তা ধরে বাসার দিকে এগোই আর ভাবতে থাকি অন্ধতার কথা। গ্রীন রোডের মাঝামাঝি স্থানে এসে আবার চোখ আটকে গেল লাল কাপড়ে। উকি মেরে নিশ্চিত হলাম এখানেও কাড়িকাড়ি টাকা।
অবশেষে মনে মনে কিছু সিদ্ধান্তে পৌছলাম।
১.এদেশের মানুষ সত্যিই ধর্মান্ধ। তারা ধর্ম সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানটাও জানেনা।
২.এদেশের মানুষ সত্যিই ধর্ম ব্যবসায়ী। কতবড় মানুষিক বিকারগ্রস্ত হলে লালসালু প্রথা কায়েম করছে এই যুগেও।
৩.এদেশের মানুষ ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানহীনতা এবং উদাসীনতার দায়ভার অনেকাংশ আলেম সমাজের উপর বার্তায়। এটা স্পষ্ট করে দেয় আলেম সমাজ তাদের দায়িত্ব পালন করেনি।
৪.রাস্তার পাশে সামান্য মুড়ি বিক্রি করতে হলে পুলিশ, স্থানীয় ক্ষমতাধর ব্যাক্তিবর্গকে খুশি করে পার্মিশন নিতে হয়। সেখানে এই লালসালু প্রথার পার্মিশন কে দিল তাকে ইমিডিয়েট পুলিশের হাতে সোপর্দ করা উচিৎ।
৫.নাস্তিকরা ধর্মের ক্ষতি করছেনা। যদি কেউ ক্ষতি করে থাকে তবে এরাই করে আসছে যুগে যুগে। আর এই যুগ যুগ ধরে কাউকে দেখলাম না চেতনা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে।
আমরা আসলেই অন্ধ....
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:১৫