somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাদশাহি গণতন্ত্র ( একটি অরাজনৈতিক রূপক অনুগল্প । )

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সৌদি বাদশা খুবই চিন্তিত । চিন্তায় তার মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করছে । পারছেন না । মাথায় চুল নাই । থাকেই বা কি করে । এই টেনশনে নিয়মিত প্রকৃতির ডাক আসে না । পেট থাকে অন্ধকার , মাঝে মাঝে বর্য পাত হয় । মাথা দিয়ে গরম ভাপ বের হয় । ভাপের সাথে চুলগুলো উঠে গেছে । ঘটনা খুবই গুরুতর ।

সৌদি বাদশার চিন্তার কারন হল নির্বাচন । তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশে গণতন্ত্র দিবেন । দেশের মানুষকে চড় থাপ্পড় দিতে পারছেন আর গণতন্ত্র দিতে পারবেন না এইটা কেমন কথা । তার এই কাজে মার্কিন মুল্লক তো আনন্দে বারোখানা । বলা হয়েছে একবার নির্বাচন হয়ে গেলে তাকে নোবেল পুরুস্কার দিয়ে দিবে । ঘরে এনে এই পুরুস্কার যত্ন করে রাখতে হবে ।

তিনি আগ পাছ না ভেবেই নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন । জিতবেন তো তিনি । চিন্তা নেই । কিন্তু ঘটনা হল উল্টা । তার বিরোধী দল এসে হাজির । চিৎকার চেচামেচি করতে লাগলো । এরাও নির্বাচন করবে । এইটা তাদের জন্মগত অধিকার । এই অধিকার ছাড়া যাবে না । এর মধ্যে গোয়েন্দা বাটবার গুলা তাকে জানালো নির্বাচনে তার দল হারবে । জনগন তার মুখে থুতু দেয়ার জন্য গত এক মাস ধরে থুতু ফেলে নি ।

এই কারনে তার ঘুম নেই । পেটের মধ্যে ডাকাডাকি । মার্কিন মুল্লুকের কথা শুনে তিনি কি ভুলটাই না করেছেন । নোবেল পুরুস্কার পাওয়ার লোভে দেশ ছেড়ে দিচ্ছেন । এখন কি করা যায় । উপায় তো একটা বের করতে হবে । এমন কোন উপায় যাতে ব্যাঙ ও মরে লাঠিও ভাঙ্গে । পরে যাতে শব্দ করতে না পারে ।

তার এক গোয়েন্দা পরামর্শ দিলেন । বললেন " হুজুর এ আলা সমাধান আছে । "
~ কি সমাধান ? জলদি বল ।
~ হুজুর এ আলা আপনি ভারতের রাষ্ট্রদুত এর পরামর্শ নিন । এরা পৃথিবীর সব থেকে বড় গণতন্ত্র । গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চোরাই বুদ্ধিতে হাফেজ ।

বাদশা দেখলেন পরামর্শ ভালো । তার একটা ধারণা ছিল তার গোয়েন্দারা গাধা । ঘাস খায় । শুকনা ঘাস তাই মাথায় বুদ্ধি নাই । এইটার বুদ্ধি আছে ।

তিনি ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ডাকলেন । খাতির যত্ন করে বসালেন । দুইটা আফ্রিকান সুন্দরি উপহার দিলেন । এদের গায়ের রং কালো তবে তেজ খুবই । রাষ্ট্রদূত খুশি হলেন ।

~ হুজুরে আলা আপনার এই গভীর সমস্যার সমাধান দিতে পারে একজন ।
~ কে সে ? নাম বলেন । আর বার বার দাঁত বের করবেন না । আপনার দাতের রং ময়লা । আমার বেগম ময়লা দাঁত পছন্দ করেন না । আমিও করি না ।

রাষ্ট্রদূত মনে মনে বললেন " এইটা তোর কয় নম্বর । তোর বেগমের তো ঠিক ঠিকানা নাই । পরকীয়া করে ।"

~ হুজুর এ আলা আপনার সমস্যার সমাধান দিতে পারেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত । পৃথিবীতে একমাত্র তারাই এই ধরণের নির্বাচন করার দুর্লভ অভিজ্ঞতা রাখে ।

বাদশা বাংলদেশের রাষ্ট্রদূতকে খবর দিলেন । রাষ্ট্রদূত দুইটা আলবেনীয় সুন্দরী পেয়ে খুবই খুশি । আবেগে আপ্লুত হয়ে বললেন

~ হুজুরে আলা চিন্তার কিছু নেই । কিছু সহজ কাজ করলেই সব সমাধান হয়ে যাবে ।
~ তেনা পেঁচাইয়ো না মিয়া । কি সহজ কাজ এইটা খোলাসা করো ।
~ হুজুর আপনি প্রথম যে কাজ করবেন তা হল আপনার দেশের সকল মিডিয়া এর সম্পাদক কে বাড়ি গাড়ি নারী উপহার দিয়ে কিনে নেন । এইগুলারে বলেন বাবারা তোমরা নাচ গান করো । আর আমি যেইটা বলবো সেইটা প্রচার করবে । ভিন্ন কিছু হলে পুরুষত্ব নিয়ে নিব । এরা সব চুপ মেরে যাবে ।

~ হুম বুঝলাম । তারপর ?

~ এর পর বিরোধী দলের প্রধান ছাড়া তার সকল সাঙ্গ পাঙ্গকে ধরে জেলে পুরবেন । যে বেশি লাফাবে তাকে হুমকি দিবেন । বোমা মারার কেস দিবেন । জেলে মশার কামড় খাবে । ব্যাটারা বুঝবে নির্বাচন কাকে বলে ।

~ দেশে তো তখন হরতাল হবে । মিছিল হবে ।

~ চিন্তা নাই হুজুর । বলবেন সব কাজ জঙ্গিবাদীরা করছে । এদের হাত পা ভাঙ্গা দরকার । মিডিয়া তখন আপনার নামে স্লোগান দিবে ।

~ আমার বন্ধু আমেরিকা মুল্লক কি বলবে ?

~ এইটা নিয়ে ভাববেন না হুজুর । এরা কিছুদিন চিল্লাবে । পরে গলা বেথা হয়ে গেলে চুপ মারবে ।

~ সাধু সাধু । কি বুদ্ধি তোমার রাষ্ট্রদূত । আমি তো এতদিন বাংলাদেশীদের গাধা ভাবতাম । পোশাক বানানো ছাড়া আর কিচ্ছুই পারে না । তোমরা তো দেখি সক্রেটিস ,লাস্কি সব্বাইকে লাচ্ছি খাওয়াই দিবা । আসো আসো , কাছে আসো তোমার হাতে চুম্বন করি । এই কে আছিস এই হাবীব বুদ্ধিমান বাঙ্গালীকে আরও দুইটা ইরানী রূপবতী হুর উপহার দে ।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত চারটি রূপবতী নারী নিয়ে বাড়ির দিকে চললেন । বাদশার চিন্তা তখন কমেছে । তিনি সচিবকে বললেন " মিডিয়া ডাকো । তার আগে আমি আমি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে আসি । মেঘ পরিষ্কার করার দরকার । বড়ই জ্বালাতন করছে । "
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×