জীবনে কখন ও ভাবিনি এভাবে লিখতে হবে। আজ কয়েকদিন ধরে জামাতে ইসলাম ও তার দোসরদের দৌরাত্ন দেখে বাধ্য হচ্ছি এভাবে লিখতে। আজকে জামায়াতে ইসলামী দেশব্যাপী যা করছে তাকে এককথায় কি বলবেন? আমি একাত্তর দেখিনি, মা-বাবা ও মুরব্বীদের কাছে শুনেছি সেই ৯ মাসের কথা, শুনেছি আমার বাবা, চাচা, মামার রণাঙ্গনের অভিজ্ঞতা। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে কোনদিন রাষ্ট্রের কাছ থেকে নূণ্যতম কোন সুবিধা তো দূরে থাকুক স্বীকৃতিটুকুও আশা করিনি। কিন্তু আমার ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধার রক্ত।
আজ জামাত ও তার দোসর রা আমাকে ৭১ এর ঘটনা চাক্ষুষ দেখার সুযোগ করে দিলো। ২৫ মার্চ কাল রাতে হানাদার বাহীনি প্রথম আঘাত হেনেছিল রাজারবাগ পুলিশ লাইনে। তারপর সারাদেশে বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আবাসিক এলাকাসহ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। ৪২ বছর পরে আজ আবার জামাতী হায়েনারা একই ভাবে ঝাপিয়ে পড়েছে ৭১ এর মত। তারা আঘাত করেছে আমার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতিক জাতীয় পতাকায়, আঘাত করেছে আমার ভাষার জন্য শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত শহীদ মিনারে। এখানেই তারা থেমে থাকেনি আক্রমন করেছে রাষ্ট্র ব্যবস্থার উপরে, প্রথমেই তাদের টার্গেট পুলিশ প্রশাসন, এরপর সাংবাদিক এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। জাতীয় মসজিদ থেকে শুরু করে মন্দির কোন কিছুই তারা বাদ রাখছে না। দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার অপচেষ্টায় রত পাকিস্তানের ঔরসে জন্ম নেয়া ঐ জারজেরা।
আর ঐ জারজদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের এক অন্যতম দল, যদিও দলটির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে তবু একজন মুক্তিযোদ্ধার হাতে সৃষ্টি দলটির এহেন ভূমিকা ক্ষুব্দ করছে সমগ্র জাতিকে। আজ দেশের একজন সাধারন নাগরিক হিসাবে বিএনপি’র কাছে আমার প্রশ্ন
- ৭১ এ মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে হানাদার বাহীনির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন এবং জেড ফোর্স প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার স্ত্রী হিসাবে বেগম খালেদা জিয়া কিভাবে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর তথাকথিত মহিলা আমিরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন?
- বিএনপি তে অনেক নেতা কর্মী রয়েছেন যারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তারা কিভাবে বিএনপির আজকের এ অবস্থান মেনে নিচ্ছেন?
- বিএনপি বাঙ্গালী জাতীয়তাবোধকে ধ্বংস করে অনেক আগেই বাংলাদেশী জাতীয়তাবোধে চলে এসেছেন এবার কি তারা পাকিস্তানী জাতীয়তবোধে নাকি জামাতি জাতীয়তাবোধে বিশ্বাসী হতে চলেছেন?
- প্রজন্ম চত্বরকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টার অংশ হিসাবে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালিয়ে আপনারা কি প্রমাণ করতে চাচ্ছেন?
উপরের প্রশ্নগুলির জবাবগুলি আপনাদেরকে দিতেই হবে। নইলে আপনারা জামাত শিবির ও যুদ্ধাপরাধীদের সাথে যে সঙ্গমে মিলিত হলেন আজ তার ফলাফল দশ মাস পরে আপনারা পাবেন। আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে চাই, বাংলার জনগনকে ছিনিমিনি খেলার অপচেষ্টা করবেন না, তার ফল কখনও ভালো হয় নি এবং ভবিষ্যতে ও ভালো হবে না।
প্রজন্ম ১৩ এর কাছে আমার আহবান আসুন এই সব পাকিস্তানী জারজদের প্রতিহত করি, প্রতিহত করি ৭১ এর পরাজিত শক্তিকে, সেই সাথে প্রতিহত করি মুক্তিযোদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হিসাবে দাবীদার সেই ঘৃণ্য দলকে যারা আজ জামাত শিবির ও যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয় প্রশ্রয়ই শুধু দিচ্ছে না, তাদের বাচাতে রাজপথে নেমে আমার ভাইকে হত্যা করছে, ক্ষতিসাধন করছে জাতীয় সম্পদকে।