ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেওয়া অভিজ্ঞতালব্ধ শিক্ষা থেকেই বলছি আমরা আবারও শিখবোনা। ইতিহাসের শিক্ষার পূণরাবৃত্তির অংশ হিসেবেই আমরা দেখলাম পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ যখন জীবন ও মৃত্যু’র সন্ধিক্ষণে সেই সময়েও শত শত ত্রাণ দাতাগণ ত্রাণের বস্তাগত বস্তু চুরিতে মহা-ব্যস্ত! না তাদের সামাজিক দায়িত্ব, না তাদের মানবীক মূল্যবোধ, না তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ না তাদের দেশত্ববোধ এহেন কর্মকান্ড থেকে তাদের বিবেককে বাঁধা দেবে এমন কোন উপলক্ষ্য ত্রাতা হয়ে তাদের সামনে উপস্থিত হয়নি।
আমরা সবাই জানি এই অতিমারি করোনার হাত থেকে বাঁচার জন্য করুণাময়ের করুণা ছাড়া আমাদের সামনে আপাতত কোন উপায় নেই, যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা বিজ্ঞানিদের কৃপায় প্রতিরোধক বা প্রতিশোধক হাতে পাচ্ছি। এই সময়ে করোনা আমাদের নিম্নোক্ত বিষয়গুলো ভালোমত শিখিয়েছে-
• বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর নীতিনির্ধারকগণ যারা সাধারণ সময়ে দূরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগলে চিকিৎসা বাবদ পৃথিবীর সেরা সেরা হাসপাতালে চিকিৎসার সেবা গ্রহনের সুযোগ পান, শুধু সুযোগ পান বল্লে ভুল হবে বরং চিকিৎসা বাবদ যে অর্থ পেয়ে থাকেন তা অবশ্যই প্রকৃত খরচের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে থাকে। তারমানে তিনি যদি সুস্থ্য হয়ে গৃহে ফিরতে পারেন তার দূরারোগ্যটাই তার জন্য একটি লাভজনক পণ্যে পরিণত হয়। ***করোনা শিখিয়েছে না সেটা সব সময় সম্ভব নয়। সুতরাং তোমার দেশের চিকিৎসা সেবাকে সার্বজনিন করো, উন্নত করো।
• ***করোনা শিখিয়েছে যেখান থেকে খুশি, যা খুশি, যে ভাবে খুশি, যে কোন প্রাণী হত্যা করে খাবে আর সামান্য কারণে প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করবে, সেটা হবে না। তোমরা এখন তোমাদের, হাত মুখ, জিহ্বাকে সংযত করো আর পদযুগলকে সচল করো।
• *** তোমরা অর্থ লালসায় বিশ্ব বাণিজ্য দখল দরিদ্র তৈরীর এক অশুভ প্রতিযোগিতায় নামবে, সেখানে ধরনীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার কথা একদম ভুলে যাবে তা হবে না, প্রকৃতি বুঝিয়ে দিয়েছে প্রকৃতি কিভাবে তার ভারসাম্য রক্ষা করবে।
• নিজেদেরকে যে সকল দেশ অসীম ক্ষমতার অধিকারী বলে জাহির করতে চান তাদের বোধহয় বোঝবার সময় এসেছে, ১,৮২২ বিলিয়ন ডলার দৃশ্যমান শত্রু মোকাবিলা করার জন্য যে বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে তার বাজার মূল্য শুণ্য যদি ***করোনার মত অদৃশ্যমান শত্রু মোকাবিলার কোন প্রস্তুতি না থাকে। যদিও বস্তুত শত্রু মোকাবিলার নামে হয় নীরিহ মানুষকে হত্যা করা হয় অথবা অজাতশত্রু মানুষগুলোকে অপ্রয়োজনীয় অজুহাতে বিভাজিত করে শত্রু বানানো হয়
• করোনা পরিস্থিতি যে বিষয়টি সবচেয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে সমর্থ হয়েছে তা হলো, আমরা সাধারণ মানুষ অসাধারণ মর্যাদায় কিছু ভাঁড়কে দেশের দায়িত্বভার তাদের হাতে তুলে দিয়েছি এবং এই ভাঁড়দের সেই দায়িত্ব দিয়ে আমরা বিরাট গৌরব বোধ করি।
• করোনা আমাদের শিখিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির নামে হিংসা বিদ্বেষ শেখানোর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ভবিষ্যতের ভাঁড় তৈরী করার কোন মানেই হয়না বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় রিসার্চে তাদেরকে মনোনিবেশ করান অথবা ল্যাবে বসান তাতে ভবিষ্যতে আপনিও আপনার অতিপ্রিয়জনরা নিরাপদে থাকবে, ভালো থাকবে।
সর্বশেষে বলতে চাই, আমাদের এখন সময় এসেছে, আমাদের প্রতিদিনের আয়ের একটি অংশ খেলা-ধুলা, বিনোদনে খরচের পাশাপাশি ল্যাবে বিনিয়োগ করার মানষিকতা গড়ে তুলতে হবে।
রাজনীতিবীদ নামক ভাঁড়দের দালাল, আত্মীয়, চাটুকারী ইত্যাদি লজ্জাজনক পরিচয় দেওয়ার চেয়ে একজন অপরিচিত মানবতাবাদী মানুষের শুভাকাঙ্খী পরিচয়ে গৌরবান্বিত বোধ করুন অথবা একজন সৎ কৃষক, সৎ দিনমজুরের পরিচয় দিয়ে গৌরবান্বিত বোধ করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৫৪