ঢাকার আড়ং এ আড্ডা মারতাম তখন। মুডের উপর নির্ভর করে কোনদিন ফিটফাট বাবু, কোনদিন Three-Quarter পড়েই বের হয়ে যেতাম পায়ে একটা চপ্পল চাপিয়ে। তেমন ই একটা দিনের কথা। আড্ডা মারছি আমি আর আমার ফ্রেন্ড। তো আমাদের অভ্যাস একটু খারাপ। পকেটে টাকা থাকলে আমাদের খালি খিদা পায়। তো ওইদিন পকেটে সেই টাকা দুজনের থেকে। চলে গেলাম খেতে ধানমন্ডি। সেখানে তাওয়া নামে একটা রেস্টুরেন্টে আছে। সাধারণত আমরা গ্রিল খেয়ে থাকি, অন্য একটা রেস্টুরেন্টে, ফু-ওয়াং শর্মা নাম সেটার। আমাদের দুজনের পছন্দের খুব তাদের গ্রিল। যায় হোক, সেদিন আমরা গ্রিল না খেয়ে ঠিক করলাম কাচ্চি-তেহারি খাব। গেলাম তাওয়ায়। ২ তালায় উটে বসেই আছি। কোন খবর নেই কারও। ২/৩ মিনিট পর একজনকে দেখে অর্ডার দিলাম। তারপর কোক-পেপসির জন্য ও ডাকতে হল আবার। যাই হোক, তেহারি এবং কাচ্চি দুটোই খেলাম সেদিন। এবং দুটোই ভাল লাগল।
এই কাহিনীর সপ্তাহ খানেক পরের ঘটনা। আবার আড্ডা মারছি আড়ং- এ। আজকে পকেটে খুব একটা টাকা নেই। আমি সরাসরি ভার্সিটি থেকে চলে গিয়েছি আড্ডা মারতে। সকাল থেকে কিছু খাওয়া হয় নি। পকেটে টাকা কম বলে। কিন্তু ভার্সিটি গিয়েছিলাম গিলে পুরো ফিট। আরও শীত পড়া শুরু করেছে তখন। তো আমি এখন শার্ট-প্যান্ট ইন করে টাই পড়ে কিছু একটা। আরও চোখে ছিল রিমলেস চশমা দুজনের ই। আমার ফ্রেন্ড ও ওইদিন ফিটফাট হয়ে বের হয়েছিল। কিন্তু তার পকেট ও প্রায় গড়ের মাঠ। তবু ও সকাল থেকে না খেয়ে ছিলাম বলে সে নিয়ে গেল আমাকে তাওয়ায়। চল তেহারি খামু। যা আছে তা দিয়ে দুজনের হয়ে যাবে। পরেরটা পরে দেখা যাবে। তো গেলাম। মজার বিষয় হল এবার সম্পুর্ণ অন্য রকম অতিথিয়তার সম্মুখীন হলাম। শুরু থেকেই স্যার স্যার, নিজে থেকে অর্ডার নেয়া, এসে এসে খবর নেয়া কোন কিছু লাগবে কিনা। ভাল করে খেয়াল করার পর realize করলাম, শেষেরবার যে ছিল আমাদের টেবিলের ওয়েইটার , এবার ও সেই। মজার বিষয় হলো আগের বার আমাদের পকেটভর্তি টাকা ছিল। এবার আমাদের পকেট ধরতে গেলে ফাকা-ই।
আমরা মানুষরা মানুষকে বিচার করি তার জামাকাপড় দিয়ে। যতই বলি না কেন ''Don't judge a book by its cover'' , কাজটা আমরা আমাদের অজান্তেই করে ফেলি। যদি ও কাজটা করা উচিত না। কিন্তু কি আর করা???
মাঈদুল ভাইয়ের শেষ পোস্টটি দেখে কাহিনীটা মনে পড়ল। ভাবলাম শেয়ার করি। তাই করলাম।
ভাল থাকবেন সবাই। শুভকামনা।
১. ০৭ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:০০ ০
মানুষ এমনই। হয়ত দেখা যাবে আমি-আপনিও এমনই করি কখনও কখনও।