প্রিয়তম,
আমি তোমার আগেই চলে যেতে চাই।
আচ্ছা, তোমার কি মনে হয়,
আমি যদি তোমার চেয়ে বেশিদিন বাঁচি-
মৃত্যুর পর তোমাকে আবার খুঁজে পাবো?
আমার তা মনে হয় না।
তাহলে সেই ভালো- আমি আগে মরে যাবো;
তুমি আমাকে কবর দিও না
আমার শরীরকে দাহ করে ছাইগুলো জমিয়ে রেখে দিও
একটি কাঁচের পাত্রে; ফায়ারপ্লেসের পাশে।
স্বচ্ছ কাঁচের, যেন ভেতরে তুমি আমায় দেখতে পাও...
দেখতে পাও আমার আত্মত্যাগ-
আমি তো মাটিতে মিশে যাইনি তোমাকে ছেড়ে
মরে গিয়ে আবার ফুল হয়ে জন্ম নিইনি-
ছাই হয়ে তোমারই কাছে রয়ে গেছি চিরকাল।
তোমার যখন মৃত্যু হবে, তুমিও এসো আমার পাশে;
একই পাত্রের ভেতর। আমরা দু’জনে আবার পাশাপাশি-
তোমার ছাই, আমার ছাই- একসাথে;
যতদিন আমাদের কোন আনমনা বৌমা
কিংবা দুরন্ত কোনো শিশু আমাদের ছুঁড়ে ফেলে না দেয়...
কিন্তু ততদিনে আমরা মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবো।
আবর্জনার আস্তাকুঁড়েও কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না।
আমরা একসাথে মাটিতে ফিরে যাবো।
যদি কোনদিন সে মাটির ওপর কোন বুনো গাছে
একজোড়া বুনোফুল ধরে, তার একটা হবো আমি, আরেকটা তুমি।
আমি হয়তো এখনই মরে যাবো না।
মৃত্যুর আগে আমি তোমার কাছে আরেকটা সন্তান চাই।
আমার মধ্যে এখনও জীবনীশক্তি অফুরন্ত।
আমার রক্ত এখনও উষ্ণ।
আমি আরো অনেকদিন বাঁচবো- তোমার সাথে।
আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না, তবে আমার শেষকৃত্যের প্রতি
কোনো আগ্রহ নেই,
কিন্তু হয়তো মৃত্যুর আগে সবকিছু বদলে যাবে।
আচ্ছা, তুমি কি কোনদিন জেল থেকে ছাড়া পাবে না?
আমার মন বলছে, হয়তো শিগগিরই ছাড়া পাবে তুমি,
হয়তো...
মূল: নাজিম হিকমত
অনুবাদ: আম-আঁটির ভেঁপু
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩৬