এক পক্ষের কান্নাকাটি আরেক পক্ষের অশ্লীল ভঙ্গিতে রাক্ষুসীর মতো অট্টহাসি। কারো ঘুম উধাও অস্তিত্বের লড়াইয়ের চিন্তায়, কারো জোর করে বিজয়ী হওয়ায়! মিথ্যার বেসাতি আজ ছিঁড়ে খাচ্ছে জাতিকে। জাতি নীরবে প্রত্যক্ষ করছে জানোয়ারদের লম্ফজম্ফ। আজ রাতেই হয়তো আরো দু’টি প্রাণের বিচারিক প্রয়াণ সম্পন্ন হবে। আজ তারা হেরে গেলেন। কিন্তু কালকের বিচারে আজকের নায়কেরা যে আবার জিতবে তার গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে কি? যে দেশে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আব্দুল জলিলের মতো প্রাণ পুরুষরা পান রাজাকার উপাধি আর একাত্তরে পাক বাহিনীর মুরগী সাপ্লাইয়ার শাহরিয়ার কবির পায় স্বাধীনতার রক্ষকের উপাধি- সেই দেশে আমি খুব বেশী সুবিচারের আশা করিনা। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার, মুক্তিযুদ্ধোত্তর বিরোধীদলীয় স্রোতধারার প্রাণপুরুষ মেজর জলিল বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে নতুন ধারার বরপুত্র।মার্কসবাদে মুক্তির দিশা খুঁজে একসময় হতাশ হয়ে পড়েন। ইসলামের ভেতর মুক্তির অন্বেষা তাকে নতুন পথের সন্ধান দেয়। মৃত্যু পর্যন্ত সেই লক্ষ্যে মুক্তি আন্দোলন করেছেন। মার্কসবাদ-মাওবাদে মুক্তির দিশা খোঁজার মধ্যে তার কোনো ভড়ং ছিল না। তাই যখনই নতুন দিশা পেলেন তখনই মত পাল্টালেন। দেশের প্রয়োজনেই ভারতীয় বাহিনীর লুটপাটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। দেশের কল্যাণচিন্তা করেই অকল্পনীয় এক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে বিরোধীদলীয় রাজনীতির স্রোতপ্রবাহ সৃষ্টি করেছিলেন। দেশ-জাতির কথা ভেবেই কলম ধরেছিলেন। আজ মেজর জলিলকে একজন রাজাকার হিসেবে পরিচয় করানো হচ্ছে আমাদের মাঝে। মিডিয়ার কল্যাণে এসব মিথ্যার বেসাতির স্তম্ব আরো সুদৃঢ় করা হচ্ছে। মিডিয়ার একচ্চত্র হলুদ সাংবাদিকতার নিন্দা জানাচ্ছি।
যে দেশে বিশ্বজিৎ হত্যাকারিদের বিচার হয় না শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন দলের সদস্য হওযার কারনে, আর রাজন হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় দেওয়া হয় শুধু তারা ক্ষমতাসীন দলের না হওয়ায়। বাংলাদেশের আইনে এসব মেকি বিচার জনগণকে খুব বেশী গেলানো যাবেনা, সময়ের ব্যবধানে তা আবার উগ্রেও যেতে পারে। বলছি চল্লিশ বচর আগের ধোঁয়াশাপূর্ণ কাহীনির বিচার না করে ইদানিং কালের ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের গণহত্যার বিচার করুন, হয়তোবা ন্যায়বিচার কিছুটা প্রতিষ্ঠিত হবে। মনে রাখা দরকার পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৫