প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে আমাদের শহরগুলো কালো জলের তলে ডুবে যায়। এর জন্য কি আমরাই দায়ী নই? যদিও নগরপিতাদেরও গাফিলতি আছে শহর সাজানোর ব্যাপারে। তবে তাদের দোষ যদি ৭০% হয় আমার মনে হয় আমাদের ৩০% দোষ আছে কম বেশী হতে পারে। আমরা নিজেরাই স্বার্থপর। শহরের কথা আমরা কেনো চিন্তা করবো। চিপস খাবো-প্যাকেট ঢিল দিয়ে রাস্তায় ছুঁড়ে মারবো-কলা খাবো চিলকা রাস্তায় ফেলবো, বিস্কিট খাবো প্যাকেট থাকবে রাস্তায়, পান খাব পিক ফালাবো রাস্তায়। বিড়ি খাবো বিড়ির প্যাকেট ছুঁড়ে মারবো রাস্তায়। প্রতিদিন হাজার হাজার ছেঁড়া পলিথিন ম্যানহোলের ছিদ্র দিয়ে চলে যায়-আটকে থাকে ম্যানহোলের মুখে। ড্রেনগুলো পলিথিনে ভর্তি। কেনো মেয়ররা তো কিছুদূর অন্তর অন্তর ডাস্টবিন ফিট করে দিয়েছেন, একটু কষ্ট করে কেনো আবর্জনাগুলো আমরা ডাস্টবিনে ফেলি না হুম। ভাঙ্গাচুড়া প্রতিটা অলিগলির রাস্তা রাজপথ। ওড়াল সড়ক, রাস্তা খুঁড়াখুঁড়ি। ওড়াল সেতু বানানোর পর নিজের জায়গাগুলোতে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে যেনো। কি নোংরা রে বাবা। একটি দেশের রাস্তায় নামলেই বুঝা যায় সে দেশের মানুষ কত ভদ্র আর প্রশাসন চালাক-ফাঁকিবাজ। এই কয়দিনে মানুষের কি দূর্ভোগ ঘরের বাইরে এলেই টের পাওয়া যায়। আজ আমাদের এখানেও পানি জমে আছে। কষ্ট করে অফিসে আসতে হয়েছে হাঁটু পানি ভেঙ্গে।
ছবিগুলো ব্যাংকের ছয়তলার বারান্দা থেকে তুলেছি মতিঝিলের এদিক ওদিক
২। বন্ধুরে তুই আসবি নাকি
বেয়ে বেয়ে নৌকা
আমায় নিয়া ভাসবি রাস্তায়
হারাস নে এ মওকা।
৩। বাসে বাদুরঝোলা হয়ে আর কত? শোন এবার পঙ্খীরাজে চড়ো কিংবা-পালতোলা নৌকা। তুমি মাঝি হয়ো, বৈঠা হতে বসো পাশে-চলো শহরটা ঘুরে আসি আজ হাহাহা।
৪। উঠো নাকো ফুট ওভারে
চলো জলে নামি
মুগ্ধতার এমন সময়টুকু
আমার কাছে দামী।
ভিজে ভিজে হবো যে পার
রাস্তার এপাড় ওপাড়
ছাতা ধরো মাথার উপর
ফুল যেনো না ভিজে খোঁপার।
৫। তুমি সার্জেন্ট হও এ বেলা, জল থই থই রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত উঁচিয়ে থামিয়ে দাও সব যান-তবে আমার রিক্সাটা ছেড়ে দিয়ো-ভিজে যাবো জ্বর আসলে বলো তোমার কি আর ভাল লাগবে গো wink
৬। দুরবিন লাগাও চোখে। দেখো কত অসহায় মানুষ-অথচ ওরাই নোঙরা করেছিল রাজপথ। তুমি কি তাদের মতই। তবে এবার থেকে সাবধান হও পুরুষ-নোংরাগুলো ডাস্টবিনে ফেলো কিন্তু।
৭। কাগজের নৌকার প্রহরগুলো অতীত ডহরে। তাতে কি চলো আজ রঙধনু রঙ নৌকা বানাই-ছেড়ে দেই শ্রাবণ ধারায় । কিছুটা ক্ষণ চলো মুগ্ধতা কুঁড়াই
৮। রিকশার উড খুলে দাও- জ্যামে আটকা জীবন বড্ড দুর্বিসহ- তবে একটু বৃষ্টি পড়ুক গড়িয়ে চোখের পাতায়। তুমি কেবল ভালবেসে হাত রেখো আলতো আমার কাঁধে
৯। ডুবে যাবে ভয় পাচ্ছো-আরে বাপু অভিজ্ঞতা অর্জন করো কিছু্ তুমি কি রোমাঞ্চিত হতে চাও না। এইতো সুযোগ একটু রোমাঞ্চ নিয়ে আসো মনে-বিরক্তি ঝেড়ে ফেলে দাও। উপভোগ কর কষ্ট অথবা সুখ।
১০। ছাতা দিয়ো মাথার উপর
জলে হাঁটবো শ্রাবণ দুপুর
বৃষ্টি পড়ুক টাপুর টুপুর
নগ্ন পায়ে বাজুক নুপূর।
১১। কিছুটা প্রহর সপে দাও নিজেকে সময়ের কাছে। হুদাই হা হুতাশ করে লাভ নেই। যা হওয়ার তাতো হবেই। কেবল মেনে নিতে শেখো।
১২। আামর শহর আজ ভেসে যাক অঝোর ধারায়। বন্যায় ডুবে যাক-তুমি ডিঙি বেয়ে চলে এসো মনের ঘাটে। আমি আছি অপেক্ষায়-শহর চষবো আজ। যত জরাজীর্ণ সব ধুয়ে দেই চলো
১৩। জলে ভেজার প্রহর আমার-মন জলে থই থই
ও বন্ধু আমায় ছেড়ে-গেলা তুমি কই।
ছাতা মাথায় নিরিবিলি-জলের পথে হাটো
চলে এসো এখানটাতে-কেনোই বা পচা জল ঘাটো।
১৪।
শাপলা ফোটা মতিঝিলে
চলো পা ডুবিয়ে বসি
হেটে হেটে চলো বন্ধু
এই শহরটা আজ চষি।
১৫।
অলিগলি জলের তরে
পথ হারাইয়ো না বন্ধু
আমার জন্য এসো তুমি
পার হয়ে সাত সিন্ধু।
১৬।
নারিকেলে পাতার ফাঁকে শ্রাবণ জলের নৃত্য-আহা যেনো রূপালী নদী আমার শহরটা। তুমি এসে দেখে যেয়ো। আচ্ছা তোমার শহরও কি আজ জলে ডুবে গেছে?
১৭। ভাবছো বুঝি -আমার নীড়ের দখিনপাশেই ইয়া বড় স্বচ্ছ জলের দীঘি? হুম-ভাবনাটা মোটেও অমূলক নয়গো- তুমি একটু চোখ বুলালেই দেখতে পাবে সে জলে শাপলা ফুটে আছে। এসো পা ছুঁয়াই দীঘির জলে।
১৮। বৃষ্টি পড়ছে- এসো বারান্দায়-হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দেই বৃষ্টির জল। শিহরণের বেলা যায় বয়ে যায়। পারলে দুই কাপ কফি বানিয়ে নিয়ে এসো। তৃপ্তিতে ঠোঁট ছুঁয়াই কফির পেয়ালায়।
১৯। মার্সিডিজে বসে তুমি আর বুঝবে বন্ধু অসহায়দের দু:খ । যারা ফুটপাতে শোয়-খায় -তাদের আবাসন আজ কোথায় শুনি। কে দিবে তাদের মাথা গুজার ঠাঁই। মাঝে মাঝে নেমে পড়-উপভোগ কর কষ্ট। আর ওদের জন্য ভাবো একবার একটুস খানি। হুম
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৫