৭ম অংশের পরঃ
(বিয়ের দিন ৩)
বিয়ের অনুষঠান ভালভাবেই সম্পন্ন হল। বিয়ের আংটি পরানোর পরে রেজা সাহেব নীরার হাত ধরে মুঠি করে দিলেন, মনে হয় এংগেজমেনটের আংটি পড়ে যাওয়ার কথা কেউ উনাকে বলে দিয়েছে।
গাড়ীটা যখন নীরার জামাইর বাড়িতে এসে পৌঁছল তখন রাত ১২ টার বেশি। সব আনুষঠানিকতা শেষ করতে করতে রাত প্রায় ২ টা। এর মধ্যে আবার এক দূর সম্পর্কের ভাবী রেজা সাহেবকে ঠাট্টা করে বলেছিল নতুন বউ কে নাকি কোলে করে বাড়িতে ঢুকাতে হয়। এই নিয়ে নীরার শাশুড়ি সবার সামনেই তাকে বলেছে “ এই সব বেয়াদবি অন্য কথাও করবা, যেখানে গুরুজনেরা থাকে সেখানে এই সব কথার মানে কি?” এর পরে কেউ আর কিছু বলার অথবা অন্য কোন মজা করার ও সাহস পাইনি। নীরার শাশুড়ি আম্মা চলে যাবার পরে ওর দেববের বউ আর ছোট ননদ এসে রাতে পরার একটা মাক্স্যি জাতীয় জিনিষ দিয়ে গেছে, জিনিসটা নীরার একদম পছন্দ হয়নি, কেমন বেশি খোলা খোলা আবার কাপড়টা ও ট্রান্সপারেন্ট। আবার যাওয়ার সময় দেবর আর ননদের জামাই নীরার সামনেই জোরে জোরে বলে গেছে “ভাইয়া বিড়াল কিন্তু প্রথম রাতেই মারতে হয়।“ নীরার কাছে সব কিছুই খুব অদ্ভুত লাগছে। এই বাড়ির লোক জন সব অভদ্র ধরনের।
সবাই চলে যাওয়ার পর শুধু থেকে গেল রেজা সাহেবের মামার ছেলে। রেজা সাহেব নীরাকে বলল ঃ “তুমি রাতে একা আমার সাথে ভয় পেতে পারো ভেবে সুমন কে আজকে রাতে থাকতে বলেছি, কালকে ও চলে যাবে। চল তোমাকে আমাদের বাড়িটা ঘুরে দেখাই।“ রেজা সাহেব নীরার হাত ধরে বারান্দায় নিয়ে গেল। জীবনে প্রথম কোন ছেলে ওর হাত ধরল। নীরার কেমন অসহস্থি হচ্ছে । কিন্তু বারান্দায় এসে মনটা ভাল হয়ে গেল । কারন বারান্দাটা অসম্ভব সুন্দর। সাথে বিয়েবারির মরিচ বাতিতে কেমন একটা স্বর্গীয় ভাব চলে এসেছে। নীরার ইচ্ছে হচ্ছিল ওখানেই দাড়িয়ে থাকে সারা রাত। কিন্তু রেজা সাহেব বল্লেন “ চলো ঘুমাতে যায়। বেডরুমে এসে রেজা সাহেব বল্লেন “ তুমি ফ্রেস হয়ে শাড়ি চেঞ্জ করে নাও, আমি পাশের রুমের ওয়াশ রুম ইউস করছি। তুমি কি রাতে মুনিয়ার (নীরার দেবরের বউ।) দেওয়া লঞ্জরে পরতে চাও?” নীরা জীবনে প্রথম এই শব্দটা শুনল। নীরা বললঃ “ আমি রাতে পরার জন্য সালওয়ার কামিজ এনেছি।“ রেজা সাহেব হেসে অন্য ঘরে চলে গেলেন চেঞ্জ করার জন্য। বাথ্রুমে ঢুকে নীরা চিন্তায় পড়ে গেল। মুখটা ধোয়া কি ঠিক হবে? সব মেক আপ তো যাবে উঠে! বড় আপা বলেছিল রাতে মুখে মেক আপ নিয়েই ঘুমাতে, কারন মেক আপ ছাড়া নীরাকে দেখে নাকি রেজা সাহেব বলবে “ বউ কি বদলায় গেল নাকি?” নীরা মেক আপ না তুলেই ঘুমাতে গেল। রেজা সাহেব এসে ওর পাশে শুয়ে পড়ল । নীরার ঘুম আসছে না । এই আজব লোক ঘুমের মধ্যে আবার কিছু না করে বসে। রেজা সাহেব এদিক ওদিক করছে। নীরা ঘুমের ভান করে শুয়ে থাকে। মনে মনে ভাবে “লোকটা খুব একটা খারাপ না।“
....................................................................................চলবে
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৯