রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পৌছালাম প্রায় মধ্যরাতে।এই এয়ারপোর্টের একটা ব্যাপার আমার খুবই ভাল লাগল। সেটা হলো, বেল্ট থেকে ব্যাগ নিয়ে বের হবার সময় লাগেজের ট্যাগ নাম্বার চেক করলো। ইশ্শ বাংলাদেশেও যদি এই ব্যবস্থা থাকতো!

এরপর প্রথমেই গেলাম ডলার ভাংগাতে। সেখানে ওরা বললো যে , যত পারেন এখান থেকেই ভাংগিয়ে নেন, বাইরে কিন্তু রেট কম পাবেন! ভাগ্য ভাল যে আমি লোভে পড়ে বেশি ভাংগাই নাই। পরে দেখলাম যে আমার হোটেলের রেট এয়ারপোর্টের চেয়ে বেশি ছিলো!

কাস্টম পেরিয়ে বের হয়ে আসতেই দেখতে পেলাম আমার নামের প্ল্যাকার্ডধারী মধ্যবয়স্ক লোকটিকে। কাছে গিয়ে পরিচয় দেবার পরও উনাকে একটু দ্বিধান্বিত মনে হচ্ছিলো। আসলে আমার নামটাই এরজন্য দায়ী।


গাড়ীর চালকতো মহা গল্পবাজ ! আমাকে বললো, " ম্যাডাম , আর যাই করেন, প্যারাডাইস হোটেলের বিরীয়ানী খেতে ভুলবেন না যেনো।" হায়দ্রাবাদী বিরীয়ানীর সুখ্যাতির সাথে আগে থেকেই পরিচিত ছিলাম। তবে প্যারাডাইসের ব্যাপারটা জানা ছিলো না।



প্লেনে অনেক ঘুমিয়েছি বলে, গাড়ীতে উঠে নির্ঘুমই ছিলাম। তাছাড়া হায়দ্রাবাদ সম্পর্কে মনে অনেক কৌতূহল ! দুপাশের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি দেখে মনে হচ্ছিলো যেন বাংলাদেশেরই কোনো একটা মফঃস্বল শহরে চলে আসছি।

গাড়ী উঠলো একটা ফ্লাই ওভার এ। কিন্তু কি আশ্চর্য, রাস্তা তো শেষই হচ্ছে না!

ফ্লাই ওভার প্রায় ১২ কি মি লম্বা!


(গাড়ী থেকে তোলা ফ্লাই ওভারের অংশবিশেষ)
রাত প্রায় একটা। রাস্তাও তাই ফাঁকা।খুব বেশী গাড়ীটারি নাই। তবে মোটরসাইকেল চলছে। হাফপ্যান্ট পরা বিদেশী দেখতে দেখতে ক্লান্ত চোখ অনেকদিন পর পান্জাবী পড়া মোটরসাইকেল আরোহী দেখে পুলোকিত হলো।
আমাদের পুরো টীমের (প্রায় ১৫০ অংশগ্রহণকারী) থাকবার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো হায়দ্রাবাদ ম্যারিয়ট হোটেল এন্ড কনভেনশন সেন্টারে । হোটেলে পৌছাবার ঠিক আগের মুহূর্তে হোসাইন সাগরের মধ্যরাতের মনভোলানো রুপ দেখে মাতোয়ারা হয়ে গেলাম!

নাম হোসাইন সাগর হলেও এটা আসলে ২৪ বর্গ কি মি আয়োতনের একটি লেক।


এভাবেই ঘুমহীন চোখে মধ্যরাতের হায়দ্রাবাদী সৌন্দর্য দেখতে দেখতে পৌছে গেলাম হোটেলে।


আসলে হায়দ্রাবাদে ম্যারিয়ট হোটেল হলো দুইটা! একটা হলো " কোর্ট ইয়ার্ড ম্যারিয়ট ", আরেকটা হলো "হায়দ্রাবাদ ম্যারিয়ট হোটেল এন্ড কনভেনশন সেন্টার" ।


একথা আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে, ম্যারিয়টের স্টাফদের ব্যবহার এবং আতিথেয়তা অত্যন্ত চমৎকার!


এরপর ঘটলো আরেক চকমপ্রদ (?) ঘটনা !



দুটি হোটেলের দূরত্ব বেশি না হওয়ায় পাঁচ মিনিটেই পৌছে গেলাম আমার কাংখিত হোটেলের দোরগরায়।। কিন্ত এ কি!!



হোটলের রুম দেখেতো আমি মহাখুশি!



এরপর ফ্রেস হয়ে সাথে আনা খাবার খেয়ে দিলাম একটা আরামের ঘুম!

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১২ সকাল ১০:৪১