প্রথমে সারা দেশের ন্যায় আমরাও আমাদের শহরে তনু হত্যার সুষ্ঠু বিচারের জন্য মানববন্ধন করি যাতে অংশগ্রহন করে শহরের সবকটি সামাজিক সংগঠন ও স্কুল কলেজ এর শিক্ষার্থীরা। দিন যাচ্ছে তনু হত্যার রহস্য এখনো খোলেনি এরই মধ্যে অনলাইনে আরেক ছবি প্রকাশ করা হয় যাতে কাপড় পড়িত মৃত্য এক মেয়ের ছবিকে আসল তনুর মৃত্যু দেহ বলা হচ্ছে এবং এতদিন যাবত যে ছবি আমরা আগে দেখেছিলাম অর্থাৎ বস্ত্রহীন বিকৃত মৃতদেহ মেয়েটি সেটা নাকি ভূয়া।
আবার এরই মাঝে আরেক দল বিনা প্রমানে এর দোষ সেনাবাহিনীর উপর চাপানোর জোর প্রচারনায় লিপ্ত। যদিও প্রমান না হওয়ার আগ পর্যন্ত যেকেউ অপরাধী হতে পারে কিন্তু তাই বলে প্রমানের আগে সেনাবাহিনীকে দোষারোপ মেনে নেওয়া যায় না।
আমরা সবার সাথে একাত্ব ঘোষনা করে শহরবাসী সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে রাস্তায় নেমেছিলাম কিন্তু এখন পিছবা হতে হচ্ছে কারন আমার কাছে মনে হচ্ছে যৌক্তিক আন্দোলনটি কেউ হাইজাক করে এর অপব্যবহার শুরু করেছে।
সেনাবাহিনীকে আমি বিনা প্রমাণে দোষি বলতে পারি না কারন কুমিল্লা সেনানিবাস সম্পর্ক যা জানি এই সেনানিবাসের সঙ্গে অন্য সেনানিবাসের মূল পার্থক্য হচ্ছে, এর বুক চিরে চলে গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। সিলেট অভিমুখী সড়কটি সেনানিবাসের ভেতরেই চট্টগ্রাম অভিমুখী গ্র্যান্ড ট্রাংক রোডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। স্টেশন সদর দপ্তর থেকে শুরু করে বেশ কিছু স্থাপনার অবস্থান একেবারেই মহাসড়কের লাগোয়া। সেনানিবাসের মধ্যে অথবা গা ঘেঁষেই রয়েছে বেসামরিক বাজার, আবাসিক এলাকা; যা সেনানিবাসের নিরাপত্তায় বাড়তি ঝুঁকি আরোপ করে। এমন স্থানে বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান করা যেমন দুরূহ, তেমনি তা নিশ্চিত করতে গেলেও বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সেনা প্রশাসনের টানাপড়েন শুরু হয়ে যায়। মোট কথা, এই সেনানিবাসে গেট দিয়ে চেকপোস্ট বসিয়ে যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যাওয়া হয়, তবে মহাসড়কগুলো যানজটে ফেঁসে থাকবে সর্বদা। যারা এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত, তারা নিরাপত্তার শৈথিল্যের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়ী করার আগে দুবার ভাববে।’ পত্রিকা সূত্রে আরো জনালাম, ঘন গাছপালার মধ্যে কালভার্টের কাছে যে স্থানে তনুর মৃতদেহ পাওয়া গেছে তা কুমিল্লা সেনানিবাস সংলগ্ন এলাকা এবং এখানে সেনানিবাসের কোনো সীমানাপ্রাচীর নেই। এই রাস্তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। সেনানিবাসের অভ্যন্তরের কেউ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এমন কোনো প্রমাণ এখনো নেই; তবে হত্যাকারী সেনাবাহিনীর কেউ নয় সে প্রমাণও কিন্তু নেই। সুতরাং প্রশাসন এই হত্যাকাণ্ডের দোষী বা সন্দেহভাজন ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার আগ পর্যন্ত কিছু আবেগী ভাইয়েদর অযথা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষগার সৃষ্টি করার আগে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার আহবান জানায়। কারণ আইনের প্রথম সবক : দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত আইনের চোখে প্রত্যেকেই নির্দোষ।
তাই এখন আমরা দ্বিধায় আছি যে তনু হত্যাকান্ড নিয়ে কেউ মাঠ গরম করছে নাতো? এই ইস্যুকে টার্গেট করে জনগনকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কেউ ক্ষেপিয়ে তুলছে নাতো? এই কয়দিন অনলাইনে পক্ষে বিপক্ষে যা পড়ছে যা দেখছি তাতে নির্ধারন করতে পারতেছি না কে সত্য বলছে আর কে মিথ্যা। সঠিক তথ্য জানার আগ্রহে আমরা এখনো অপেক্ষামান ততদিন পর্যন্ত প্রচলিত আন্দোলনকে পিছনা হলাম কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে বলতে দ্বিধা নেই তনু হত্যার বিচার চাই।