মনে হচ্ছে হিংস্রপ্রাণীতে পরিণত হতে যাচ্ছে কতিপয় মুক্তমনারা। দিন দিন হিংস্রতা বেড়েই যাচ্ছে আপনাদের। প্রশ্ন করতে পারেন কিভাবে? কারন প্রকৃত মুক্তমনার প্রকৃত অর্থই হচ্ছে মানবতার গান অর্থাৎ মানবপ্রেম কিন্তু বাংলার মাটিতে তো দেখি যে মানবের মনে আঘাত করে, তার বিশ্বাসে আঘাত করে তাকেই মুক্তমনা বলে পরিচয় করে দেওয়া হচ্ছে। এই যে উগ্রবাদীদের হাতে নিহত হলেন জগন্নাথ ভার্সিটির নাজিমুদ্দিন সামাদ ভাই, এবারও ঠিক তার সাত আট মিনিটের মধ্যেই কিন্তু একে একে বিদেশে থাকা কতিপয় মুক্তমনারা এই বলে স্টাটাস বমি করলেন যে “আল্লাহু আকবার” বলে উনাকে হত্যা করা হয়েছে। এই অভিযোগ এর আগে নিহত সব ব্লগারের বেলায় করেছিলেন বিদেশে থাকা শাম্মি মুন্সি আসিফরা।
প্রশ্ন নাজিমুদ্দিন ভাই হত্যার সময় হত্যাকারী যে “আল্লাহু আকবর” বলেছে এটা আপনি বিদেশে বসে ৭/৮ মিনিটের মধ্যেই কেমনে জানলেন? এখন বলবেন প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে, আমি বলবো আপনি কি নিজেই প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলেছেন? যারা এরুপ অভিযোগ আনছেন তারা সেই প্রত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দি দেখাতে পারবেন? মনে হচ্ছে খোদ আপনারাই অপেক্ষায় থাকেন কবে আরেকটা ব্লগার মারা যাবে যাতে আমি “আল্লাহ”ইসলামকে তুলোধুনো করবো। ইশশ কতদিন হলো কোন ব্লগার মরছে না, মরলেইতো “আল্লাহ”র নামে অভিযোগ দেওয়া যাবে বিবিসি,ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কিংবা জাতিসঘে ইশশশশশ
কথিত মুক্তমনারা যারা আজ খুব জোরে সোরে “আল্লাহ আকবার” শব্দের ডংকা বিদেশী প্রভুদের শুনাচ্ছেন, যখনি কোন ব্লগার মারা যায় তখনি আল্লাহ, যখনি আপনাদের হিংস্রতা প্রকাশ পায় তখন আল্লাহ, আপনাদের ভুলগুলো দেখানো হয় তখন আল্লাহ, কি দেখাতে চান যে মুক্তমনা হত্যার জন্য আল্লাহই দায়ী? অথচ সেই আল্লাহরই বাণী যে “নিরাপরাধ কাউকে হত্যা করা মানেই পুরো মানবতাকে হত্যা করা” কিন্তু আপনাদের হিংসা আর অন্যান্য ধর্ম বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ইসলামের সমালোচনা আপনাদের হিংস্র পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট বানিয়েছে। অবশ্য আল্লাহর নামে বদনাম কোন কাজে আসছে না আপনাদের, আর ভবিষ্যতেও কাজে আসবে না বরঞ্চ নিজেদেরই হিংস্রতা প্রকাশ পাবেই জনগনের সামনে।
যদি ধরে নেওয়া যায় যে নাজিম হত্যার সময় তারা “আল্লাহ আকবর” বলেছে (যদিও সেটা এখনো প্রমাণিত নয়) তবে কি এর জন্য আল্লাহ দায়ী? প্রমান করতে পারবেন? তারা কি আল্লাহর অনুমতি নিয়ে তাকে হত্যা করতে গিয়েছিল? না। আপনাদের এই অদ্ভুত ফর্মুলায় যদি বলি কেউ যদি কাউকে হত্যা করে বললো “জয় শাম্মি” “জয় আসিফ” “জয় মুক্তমনা” তাহলে কি আপনারাই দায়ী? এটা কিন্তু আপনাদেরই সূত্র।
মুক্তমনাদের বলবো হিংস্রতা ছাড়ুন এবং প্রকৃত অপরাধীদের ধরতে জনগনের আস্থা অর্জন করুন নিশ্চয় হত্যাকারী শুধু অপরাধী নয় ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীও বটে কিন্তু তাই বলে ব্লগার হত্যাকান্ড নিয়ে পুরো ইসলামকে তুলোধুনো করবেন আর পাশে জনগনকে চাইবেন তা খোলা চোখে অবাস্তব স্বপ্ন’র মতই। মুক্তমনা তাকেই বলে যারা মানবতাকে ভালবাসে আর যারা মানবতাকে ভালবাসে তারা কখনোই অন্যের বিশ্বাসকে গালি, উপহাস করে না। কিন্তু যারা দুর্গাপুজার সময় শুভেচ্ছার স্টাটাস দেয় আর রমজান ঈদের সমালোচনা করে তারা মুক্তমনা নাকি ইসলাম বিদ্বেষী তা নতুন করে বলার দরকার নাই।
মিডিয়া ও মুক্তমনার শুভাকাঙ্খিগনঃ
আরেকটা জিনিস লক্ষনীয় কথিত মুক্তমনা মারা গেলেই সেই কথিত মুক্তমনার আশেকবৃন্দ তথা কতিপয় চ্যানেল, পত্রিকার ক্রন্দন চলে বেশ কয়েকদিন,কয়েক মাস, বিচার চাই বিচার চাই বলে ফেনা তুলতে দেখা যায় সম্পাদকীয় থেকে বিভিন্ন টকশোতে। আচ্ছা কিছুদিন আগে মসজিদের একজন মুয়াজ্জিন মারা গেলেন এর আগেও জনপ্রিয় মিডিয়া ব্যক্তিত্য চ্যানেল আই এর আল্লামা ফারুকী উগ্রবাদীদের হাত মারা গেলেন কথিত মুক্তমনার আশেকবৃন্দ আপনারা কয়দিন টকশো করলেন? কয়টা সম্পাদকীয় লিখলেন? মুয়াজ্জিন মারা গেলে পত্রিকার নিচে এক কলামে কোন মতে খবর আসে কিন্তু ব্লগার মারা গেলে ৩৬৫ দিনই যেন হেডলাইন। সাবেক রাষ্ট্রপতি ঠিকই বলেছেন মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন মারা গেলে মিডিয়া তত মাথা ঘামাইনা কিন্তু ব্লগার মারা গেলে হাউমাউ। বাহ বাহ। তারপরেও ব্লগার হত্যার বিচারে জনগনকে পাশে চান? জনগন কে কি বোকা পাইছেন?
তাই এটা বাস্তবযে যে মুক্তমনা নামক শব্দটি আজ দুষিত হয়েছে কতিপয় উগ্রবাদী মুক্তমনার উগ্র মনোভবের ফলে। ভিনদেশী প্রিসক্রিপশান অনুযায়ী যেভাবে শুধুমাত্র ইসলামকে বদনামের যে এই ষড়যন্ত্র আপনাদের তা এখন দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট। নাস্তিক ব্লগার মুন্সির একটি পোষ্ট ছিল যে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র তার কাছেরই লোক করতেছে তারপরেও বদনাম ইসলামের। কিন্তু কেন?
যখনি কোন কথিত মুক্তমনা মারা যায় ঠিক ১২ ঘন্টার মধ্যে সবার আগেই ইহুদী ইসরাইলের সাইট ইন্টেলিজেন্স নামক ওয়েব থেকে স্বীকারোক্তি আসে যে এটার দায় আইএস স্বীকার করেছে। এই স্বীকারোক্তি জঙ্গিগোষ্টি আইএস এর প্রকৃত ওয়েব সাইট থেকে আসে না কেন? কেন ব্লগার হত্যার সাথে সাথেই ইসরাইলের সাইট ইন্টেলিজেন্স থেকেই বা কেন আগে আসে? আগে বলে রাখি জনগনকে কিন্তু আর বোকা ভাবা উচিত নয়।
এতে কিন্তু কয়েকটা কথা স্পষ্ট। হয়তো এই হত্যাকান্ড’র পিছনে ইসরাইলের মোসাদ জড়িত। নয়তোবা জঙ্গিগোষ্টি আইএস আর ইসরাইল মুদ্রার এপিট ওপিট হয়ে কাজ করছে। তাই বার বার ইসলামকে গালী দেওয়ার আগে কথিত মুক্তমনাদের উচিত একটু ভেবে দেখা দরকার যে জনগনকি আগের মতই বোকা আছে?
শুধুমাত্র ইসলাম বিদ্বেষী কথিত মুক্তমনারা, নাজিমুদ্দিন হত্যার বিচার চান না আপনারা? আমরাও চাই কারন হত্যাকারী যে ইসলামকে বদনাম করছে তাতে কোন সন্ধেহ নেয়। কিন্তু “আল্লাহ” রাসুল ইসলামকে অযথা গালি দিয়ে মানুষের সুহানুভূতি লাভ করতে যাবেন তাতে কিন্তু উল্টা জুতা সেন্ডেল হজম করতেই হবে আপনাদের যেটা এখন ঘটতেছে এবং এর পরেও কোন কথিত মুক্তমনা ব্লগারের হত্যা হয় তখনও দেখবেন জনগন কোন আফসোস করবে না একমাত্র আপনাদের কট্টর উগ্র দুর্ঘন্ধযুক্ত মনোভবের কারনে.................