মাস দেড়েক আগের ঘটনা।
আমার ছোট ভাইয়ের সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক। একত্রে থাকা হয় না বলে যখন দেখা হয় তখন বেশ আড্ডাবাজি হয়। যদিও ভাইটি আমার মাত্র এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছে, আলোচনা-আড্ডাবাজি গুরুত্বানুসারে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। আমি কখনো পুল খেলি নি, খেলা দেখতেও যাই নি, সুতরাং ভাইকে গাইড হিসেবে নিয়ে গিয়েছিলাম ধানমন্ডির একটা পুল সেন্টারে। কিছু সময় কাটিয়ে আবার ফিরে এসেছি। আমার থেকে প্রায় ছ' ইঞ্চি লম্বা ভাইটার কাধ ধরার সুযোগ না থাকায় আমি তার কনুইর একটু উপরে ধরে হাটতে হাটতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছিলাম। বেশ জমেছিল সেদিন।
দিন পনেরো পরে আবার কোন এক ঘটনায় দুজনে হাটছিলাম, অভ্যাসবশত: আবারও তার হাতে ধরতে সে যথেষ্ট শ্রদ্ধার সাথে আপত্তি জানালো - হাতটা না ধরলে ভালো লাগে। আমি চমকে উঠেছিলাম এই মন্তব্যে। ভাই বড় হয়েছে, কিন্তু কতটা? প্রথমে 'মেয়েলি স্বভাব'কে আপত্তির কারণ বলে জানালেও আসল কারণটা জানাতে দেরী করেনি সে। এবং বেশ ফ্রাঙ্কলি কতগুলো সত্য কথা জানিয়েছে সে আমাকে, পরিনামে আমাকে চিন্তা করতে বাধ্য করছে সত্যিই কতটা এগিয়েছে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে জানার জন্য।
সপ্তাহ দুয়েক আগে চট্টগ্রামে গিয়েছিলাম কিছু কাজ সারতে। ষোলশহরে চট্টগ্রাম শপিং
কমপ্লেক্সের একটু আগে দাড়িয়ে ছিলাম গাড়িতে উঠবো বলে। স্কুল ছুটি হয়েছে কোথাও, নাইন-টেনে পড়া কিছু ছেলে ফিরছিলো। ফুটবল খেলায় গোল দেয়ার পরে গোলদাতার উপরে বাকী খেলোয়াররা যেভাবে ঝাপিয়ে পড়ে ঠিক সেরকম কোন একটা কারনে একটা ছেলেকে জড়িয়ে ধরেছিলে তারই দুটো বন্ধু। পশ্চাদ্দেশের উপর দুটো হাতের ব্যারিকেড তৈরী করার পরে ছেলেটি অঞ্চলিক ভাষায় চেচিয়ে বলছিল, "ওরে তোরা আমারে বাচা.." দুষ্টামি নি:সন্দেহে, কিন্তু বিষয়টা কেন সমকামিতা?
বছর দেড়েক আগে শিশু সমকামিতার সচেতনতা তৈরীর জন্য সামহোয়্যারইনে একটা পোস্ট দিয়ে জীবনে প্রথমবারের মতো ব্যান খেয়েছিলাম। দোষটা আমারই ছিল, ভাষায় সংযম আনতে পারিনি। এতদিন ভাবিনি যে এই সমকামিতা নিয়েই আবার একদিন লিখবো ব্লগে। লিখতে হচ্ছে, কারনটা ইস্যুটা স্পর্শকাতর হলেও গুরুত্বপূর্ন।
আগামী পর্বে সমাপ্য
http://darashiko.com/