একবার একটা ভিক্ষুকের ছবি দেখেছিলাম, সম্ভবত পশ্চিমের কোন দেশের হবে। ছবির ক্যাপশন ছিল-‘বিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ভিক্ষুক’। ভিক্ষুকটি ভিক্ষার জন্য এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছিল। সে মাটিতে আলাদা আলাদা কাগজের ওপর বিভিন্ন ধর্মের নাম লিখেছিল এভাবে-Muslim, Christian, Pagan, Buddhist, Agnostic, Atheist, Hindu ইত্যাদি। এরপর প্রতিটি কাগজের সাথে একটা করে পাত্র বসিয়ে রেখে নিজের হাতে একটা কার্ডবোর্ড নিয়ে তাতে লিখে রেখেছে-‘Which religion cares the homeless most?’
এবার যে ই পথ দিয়ে যায়, লেখাটি পড়ে নিজের ধর্মকে সবচেয়ে উদার প্রমাণ করতে নিজ নিজ ধর্মের নাম লেখা পাত্রে দান করে যায়। দারুণ কৌশল, তাই না?
এটা সত্য যে দুনিয়ার প্রতিটি মানুষই নিজের ধর্মের ইমেজকে উজ্জ্বল দেখতে চায়। একটা হিন্দুকে হিন্দুধর্মের সমালোচনা শোনালে সে ক্ষেপে উঠবে, অথচ সে কোনদিন হয়তো বেদ বা গীতা হাতে নিয়েও দেখেনি। ক্রিশ্চানদের নাকি বাইবেল পড়া লাগে না, পাপ যত হোক কেবল যিশুর নামে ক্ষমা চাইলেই সব ধুয়ে মুছে পরিষ্কার। তবু তার মতে খৃস্টধর্ম শ্রেষ্ঠ, এতে কোন ভুল নেই, বাইবেলে কোন Contradiction নেই, যিশুই সেরা, যিশুই সব ইত্যাদি ইত্যাদি।
সমস্যাটা হল মুসলিমরাও যখন নিজেদের ধর্মের ইমেজ রাখতে একই পন্থা অবলম্বন করে। ‘নামাজ পড়ি না তাতে কী, proud to be a Muslim’ কথাগুলো নির্দেশ করে, জাতি হিসেবে এরা একটি ঘোরের মধ্যে আছে। ক্রিশ্চানরা স্যালভেশানের দরুণ বাই ডিফল্ট স্বর্গবাসের যে নিশ্চয়তা বোধ করে, ইসলাম সেটাকে স্বীকার করে না বিধায়ই কেউ নিজেকে মুসলিম দাবি করলেই সে মুসলিম হয়ে যায় না, জান্নাত লাভ তো অনেক দূরের ব্যাপার।
তবু নিজ ধর্মের ইমেজ নিয়ে মুসলিমদের যেরকম তটস্থ থাকতে দেখা যায়, অন্য ধর্মগুলোর লোকেদের বেলায়ও অতটা দেখা যায় না। অথচ আল্লাহ্ তায়ালা নিজে ঘোষণা করেছেন মুসলিমরা শ্রেষ্ঠ জাতি [সূরা আল ইমরানঃ ১১০], সেখানে কাদের কাছে ইমেজ রক্ষায় মুসলিমরা এত ব্যস্ত, চিন্তা করার মতই ব্যাপার।
সংগৃহীত ঃ জুবায়ের হোসেন