~এই মেয়ে তুমি কি করো ?
~কিছু না ?
~কেন কিছু করো না ?
~এইটা কি আপনাকে বলতে হবে ?
~না বলতে হবে না । এমনি প্রশ্ন করলাম । মানুষের স্বভাব প্রশ্ন করা । তবে সব প্রশ্নের উত্তর না দিলেও চলে ।
~আপনি কি করেন ?
~আমি হাঁটাহাঁটি করি ?
~কেন ?
~সত্য কারন বলবো না মিথ্যা কারন বলবো ?
~দুইটাই বলেন । আগে মিথ্যা বলেন পরে সত্য বলেন । সত্য কথা শেষে বলতে হয় ।
~মিথ্যা কারন হল ওজোন কমাবো । বেশি ওজোন ক্ষতিকর । হাঁটাচলা করা বিরাট সমস্যা । ক্ষুধা বেশি লাগে । পয়সা খর্চা বেশি হয় ।
~এইবার সত্য কারন বলেন । শত ভাগ সত্য বলবেন । ভ্যাজাল দিবেন না । মিথ্যা যেমন বিশুদ্ধ বলতে হয় সত্য তেমন বিশুদ্ধ বলতে হয় ।
~আচ্ছা বিশুদ্ধ সত্য বলবো । শত ভাগের সাথে অতিরিক্ত শত ভাগ ফ্রী । সত্য কারন হল আমি ভালো মানুষ খুঁজি ।
~ভালো মানুষ খুঁজেন মানে কি ? মানুষের আবার ভালো খারাপ কি ? সব সমান । সবাই মেয়ে দেখলে হাত কচলায় । শব্দ করে কচলায় । আমি এই শব্দ টের পাই । এই শব্দ নিয়ে আমার কারবার । আপ্নেও কচলাইবেন । আমি শব্দ শুনবো ।
মফাজ্জল সাহেব মেয়েটির দিকে ভালো করে তাকালেন । বেশ লম্বা , ফরসা রং, চিকন ঠোট। মুখ লাল হয়ে আছে । মেকআপ দিয়েছে বোধয় । মেয়ে গুছিয়ে কথা বলে । কথার মধ্যে ধার আছে । এই ধার কানে লাগে । কথা কান দিয়ে মাথায় ঢোকে । তখন বেথা বোঝা যায় ।
প্রতিদিন রাতে তিনি ভালো মানুষের খোঁজে বের হন । রাতে তার ঘুম আসে না । সময় কাটানোর দরকার। তাই হাটা হাটি করেন । ভালো মানুষ খোঁজেন । ভালো মানুষ পান না । শরীর ক্লান্ত হয় ।
আজ তিনি পেলেন এই মেয়েকে । গভীর রাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মেয়েদের সাথে কথা বলা আনন্দের ব্যাপার। মফাজ্জল সাহেব এই আনন্দ পাচ্ছেন । মেয়েটি সহজ করে কথা বলছে । চেনা চেনা ভাব । তিনি আবার প্রশ্ন করলেন ......
~এই মেয়ে তুমি কি করো ?
~দেহ বাণিজ্য করি । আপনার লাগবে ? চাহিদা থাকলে বলেন । আমি উপস্থিত । তেনা প্যাঁচায় লাভ নাই । শুধুই ক্ষতি ।
মফাজ্জল সাহেব থতমত খেলেন । তিনি এতক্ষণ এমনটা ভাবেন নি । গভীর রাতে একটা মেয়ে সেজে গুজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে । এইটা তার কাছে অস্বাভাবিক লাগে নি । এখন লাগছে । তিনি পতিতার সাথে দাঁড়িয়ে আছেন । আচ্ছা পতিতার ভালো বাংলা কি ? বরবনিতা। রবীন্দ্রনাথের দেয়া নাম । মানুষটা সবকিছুর সুন্দর নাম দিতে ভালবাসত ।
মফাজ্জল সাহেব মেয়েটার দিকে আবার তাকালেন । মেয়েটার চেহেরায় মায়া মায়া ভাব আছে । লাল মেকআপ মায়াভাব কে আড়াল করেছে । মফাজ্জল সাহেব সিদ্ধান্ত নিলেন আজ রাতে তিনি আর হাঁটবেন না । শরীর ক্লান্ত। শরীরের বিশ্রাম দরকার । যাওয়ার সময় মেয়েটিকে নিয়ে যাবেন । মেয়েটি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবে । আসুক তার সাথে । ক্ষতি কি তাতে ? মেয়েটির ও বিশ্রাম দরকার ।
( অনেকদিন পরের কথা । গভীর রাত । মফাজ্জল সাহেব হাঁটছেন । তার সাথে একটি মেয়েও হাঁটছে । মেয়েটি তার দত্তক কন্যা । অনেকদিন আগে এমন এক রাতে তিনি মেয়েটিকে পান । বাপ বেটি মিলে ভালো মানুষ খুঁজছে । )