somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের জন্মদিন

১০ ই আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ দেশের কৃষক, জেলে, কামার, কুমারসহ পল্লীর শ্রমজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা, সংগ্রাম, সমস্যা ও সঙ্কটকে ক্যানভাসে নিখুতভাবে তুলে ধরার জন্য এস এম সুলতান বিখ্যাত। তার ছবির অনুষঙ্গ হিসেবে এসেছে খড়ের ঘর, খালবিল, গাছপালা, সনাতন চাষের উপকরণ, মাছ ধরার সরঞ্জাম, সংগ্রামের প্রতীক ঢাল, সড়কি, রামদা, বল্লম, লাঠি ইত্যাদি। সুলতান বাংলার কৃষক-কৃষাণীকে বীর হিসেবে দেখতেই পছন্দ করতেন। তাই তিনি তাদের আকতেন পেশিবহুল শক্তিশালী মানুষ হিসেবে। কৃষক সমাজকে বলবান হিসেবে একে তিনি চিত্রকলায় নতুন এক ধারার সূচনা করেন। এ দেশের চিত্রশিল্পে যুগ প্রবর্তক শিল্পী হিসেবে এস এম সুলতান পরিচিত। আত্মপ্রচার বিমুখ এ শিল্পী ১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাসিমদিয়া গ্রামে এক নিম্নবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
পাচ বছর বয়সে এস এম সুলতান স্থানীয় স্কুলে ভর্তি হন। দারিদ্র্যের কারণে অল্প দিন পরই তিনি স্কুল ত্যাগ করে বাবার রাজমিস্ত্রির কাজের সহকারী হিসেবে নিয়োজিত হন। এ সময় তিনি নিজে নিজে ছবি আকা শেখেন। কাঠ কয়লা, কাচা হলুদ ও পুই গাছের ফলের রস দিয়ে তিনি ছবি আকতেন। এসব ছবি স্থানীয় জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায়ের দৃষ্টিতে পড়ে। পুরস্কারস্বরূপ তিনি ছবি আকার কিছু সরঞ্জাম কিনে দেন এবং স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই বিখ্যাত রাজনৈতিক ও শিক্ষাবিদ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতি একে সুলতান খ্যাতি অর্জন করেন।
স্কুলের শেষ পরীক্ষায় পাস করার আগেই সুলতান বাড়ি থেকে পালিয়ে কলকাতায় চলে যান। কলকাতায় তিনি শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর বাসায় আশ্রয় নেন। সুলতানের পূর্ব নাম ছিল লাল মিয়া। শাহেদ সোহরাওয়ার্দী এ নাম পাল্টে শেখ মুহম্মদ সুলতান রাখেন। তিনি সুলতানকে কলকাতা আর্ট স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। কিন্তু খেয়ালী এ শিল্পী প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় আবদ্ধ থাকেননি। মাত্র তিন বছর পরই আর্ট স্কুল ত্যাগ করে ভবঘুরে জীবন শুরু করেন।
এস এম সুলতান দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় পাচ-দশ টাকার বিনিময়ে গোরা সৈন্যদের ছবি আকতেন আর ভারতের বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়াতেন। দেশ বিভাগের পর কলকাতা ত্যাগ করে তিনি পাকিস্তানে চলে যান। কিছুদিন লাহোরে থাকেন এবং করাচি আর্ট স্কুলে দুই বছর শিক্ষকতা করেন। এরপর তিনি ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন শহর ভ্রমণ করেন। এসব শহরের ছবি একে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন।
১৯৫৫ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং চিত্রা নদীর তীরে জন্মভূমি নড়াইলের মাসিমদিয়া গ্রামে স্থায়ী আবাস স্থাপন করেন।
১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর তিনি মারা যান।
আজ ১০ আগস্ট শিল্পী এসএম সুলতানের জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে গভীর শ্রদ্ধা জানালাম।
১২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এসব লুটপাটের শেষ কোথায়!

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:১৮

আধা লিটারের পানির বোতল দোকানদার কেনে সর্বোচ্চ ১২.৫০ টাকায় আর ভোক্তার কাছে বিক্রি করে ২০ টাকা। এগুলো কি ডাকাতি না?

গোপন সূত্রে যতটুকু জানা যায়,
প্রাণ ৮.৫ টাকা কেনা
ফ্রেশ ১০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। চারুকলায় আগুনে পুড়ে গেল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৪৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদ্‌যাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফ আগুনে পুড়ে গেছে। এর মধ্যে একটি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও আরেকটি শান্তির পায়রা।



আজ শনিবার সকালে চারুকলা অনুষদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২৬

ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা
March for Gaza | ঢাকা | ২০২৫

বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
আল্লাহর নামে শুরু করছি
যিনি পরাক্রমশালী, যিনি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী,
যিনি মজলুমের পাশে থাকেন, আর জালেমের পরিণতি নির্ধারণ করেন।

আজ আমরা, বাংলাদেশের জনতা—যারা জুলুমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডক্টর ইউনুস জনপ্রিয় হয়ে থাকলে দ্রুত নির্বাচনে সমস্যা কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৪১



অনেকেই ডক্টর ইউনুসের পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা বলছেন। এর জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় নির্বাচন। আদালত যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বহাল করেছে সেহেতু ডক্টর ইউনুস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডিসেম্বরে নির্বাচন : সংস্কার কাজ এগিয়ে আনার পরামর্শ প্রধান উপদেষ্টার

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১২ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৪৯


ড. ইউনূস সাহবে কে বুঝি পাঁচবছর আর রাখা যাচ্ছে না। আজ বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সাথে মত-বিনিময়ের সময় ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন কে সামনে রেখে তিনি দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কারের এগিয়ে আনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×