হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে থাকতে যারা হাপিয়ে উঠছেন, কী করে সময়গুলো পাড় করবেন ভেবে পাচ্ছেন না এবং হাঁসফাঁস করছেন বাইরে বেরোবার জন্য, তাদেরকে আমি কাহিনী সংক্ষেপ সহ কিছু ওয়েব সিরিজ সাজেস্ট করছি। এই ওয়েব সিরিজগুলো দেখতে দেখতে আপনার সময় কোন ফাক দিয়ে কেটে যাবে, আপনি টেরও পাবেন না!
আপনাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, আপনারা বাসায় বসে মুভি দেখুন, ওয়েব সিরিজ দেখুন, বাসায় যদি বই থাকে এবং বই পড়ার নেশা যদি থাকে তবে বই পড়ুন। তবুও প্লিজ আপনারা বাসা থেকে বেরোবেন না। এই মুহুর্তে নিজে নিরাপদ থাকার জন্য এবং আশেপাশের সবাইকে নিরাপদে রাখার জন্য গৃহবন্দী হয়ে থাকাটাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা...
ওয়েব সিরিজ সাজেশনঃ
---------------------------------
১) Asur:
ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হয়ে চলেছে একের পর এক হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডগুলো হচ্ছেও অদ্ভুত এক প্যাটার্ন অনুসরণ করে। আর যতবার নতুন কেউ খুন হচ্ছে, প্রত্যেকবারই মৃতদেহের লোকেশন সবার আগে পৌঁছে যাচ্ছে সিবিআইয়ের সাবেক ফরেনসিক সায়েন্টিস্ট নিখিল নায়ারের কাছে, যে কিনা আরো দশ বছর আগে সিবিআই ছেড়ে দিয়েছিলো তার শিক্ষক এবং সিবিআইয়ের সিনিয়র ফরেনসিক সায়েন্টিস্ট ধনঞ্জয় রাজপুতের সঙ্গে একটা আদর্শগত দ্বন্দ্বের জের ধরে। কিন্তু ভারতে হয়ে চলা অদ্ভুত প্যাটার্নের সিরিয়াল কিলিং-এর এই কেসের তদন্ত করতে তাকে আবার ফিরে আসতে হয়। ফিরে এসে ধনঞ্জয় রাজপুতের সঙ্গে মিলে সে তদন্ত শুরু করে দেয়। আর সেই তদন্তে বেরিয়ে আসে পুরাণে বর্ণিত কলি নামের এক অসুরের কাহিনী। কলির নামেই বর্তমান এই যুগটার নামকরণ হয়েছে কলিযুগ। পৌরাণিক কাহিনী মতে, কলিযুগে হয়ে চলা সমস্ত পাপ, অন্যায়, অনাচার এই কলি নামক অসুরের ইন্ধনেই হচ্ছে। এবং এসব ততদিন পর্যন্ত চলতেই থাকবে যতদিন পর্যন্ত না বিষ্ণু কল্কি অবতার নিয়ে পৃথিবীতে এসে কলিকে বধ করে এই কলিযুগের সমাপ্তি ঘটাচ্ছেন।
তবে কি কলিযুগের অসুর কলি-ই সেই সিরিয়াল কিলার, যাকে কিনা সিবিআই হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে?!
২) Breathe:
একের পর এক খুন হয়ে যাচ্ছে এবি নেগেটিভ রক্তের গ্রুপবিশিষ্ট অর্গ্যান ডোনাররা। প্রত্যেককেই খুন করা হচ্ছে খুব সাবধানে শ্বাসরোধ করে, যাতে করে তাদের শরীরের কোনো অর্গ্যান নষ্ট হয়ে না যায়। আর যখনই কোনো একজন ডোনার খুন হচ্ছে, তখনই কোনো এক মৃত্যুপথযাত্রী রোগী সুস্থ হয়ে উঠছেন।
এমতাবস্থায় আপনি কী করবেন? এতগুলো মানুষের খুনীকে ঘৃণা করবেন? নাকি এতগুলো অসুস্থ মানুষকে আবার সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার সুযোগ দেয়া মানুষটিকে শ্রদ্ধা করবেন? নাকি সমর্থন করবেন সেই বাবাকে, যে কিনা একের পর এক হত্যা করে চলেছে এবি নেগেটিভ অর্গ্যান ডোনারদের, কারণ তার নিজের সন্তানও সেই মরণাপন্ন রোগীদের মধ্যে একজন?!
৩) Typewriter:
একজন খ্যাতিমান লেখকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় তার নিজ গৃহ "বার্ডেজ ভিলা" থেকে। তার মৃতদেহের পাশে পাওয়া যায় একটা ভৌতিক গল্পের পাণ্ডুলিপি, যেটা লেখা হয়েছিলো তারই টাইপরাইটার ব্যবহার করে। পাণ্ডুলিপিটাকে বই আকারে প্রকাশও করা হয়, এবং বইটার নাম দেয়া হয়- "The Ghost of Sultanpore"! কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, এই গল্পটা সেই লেখকের টাইপরাইটারে লেখা হলেও সেই লেখকের লেখা নয়। তবে কার লেখা? কে লিখলো এই গল্প?!
বহু বছর পরে এই রহস্য উদ্ঘাটন করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে বহুবছর আগের "ফকির" নামের এক ভয়ঙ্কর এবং নৃশংস প্রেতসাধকের কাহিনী। বেরিয়ে আসে তার নৃশংসতার পেছনের করুণ কাহিনীও।
৪) Ghoul:
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সেনাসদস্য নিডা রহিম ইতোমধ্যেই নিজের বাবাকে আতঙ্কবাদী সন্দেহে গ্রেপ্তার করিয়ে সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে নিজেকে একজন সৎ, নিষ্ঠাবান এবং বিশ্বস্ত সেনাসদস্য বলে প্রমাণ দিয়েছে। এর মাসখানেক পরেই তাকে পাঠানো হয় সেনাবাহিনীর একটা গোপন ডিটেনশন সেন্টারে, আলী সাঈদ নামের এক কুখ্যাত আতঙ্কবাদীকে জেরা করার জন্য। কিন্তু নিডা যখনই আলী সাঈদকে জেরা করতে যায়, আলী সাঈদ তাকে ডেকে ওঠে "নিদু" বলে, যে নামে তাকে তার বাবা ডাকতেন। শুধু নিডাই না, যাকেই পাঠানো হয় তাকে অত্যাচার করে তার পেট থেকে তথ্য বের করার জন্য, সে এসে আলী সাঈদের সামনে দাঁড়ানো মাত্রই আলী সাঈদ গড়্গড় করে বলে যেতে থাকে তার নানান অপরাধের বৃত্তান্ত! এরই মধ্যে সেই ডিটেনশন সেলের দায়িত্বে থাকা কর্নেলের কাছে খবর আসে, আলী সাঈদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে! তবে যাকে তারা টর্চার সেলে টর্চার করছে, সে কে?!
সে কে, তা বের হয়ে আসার আগেই বের হয়ে আসে তার ভয়ঙ্কর রূপ!
৫) রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজঃ
তিনটি সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা গল্প নিয়ে এই রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজ। প্রথম গল্পের নাম "ঝন্টু মোটরস"। এই গল্পের প্রধান চরিত্র ঝন্টু দা, যিনি কিনা একজন মোটর মেকানিক এবং "ঝন্টু মোটরস" নামক গ্যারেজের মালিক। কিন্তু মোটর পার্টসের এই জগতের আড়ালে এই ঝন্টুদার আরেকটা জগত আছে, এবং মূলত ওটাই তার আসল জগত। সেটা হচ্ছে অপরাধ জগত। এই অপরাধ জগতের বেতাজ সম্রাট আমাদের এই ঝন্টুদা। অত্যন্ত অভিনব তার অপরাধ এবং অপরাধের কৌশল!
দ্বিতীয় গল্পের নাম "শকুনি"। এই গল্পটি একজন জুয়াড়ির, যার পেশা যাই হোক একমাত্র নেশা হচ্ছে জুয়া। জুয়ায় তাকে হারানো তখনই সম্ভব যখন সে নিজে থেকে হারবে! আর জুয়ায় তার এই পারদর্শিতার জন্যেই তার আসল নাম যা-ই হোক সবাই তাকে এক নামে চেনে "শকুনি" বলে। হ্যাঁ, মহাভারতের সেই শকুনি মামা! কিন্তু তার জেতার এই নেশা এবং লোভ যে একদিন তাকে একটা চক্রের এক ভয়ানক ফাঁদে নিয়ে ফেলবে, তা কে জানতো?!
আর তৃতীয় এবং সর্বশেষ গল্পের নাম "ঝড়ের রাত"। এক প্রচণ্ড ঝড়ের রাতে মেন্টাল এসাইলেম থেকে পালায় দুর্ধর্ষ সাইকোপ্যাথ কিলার সুখেন সান্যাল ওরফে সাইকো সান্যাল! দু'বছর আগে একটি মেয়েকে খুন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলো সে। পুলিশের ধারণা এই সাইকো সান্যাল দু'বছর পরে এসাইলেম থেকে পালিয়ে সেই মেয়েটির কাছেই গেছে। সেই মেয়েটির নাম ও ঠিকানা দিয়ে একজন পুলিশ অফিসারকে পাঠানো হয় মেয়েটিকে সাইকো সান্যালের হাত থেকে বাঁচাতে। কিন্তু সেখানে যে চলছে আরেক নাটক!
----------------------------------------------------------------
আগামীকালকের মধ্যেই আমি আবার আসছি এই পোস্টের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। দ্বিতীয় পর্বে থাকছে বেশ কিছু মুভির সাজেশন, সঙ্গে মুভিগুলোর সংক্ষিপ্ত প্রিভিউ।
ততক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন, ঘরে থাকুন এবং সাবধানে থাকুন...
#Stay_at_home
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:১৮