যদি ক্রিকেট পাগল কারো কাছে জানতে চাওয়া হয় টি২০ বিশ্বকাপ সুপার টেনে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশের বর্ননা দেন তো। নিশ্চিত সে আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেবেন ‘মহারণ’-এর শেষ ওভারটি। অর্থাৎ বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতীয় অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ডের বিধ্বংসী ওভারটি। ভারতীয় টিমে রকস্টার খ্যাত পাণ্ডের বলে যতটা হেসেছে গোটা ভারতবর্ষ ঠিক ততটাই কেঁদেছেন টাইগারপ্রেমী লক্ষ কোটি বাংলাদেশি।
ভারতের চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ম্যাচটিতে দুই ভায়রা ভাই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমের ‘খামখেয়ালিপনায়’ হাতের মুঠোয় থাকা ‘সোনার হরিণ’ হাতছাড়া করলো বাংলাদেশ। শুধু কি সেখানেই সমাপ্ত? বরং ম্যাচটিতে ‘স্লো ওভার রেটের’ অপরাধে টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা ও ১১ সদস্যের টিমকে জরিমানা করা হয়।
এ নিয়ে পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বুধবার সুপার টেনের ম্যাচে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক ওভার কম বল করায় ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের
ম্যাচ ফির ১০ শতাংশ এবং অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ জরিমানা করেন।
যদি একজন সাধারণ দর্শকের দৃষ্টিতেও ম্যাচটি নিয়ে কথা বলতে যাই। তাহলে যে কেউ নিঃসন্দেহে স্বীকার করে নেবেন চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামের হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটিতে ভারতেরও জরিমানা হওয়া উচিত ছিল। কারণ ম্যাচটিতের শেষ ওভারে হার্দিক পাণ্ডের ওভারটিতে নিদির্ষ্ট সময়েরও বেশি সময় ব্যয় করেন ধোনীরা। অথচ আইনকে ‘বুড়ো আঙ্গুল’ প্রর্দশন করে ক্রিকেট বিশ্বকে অবাক করে সেদিন বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফির ১০ শতাংশ এবং অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ জরিমানা করে আইসিসি।
বাংলাদেশকে নিয়ে আইসিসির ‘হীনমন্য’ আচরণ এই প্রথম নয়। গেল বছর বিশ্বকাপ আসরে ফাইনালের খুব কাছে গিয়েও ঝরে পড়ে মাশরাফি বাহিনী। এরপর ভারতের মাটিতেও সেই আচরণ। অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশের তুই তরুণ তাসকিন-সানির ক্যারিয়ারকে হুমকিতে ফেলে সংস্থাটি। যদিও বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আইসিসির সঙ্গে দেন দরবার করে। কিন্তু তাতেও রক্ষা পায়নি এই দুই তরুণ বোলার।
এখন আম জনতার কাতারে দাঁড়িয়ে আমারও প্রশ্ন,
*বিলম্বের দায়ে দল এবং টাইগার অধিনায়ক মাশরাফিকে জরিমানা করা হলে। কেন তা থেকে বাদ যাবেন না ধোনী কিংবা তার দল?
*গুটি কয়েক বাউন্সিংয়ে সমস্যার ফলে বাংলাদেশি পেসারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার ধ্বংস হলে, তা থেকে বাদ যাবেন কেন
ভারতের ফাস্ট বোলার জ্যাসপ্রিত বুমরা কিংবা স্পিনার স্পেশালিস্ট আশ্বিন?
*এছাড়া কেন ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে আম্পায়াররা ভারতের পক্ষ টেনে কথা বলবেন?
এত সব প্রশ্ন আর হতাশার মাঝেও আশার বানী হচ্ছে এখন আর কেউ পাক-ভারত ম্যাচ নিয়ে এতটা উত্তেজনা অনুভব করে না। যতটা না বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে দেখা যায়। বিশ্লেষক কিংবা ক্রিকেটপেমীরা এখন ভালোই বুঝেন ক্রিকেটে অফার সম্ভবনার দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। সেদিন খুব বেশি দূরে নেই একের পর এক ট্রপি এনে দেশকে সম্মানে ভাসাবেন আমাদের টাইগাররা।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৪৪