সৌদি বাদশা খুবই চিন্তিত । চিন্তায় তার মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছা করছে । পারছেন না । মাথায় চুল নাই । থাকেই বা কি করে । এই টেনশনে নিয়মিত প্রকৃতির ডাক আসে না । পেট থাকে অন্ধকার , মাঝে মাঝে বর্য পাত হয় । মাথা দিয়ে গরম ভাপ বের হয় । ভাপের সাথে চুলগুলো উঠে গেছে । ঘটনা খুবই গুরুতর ।
সৌদি বাদশার চিন্তার কারন হল নির্বাচন । তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশে গণতন্ত্র দিবেন । দেশের মানুষকে চড় থাপ্পড় দিতে পারছেন আর গণতন্ত্র দিতে পারবেন না এইটা কেমন কথা । তার এই কাজে মার্কিন মুল্লক তো আনন্দে বারোখানা । বলা হয়েছে একবার নির্বাচন হয়ে গেলে তাকে নোবেল পুরুস্কার দিয়ে দিবে । ঘরে এনে এই পুরুস্কার যত্ন করে রাখতে হবে ।
তিনি আগ পাছ না ভেবেই নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন । জিতবেন তো তিনি । চিন্তা নেই । কিন্তু ঘটনা হল উল্টা । তার বিরোধী দল এসে হাজির । চিৎকার চেচামেচি করতে লাগলো । এরাও নির্বাচন করবে । এইটা তাদের জন্মগত অধিকার । এই অধিকার ছাড়া যাবে না । এর মধ্যে গোয়েন্দা বাটবার গুলা তাকে জানালো নির্বাচনে তার দল হারবে । জনগন তার মুখে থুতু দেয়ার জন্য গত এক মাস ধরে থুতু ফেলে নি ।
এই কারনে তার ঘুম নেই । পেটের মধ্যে ডাকাডাকি । মার্কিন মুল্লুকের কথা শুনে তিনি কি ভুলটাই না করেছেন । নোবেল পুরুস্কার পাওয়ার লোভে দেশ ছেড়ে দিচ্ছেন । এখন কি করা যায় । উপায় তো একটা বের করতে হবে । এমন কোন উপায় যাতে ব্যাঙ ও মরে লাঠিও ভাঙ্গে । পরে যাতে শব্দ করতে না পারে ।
তার এক গোয়েন্দা পরামর্শ দিলেন । বললেন " হুজুর এ আলা সমাধান আছে । "
~ কি সমাধান ? জলদি বল ।
~ হুজুর এ আলা আপনি ভারতের রাষ্ট্রদুত এর পরামর্শ নিন । এরা পৃথিবীর সব থেকে বড় গণতন্ত্র । গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চোরাই বুদ্ধিতে হাফেজ ।
বাদশা দেখলেন পরামর্শ ভালো । তার একটা ধারণা ছিল তার গোয়েন্দারা গাধা । ঘাস খায় । শুকনা ঘাস তাই মাথায় বুদ্ধি নাই । এইটার বুদ্ধি আছে ।
তিনি ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ডাকলেন । খাতির যত্ন করে বসালেন । দুইটা আফ্রিকান সুন্দরি উপহার দিলেন । এদের গায়ের রং কালো তবে তেজ খুবই । রাষ্ট্রদূত খুশি হলেন ।
~ হুজুরে আলা আপনার এই গভীর সমস্যার সমাধান দিতে পারে একজন ।
~ কে সে ? নাম বলেন । আর বার বার দাঁত বের করবেন না । আপনার দাতের রং ময়লা । আমার বেগম ময়লা দাঁত পছন্দ করেন না । আমিও করি না ।
রাষ্ট্রদূত মনে মনে বললেন " এইটা তোর কয় নম্বর । তোর বেগমের তো ঠিক ঠিকানা নাই । পরকীয়া করে ।"
~ হুজুর এ আলা আপনার সমস্যার সমাধান দিতে পারেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত । পৃথিবীতে একমাত্র তারাই এই ধরণের নির্বাচন করার দুর্লভ অভিজ্ঞতা রাখে ।
বাদশা বাংলদেশের রাষ্ট্রদূতকে খবর দিলেন । রাষ্ট্রদূত দুইটা আলবেনীয় সুন্দরী পেয়ে খুবই খুশি । আবেগে আপ্লুত হয়ে বললেন
~ হুজুরে আলা চিন্তার কিছু নেই । কিছু সহজ কাজ করলেই সব সমাধান হয়ে যাবে ।
~ তেনা পেঁচাইয়ো না মিয়া । কি সহজ কাজ এইটা খোলাসা করো ।
~ হুজুর আপনি প্রথম যে কাজ করবেন তা হল আপনার দেশের সকল মিডিয়া এর সম্পাদক কে বাড়ি গাড়ি নারী উপহার দিয়ে কিনে নেন । এইগুলারে বলেন বাবারা তোমরা নাচ গান করো । আর আমি যেইটা বলবো সেইটা প্রচার করবে । ভিন্ন কিছু হলে পুরুষত্ব নিয়ে নিব । এরা সব চুপ মেরে যাবে ।
~ হুম বুঝলাম । তারপর ?
~ এর পর বিরোধী দলের প্রধান ছাড়া তার সকল সাঙ্গ পাঙ্গকে ধরে জেলে পুরবেন । যে বেশি লাফাবে তাকে হুমকি দিবেন । বোমা মারার কেস দিবেন । জেলে মশার কামড় খাবে । ব্যাটারা বুঝবে নির্বাচন কাকে বলে ।
~ দেশে তো তখন হরতাল হবে । মিছিল হবে ।
~ চিন্তা নাই হুজুর । বলবেন সব কাজ জঙ্গিবাদীরা করছে । এদের হাত পা ভাঙ্গা দরকার । মিডিয়া তখন আপনার নামে স্লোগান দিবে ।
~ আমার বন্ধু আমেরিকা মুল্লক কি বলবে ?
~ এইটা নিয়ে ভাববেন না হুজুর । এরা কিছুদিন চিল্লাবে । পরে গলা বেথা হয়ে গেলে চুপ মারবে ।
~ সাধু সাধু । কি বুদ্ধি তোমার রাষ্ট্রদূত । আমি তো এতদিন বাংলাদেশীদের গাধা ভাবতাম । পোশাক বানানো ছাড়া আর কিচ্ছুই পারে না । তোমরা তো দেখি সক্রেটিস ,লাস্কি সব্বাইকে লাচ্ছি খাওয়াই দিবা । আসো আসো , কাছে আসো তোমার হাতে চুম্বন করি । এই কে আছিস এই হাবীব বুদ্ধিমান বাঙ্গালীকে আরও দুইটা ইরানী রূপবতী হুর উপহার দে ।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত চারটি রূপবতী নারী নিয়ে বাড়ির দিকে চললেন । বাদশার চিন্তা তখন কমেছে । তিনি সচিবকে বললেন " মিডিয়া ডাকো । তার আগে আমি আমি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে আসি । মেঘ পরিষ্কার করার দরকার । বড়ই জ্বালাতন করছে । "