একটা ঈদ গেলো। সবার ঘরে ঘরে আনন্দের জোয়ার বয়েছিলো নিশ্চই!! ঈদ পূর্ববর্তী কেনাকাটা, ঈদের সময় ঘুরাঘুরি-আড্ডা-বেড়ানো এবং ঈদ-পরবর্তী টিভিতে অনুষ্ঠান দেখে আমাদের বেশ ভালো সময় কেটেছে আশা করছি। নিজের এবং পরিবারের আনন্দে আমরা এতোটাই আত্মহারা ছিলাম যে অন্যের দুঃখ কষ্ট নিয়ে আমাদের তেমন মাথা ব্যাথা ছিলোনা। রোড অ্যাক্সিডেন্টে কিছু মানুষ মরেছে!! আহা, মরবেই তো। প্রতি বছর এই সময়ে নিয়ম করে কিছু মানূষ না মরলেই বরং শরীর কেমন গুলিয়ে আসে আমাদের। মনে হয় কি যেনো ঠিক নেই।
আমরা দিন দিন পাষবিক হচ্ছি - এটা মনে আমাদের অজানা নয়। পিশাচের মতো হতে আমাদের যে আপত্তি নেই সেটা বুঝা যাচ্ছে বেশ। নাইলে কেমন করে বাবা তার দুই শিশুকে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেন! httpকেমন করে নিজের দুই মেয়েকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেন মা ! অথবা, সামান্য ঈদের আবদার মেটাতে না পেরে দুই সন্তানকে নদীতে ফেলে দেয়ার মতো রোমহর্ষক ঘটনা আমাদের আশে পাশে প্রতিনিয়ত ঘটে থাকলেও আমরা কেমন করে নির্বিকার থাকছি? কিন্তু এই যে শিশুদের আমরা হত্যা করে চলেছি দিনের পর দিন, আমরা কি ভুলে গেছি যে এরাই আমাদের ভবিষ্যত? বাঙ্গালী এক আজব জাতি! নিজেদের ভবিষ্যত কে খুন করতে তাদের বুক কাঁপে না। আর তাইতো, জমি নিয়ে সংঘাত হলে শিশু হত্যা যেমন দেখা যায়, তেমনি অপহরন করে শিশু হত্যার ঘটনাও আমরা দেখে থাকি।
শুধুই কি শিশু হত্যা!! আরো আছে। লীগ আর দল এর চমৎকার রান্নাবাটি খেলায় জামায়াত মাঝে মাঝে মসলা ঢেলে থাকে। আমরা সারাবছর এই মসলাযুক্ত রান্নাবাটি খেলা দেখে থাকি। এই যেমন ধরুন, কুকুর কুকুরের মাংস না খেলেও লীগ কিভাবে লীগের মাংস খায় । অবশ্য লীগ ও দলের এক পশলা রান্না বাটি খেলা খুলনার ঈদ কে পানসে করতে পারেনি যদিও। এই ব্যাপারে বেশীদুর এগুনো দরকার নেই। লীগ-দল-জামাত-শিবির কোনটার ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। এরা নিজেদের মাংস নিজেরা খেতে থাকুক।
আসুন দেখি আমাদের র্যাব এর কি অবস্থা। লিমনের কথা তো মনে আছে, তাই না? সুর্য থেকে বালি গরম। র্যাব থেকে র্যাবের সোর্স এর খায়েশ বেশী। তাই শুধু লিমনকে পিটিয়ে নিয়, লিমনের মায়ের গায়েও হাত তুলেছে পুলিশের সোর্স বলে খ্যাত লীডার ইব্রাহিম। র্যাব সরেস আছে সেটা তো জানি ই আমরা, সেই স্রোতে তারা লিমনের নামে দুটি মামলা করে বসে। পুলিশ আবার এক কাঠি সরেস। র্যাবের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের দায়ের করা মামলায় র্যাবকে নির্দোষ প্রমান করে প্রতিবেদন তৈরী করে তারা।

র্যাবের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নস্যাত করতে পুলিশকে অনেক অ্যাক্টিভ দেখা গেলেও পুলিশ যে কেমন অ্যাক্টিভ সেটা আমরা কয়েকটা খবর থেকেই জেনে নিতে পারি। এখনো চাঁদাবাজী চলছে তো চলছেই, ফটো সাংবাদিকের মতো আপনার-আমার বাসায় ও কিন্তু চুরী হচ্ছে ,অথবা সামান্য ভিক্ষুক বাদ যাচ্ছেনা ছিনতাইকারীদের হাত থেকে।
এতো খুন খারাবি এতো মারামারি, একটু খানি ধর্ষন না হলে কি জমে? উহু, আর তাই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের খবরের মতো আমাদের লালায়িত পুরুষ সমাজ নারী সমাজের উপর ঝাপিয়ে পড়ার খবর পাওয়া যাবে প্রতিটি পত্রিকায়,প্রতিটিদিন।
প্রাকৃতিক দূর্যোগের কথা বলতে গেলে চট্টগ্রামের টর্নেডো , সিলেটের ভুমিকম্প , অথবা নেত্রকোনার বজ্রপাতের মতো দূর্যোগ লেগেই আছে এই দেশে।

আর যারা ভাবছেন আপনারা এসব থেকে দূরে আছেন - বেঁচে আছেন; তাদের জন্য রইলো ফরমালিন যুক্ত সুসংবাদ । দেখা হবে শিগ্রী - এপারে বা ওপারে।
জেনারেল আছি; জানিনা লেখাটা নির্বাচিত পাতায় ঠাই নিবে কিনা বা কতজন পড়বে। কিন্তু আমাদের জানা দরকার। সবাই ভালো থাকবেন।
দূর্জয়
ফ্রীল্যান্স সাংবাদিক
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ৮:২৬