somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গোল্লাছুটের দল

২৭ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই শহরে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের তুখোড় স্বপ্নবাজ বন্ধুরা আর কেউ নেই বললেই চলে । ২০০৯-২০১৮ এ সময়টা জুড়ে আমরা এক সাথে পায়ে পায়ে হেঁটেছি, গান ধরেছি, উল্লাসে কেঁপেছি, মিছিলে নেমেছি, তিতুমীর কলেজের মাঠে কার্ড খেলেছি, সিঁড়িতে, মহাখালী ওয়ারলেস, ব্যাংক এশিয়ার সামনে চায়ের দোকানে, বটতলা, ব্রাক ইউনিভার্সিটির সামনে, গুলশান-হাতিরঝিল লেকে কত শত হাজার গল্প ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, সেইসব গল্পগুলো এখন পুরো শহরময় জুড়ে প্রতিটি ছাত্রের ভিতর ঘুরছে।
অনার্সের পর সর্বপ্রথম রাজেল হুট করে চাকরি নিয়ে ময়মনসিংহ চলে গেল যা অবিশ্বাস্য লেগেছে কারণ তার পুরো ভাবনাজুড়ে একটা সরকারি চাকরির চেষ্টা, সবাইকে ছেড়ে বলা যেতে পারে হঠাৎ করে এই শহর থেকে নীরবে চলে গেল রাজেল। রাজেলের বাসাটা ছিলো আমাদের আস্তানা, হৈইচৈই করার আঁতুড়ঘর। সম্প্রতি রাজেল বিয়ে করেছে, নতুন সংসার নিয়ে সে ভালোই আছে।
সুজন তার বাবার অসুস্থ্যতার (আংকেল এখন আর আমাদের মাঝে নাই, নিশ্চয় তিনি ওপারে ভালো আছেন) বদৌলতে চাঁদপুর চলে গেল।
শান্তও কাউকে না জানিয়ে এই শহর হুট করে ছেড়ে দিল, পরে জানতে পারি কোন একটা কারণে তাকে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে।
শুভ এই শহরে লড়তে চেয়েছিল, সে পারি নি এটা বলব না, সে এখন বরিশাল। নিজ উদ্যেগে কিছু করতে চায়।
জুয়েল এখনো একটা সরকারি চাকরি আশায় প্রাণপনে লড়ে যাচ্ছে, মামার বাসা ছেড়ে এখন গাজীপুর থাকে।
সজল ঢাকার উত্তরার স্থানীয় বাসিন্দা হলেও চাকরিসূত্রে এখন নারায়ণগঞ্জ থাকে।
তুহিন টঙ্গীর স্থানীয় বাসিন্দা, উত্তরায় চাকরি করে। ভালোই আছে সে।

হ্যাঁ, বন্ধুদের মধ্যে এখনো অব্দি একমাত্র সফল মানুষ হিসেবে বলা যেতে পারে সিদ্দিককে। তার জীবন সংগ্রামের কাহিনী প্রতিটি পিছিয়ে পড়া মানুষদের অনুপ্রেরণা দিবে, এখনো অব্দি সিদ্দিকই একমাত্র যে সরকারি চাকুরি পেয়েছে, পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর হয়ে এখন রাজশাহীর সার্দায় ট্রেনিংয়ে আছে।
মাহবুব সরকারি চাকুরির আশায় আশায়, এখন চাকরির সুবাদে ফরিদপুর আছে।
ফারুক ছাত্রজীবন থেকে একটা স্কুলে শিক্ষকতা করে, এখন এর পাশাপাশি সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।
লিটন ছাত্রজীবন থেকে টিউশনি করায় এখন এর পাশাপাশি সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।
মিন্টু সদ্য বিয়ে করেছে, যতটুকু জানি টিউশনি করায়, সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছে।
আমাদের সব বন্ধুদের মধ্যে একজনই বান্ধবী ছিল, চাঁদনী। কোন এক অভিমানে তার সাথে আর কথা হয় না, শুনেছি অনার্সের পর চাকরি নিয়েছে, নিশ্চয় সে ভালোই আছে।
সম্ভবত ২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে, সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্রী মিতুলের সাথে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। সে আমার ডিপার্টমেন্টে পড়ে। তাকে ভীষণ রকম ভালোবাসতাম। মানে ব্লাইন্ড লাভ। সবসময় মনের ভিতরে যেভাবে আমার প্রেমিকাকে ভাবতাম, অনেকটা সেরকমই ছিল, ভালো আবৃত্তি করতো, কলেজের তুখোড় মেধাবী ছাত্রী, কবিতাও লিখে,বাঁধন নামে স্বেচ্ছা রক্তদান সংগঠনের সাথে যুক্ত, সংস্কৃতিমনা। গত মার্চের ১৯ তারিখে তাকে প্রেম প্রস্তাব দেওয়ার পর, কিছু না বলে, আমাকে না জানিয়ে গত এপ্রিলের ১৯ তারিখে বিয়ে করে ফেলল, এই কষ্ট আমার আজন্ম সাথী। যেন ট্রমার মধে ঢুকে গেছিলাম, যাইহোক চারপাশের প্রিয়জনদের সহযোগিতায় এখন ভালোই আছি। মিতুল নামেও এই শহরে আর আমার কেউ নেই।
আমিই একমাত্র যে আমারই সুনির্দিষ্ট কোন স্বপ্ন ছিল না, বহুস্বপ্নে মাতাল হয়ে শহরের অলিতেগলিতে ঘুরে বেড়ানোটাই ছিল আমার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। অথচ আমিও তো কোন না কোন স্বপ্ন নিয়ে এই ঢাকা শহরে এসেছিলাম। এখন পেটের তাগিদে আমিও আজ ঢাকা ছাড়ছি....

বিষাদ আব্দুল্লাহ
১৬.০৬. ২০১৯

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১০:৪২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঈদের কবিতাঃ গলির ধারের ছেলেটা

লিখেছেন ইসিয়াক, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৩৬

ঈদের খুশি ঈদের হাসি,করছি হিসেব কত
ভাবছি বসে আঁকছি ছবি যে যার মনের মতো ।

রঙবাহারি জামা জুতো,নানা ঢঙে চলা
অকারণে হেসে হেসে নানান কথা বলা ।

গলির ধারের সেই ছেলেটি যে সদা... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেই যে আমার নানা রঙের ঈদগুলি ......

লিখেছেন অপ্‌সরা, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪২


পেছনে ফিরে তাকালে আমি সবার প্রথমে যে ঈদটার কথা স্মরন করতে পারি সেই ঈদটায় আমি পরেছিলাম আমব্রেলা কাট নীলচে বলবল রং একটা জামা এবং জামাটা বানিয়ে দিয়েছিলেন আমার মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেগেছে বাংলাদেশ: কমে গেছে আগ্রাসী ভারতের সীমান্ত হত্যা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:৫৬

জেগেছে বাংলাদেশ: কমে গেছে আগ্রাসী ভারতের সীমান্ত হত্যা

জুলাই ২০২৪-এর বিপ্লবের পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের চিত্র আমূল বদলে গেছে। এখন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ভারতের বিএসএফ-এর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদার সঙ্গে কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের সেকাল এবং একালের ঈদ

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ৩১ শে মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:১৩



কানাডার আকাশে ঈদের চাঁদ উঠেছে কিনা সেটা খুঁজতে গতকাল সন্ধ্যায় বাসার ছাদে বা খোলা মাঠে ছুটে যাইনি। শৈশবে সরু এই চাঁদটা আকাশে দেখতে পেলেই দেহকোষের সবখানে একটা আনন্দধারা বয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঈদ মোবারক!

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩১ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:০৪



ঈদ মোবারক!

ঈদ উল ফিতরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন! এক মাসের সংযম ও আত্মশুদ্ধির পর এসেছে খুশির ঈদ। ঈদ মানেই আনন্দ, ভালোবাসা ও একসঙ্গে থাকার মুহূর্ত। আসুন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×