বাংলাদেশ নামক একটা দেশ ছিল । এই দেশ ছিল জনসংখ্যায় ভর্তি । অধিক জনসংখ্যা হল গাধার পাল । গাধার দল চালানোর জন্য নেতা কর্মী দরকার । তাই দেশে বহু নেতা কর্মী ছিল । এদের আকার আকৃতি পাহাড়ের মতন । মন হল বালি কনা । পরের টাকা খাওয়া হল এদের ধর্ম । গায়ের রং অন্ধকার ।এই অন্ধকার মুখের ছবিতে পথ ঘাট ভর্তি । দিনে দিনে এদের খাবারের পরিমান বাড়লও । গাধা জনগনের জীবন তখন যায় যায় । ঘরের বউ এর সোনা আর বাইরের প্রেমিকার হিরা সব নেতা নেত্রিরা নিয়ে যায় । বউ ও ব্যাজার , প্রেমিকা ও ব্যাজার । কি করা যায় , কি করা যায় । জনগন নিরুপায় । হাজার হোক গাধা জনগন ।
অবশেষে সবাই মিলে একদিন দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে গেলো । মহা ঝামেলার পর তিনার দেখা মিল্ল । তিনি স্ত্রীদের নিয়ে বেস্ত ছিলেন এই জন্য বিলম্ব । সবাই মিলে রাষ্ট্রপতির পা ধরে বসলো । তিনি বয়স্ক মানুষ , পা গেলে তো বিপদ , পা পাবেন না । তিনি তো আর ভেড়া না ,যে কেউ একজন কচ করে পা কেটে নিয়ে গেলো আর পরদিন সকালে আরেকটা পা গজাবে । হাঁটি হাঁটি পা পা করে প্রকিতির ডাকে সাড়া দিবেন ।তা তো হবে না । তাকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে যেতে হবে ।
~ বাবারা তোদের কি অভিযোগ ?
~ আর বলবেন না হুজুর আমাদের জীবন তো যায় যায় । আমাদের বউ ঘরে ঢুকতে দেয় না । পরকীয়ার প্রিয়া ছুতে দেয় না ।
~ কেন রে , ঘটনা কি ?
~ ঘটনা খুবই খারাপ । সোনা দানা হিরা সব নিয়ে যাচ্ছে । নেতা কর্মীদের জালায় তো আর জীবিত থাকতে পারলাম না হুজুর । আমাদের সংসার জীবন , পরকীয়া জীবন যায় বললেই চলে । আমরা তো বরবাদ হয়ে গেলাম হুজুর ।
~ কেন রে ? কুকুর আর চোর তাড়ায় না নাকি রে ?
~ না না । এরা তো কুকুরকেই উল্টা কামড় দেয় । কুকুর দেখে জাত তো একই । চেহারা ভিন্ন । কিসের এতো বিরোধ । করি বন্ধুত্ব ।
~ আহা হা হা । কি বিপদ কি বিপদ ? এখন উপায় ?
~ উপায় তো এখন আপনাকেই বের করতে হবে হুজুর । নইলে আমরা এদের বস্তায় করে ধরে এনে আপনার বাড়িতে ছেড়ে দেব । যখন কামড় দিবে বুঝবেন বেদনা ।
~ না না না , বাবারা । ঐ কাজ করিস না । আমি বয়স্ক লোক । এখন কামড় দিলে রক্ষা থাকবে না । এমনি আমার বউ রাতে মুখ ভার করে থাকে । তখন পরকীয়া করবে । আচ্ছা দাড়া দেখি একটা উপায় করতে পারি কি না । এখন তোরা যা । বউ বাড়ি একা রেখে আসছিস । কখন কোন কর্মী আসে , কর্ম শুরু করলে তো বিপদ ।
জনগন যার যার বাড়ি চলে গেলো । এই দিকে রাষ্ট্রপতি ভাবতে থাক্লেন । কি করা যায় ? কি করা যায় । কোন উপায় বের হল না । মাঝখান থেকে তার লুজ মোসান শুরু হল । বয়স হয়েছে । বেশি ভাবলে পেটে গণ্ডগোল দেখা যায় ।
তিনি যখন এই গণ্ডগোল দূর করতে তার বাগানে গেলেন । সেখনে গিয়ে তার দেখা হল এক লোকের সাথে । লম্বা চেহারা , নীল চোখ । নানা রঙের কাপড় দিয়ে বানানো পোশাক পরে আছে । কাঁধে একটা ঝোলা । রাষ্ট্রপতি হটাত গন্ধ পেলেন । তিনি ভাবলেন ঝোলা থেকে গন্ধ আসছে । পরে বুঝলেন তিনি এর উৎপাদক ।
~ সেই লোক কথা বলল ।
~ আমি তোমার চিন্তা দূর করে দিতে পারি ।
~ লুজ মসান দূর করবা তুমি ? গাছামো ঔষধ দিয়ে । না বাবা লাগবে না । আমি সিঙ্গাপুর যাবো । তখন চিন্তা দূর হবে ।
~এই চিন্তা না ।
~ তবে কোন চিন্তা ?
~ নেতা কর্মী দের ভাগানোর চিন্তা ।
~ আচ্ছা আচ্ছা । তাহলে তো ভালোই হয় । কি করে ভাগাবে ? ওদের মুখে কি লুজ মোসানের পদার্থ দিবে । গাড়ও হলুদ রং ।
~ সে আমার ব্যাপার ।
~আচ্ছা না হয় করলে । বিনিময়ে কি দিতে হবে ?
~ আপনার বউ এর সাথে পরকীয়ার স্বীকৃতি ।
~ আচ্ছা না হয় দিলাম । বউ তো অনেক কয়টা । নিও না হয় একটা। আমার বয়স হয়েছে । সবাই খুশি হয় না । তারাও খুশি হল । ক্ষতি কি তাতে । তো বাবা কাজ শুরু করবে কখন থেকে ?
~ এখন থেকে ।
এই কথা বলেই সেই লোকটা রাস্তায় নেমে পড়ল । তার ঝোলা থেকে একটা বাঁশি বের করলো । মোহিনী সুরে বাঁশি বাজলো । নেতা কর্মীরা ডাস্টবিন থেকে , ড্রেইন থেকে , ভাগাড় থেকে বের হয়ে আসলো । সে কি নাচানাচি । কি স্লোগান । সবাই মিলে বাঁশি ওয়ালার পিছু নিল । বাঁশি ওয়ালা তাঁদের নিয়ে এগিয়ে গেলেন । গিয়ে থামলেন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে । বাঁশির সুর পরিবর্তন হল । এবার করুণ সুর । এই সুর সইতে না পেরে নেতারা নদীতে ঝাঁপ দিলেন । নদীর ময়লা পানি খেয়ে নেতা কর্মীদের জীবনাবসান ঘটলো ।
সেই দিন রাতে "৭২ টিভি" তে ঘোষণা হল নেতা কর্মীরা সব না ফেরার দেশে গিয়েছেন । কখন আসবে বলা যাচ্ছে না । আমাদের ও যেতে হবে । এখন বিদায় ।
বাঁশি ওয়ালা তার পরকীয়ার বৈধতা পেল । প্রেমিকা কে নিয়ে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি শুরু করলো । সাথে বাঁশির সুর । গাধা জনগন সেই সুরে গান ধরল ।
"আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে
শাঁখে শাঁখে পাখি ডাকে
কতো শোভা চারি পাশে
আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে ।
আজকে মোদের বড়ই সুখের দিন
আজকে মোরা নেতার স্বপ্ন থেকে হয়েছি স্বাধীন
আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে "
(আধুনিক রুপকথা । কেউ বর্তমানের সাথে মিল পেলে তার জন্য নিজেই দায়ী থাকবেন । লেখক নির্দোষ । )