আমি বিজ্ঞানময় এই সময়টাতে মানবিক কারণে কোন ভাবেই, কোন ভাবেই হার্ড ইমিউনিটির পক্ষে নই। তবুও বলবো হার্ড ইমিউনিটি বিষয়ে যারা অংক করে বলছেন এত লোক মরবে ওত লোক মরবে তারা কোন ভাবেই সঠিক কথা বলছেনা না।
ধরি হার্ড ইমিউনিটির কারণে পৃথীবিতে আক্রান্তের ২% (সর্ব নিম্ন সংখ্যা ধরে নিলাম) মানুষ মারা যাবে। তাহলে একটি হিসাব করা যাক, মানে ভাগ আর শতকরা হিসাব। এই মূহুর্তে পৃথিবীতে সর্বমোট জন সংখ্যা 7,790,000,000 জন, হার্ড ইমিউনিটিতে যেতে আক্রান্ত হতে হবে ৭০% হারে 5,453,000,000 জন, আক্রান্তের ২% (সর্বনিম্ন) হারে মৃত্যু হতে হবে 109,060,000 জন। গড়ে প্রতিদিন সর্বোচ্চ মুত্যু হতে পারে 20,000 জন। তাহলে 109,060,000 জন মৃত্যু হতে সময় লাগবে ৫৪৫৩ দিন মানে প্রায় ১৫ বছর। আক্রান্ত প্রতিদিন ধরা হয়েছে ১০ লক্ষ, যার চেয়ে বেশি মনে হয় আক্রান্ত হওয়া সম্ভব না।
এতদিনতো আর বিজ্ঞানিরা বসে বসে আঙ্গুল চুষবে না। বিজ্ঞানিরা যদি আঙ্গুল চুষে তাহলেও ভাইরাস কখনও ১৫ বছর টিকে থাকবে না। আর ইতিপূর্বে এইরকম অতিমারি সাধারণত 2 বছরের বেশি টিকে থাকেনি। তার মানে অংকের হিসেবে হার্ড ইউমিউনিটিতে যতটা বলা হচ্ছে তত লোক মারা যাওয়া সম্ভব নয়।
আর এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে ইতিপূর্বে তা মানুষ ভাবতেই পারেনি। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে আগে যেখানে মানুষ জানতোই না ভাইরাসের মত এইরকম পরজীবি কোন প্রাণী/বস্তু আছে কিনা এখন সেখানের এই জিনিসটার হাজার হাজার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে হচ্ছে। এই জিনোম সিকোয়েন্সিং-এর কারণেই যত সময়ই লাগুক টীকা আবিস্কার করতে সর্বোচ্চ 2 বছরের বেশি সময় লাগবে না, হ্যাঁ যদি এখনই হঠাৎ করে ভাইরাসটি পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় তবেই কেবল টীকা আবিস্কার করতে সময় লাগবে।
আর যারা এটিকে এইডসের সাথে তুলনা করবেন, তারা একটু ভেবে দেখুন এইডস কিন্তু আপনি সতর্ক হলেই এর সংক্রামক থেকে বাঁচতে পারবেন কিন্তু আপনি যত সতর্কই হোন না কেন কোভিড-19 এর সংক্রামক হাত থেকে সহজে বাঁচতে পারবেন না। অন্যদিকে এইডসে যেখানে দরিদ্র শ্রেণী বেশি আক্রান্ত হয় অন্যদিকে কোভিডে কিন্তু ধনীক শ্রেণী বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, এই কারণে করোনার ঔষধ টীকা দ্রুতই আসবে।
সাথে আংকি একটা ভালো খবর দেই যেটা অনেকই লক্ষ্য করেছেন, https://www.worldometers.info/coronavirus/ এই লিংকে তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও মৃত্যুর সংখ্যা ও হার কিন্তু দিন দিন কমছে।
সকলে নিরাপদে থাকুন, ভালো থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৫১